ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে কুলাউড়া বিএনপির দীর্ঘ যুগ পর কোন্দলের অবসান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার

১২ সপ্তাহের বকেয়া মজুরির দাবিতে ভূখা লংমার্চ কুলাউড়ায়

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০
  • / ৫৩৫ টাইম ভিউ

ছয়ফুল আলম সাইফুলঃ: ১২ সপ্তাহ যাবত মজুরিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকার প্রতিবাদে আজ (১৯ এপ্রিল,রবিবার) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে অবস্থিত কালিটি চা-বাগান থেকে কুলাউড়া অভিমুখে “ভূখা লংমার্চ ” করেন চা শ্রমিকগণ।

এতে সংহতি প্রকাশ করেন গাজীপুর ও রাঙ্গিছড়া চা বাগানের শ্রমিকগণ ও নেতৃবৃন্দ।
এই লংমার্চে শ্রমিকগণ মুখে কাপড় বেঁধে (মাস্ক হিসেবে),হাতে প্ল্যাকার্ড ও খালি থালা-বাসন নিয়ে “সামাজিক দূরত্ব” (তিন ফুট) বজায় রেখে কালিটি চা বাগান থেকে পায়ে হেঁটে দীর্ঘ দুইঘন্টা পর কুলাউড়া পৌঁছেন ।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালিটি বাগানটি ‘জোবেদা টি কোম্পানি লিমিটেডের’ নামে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া হয়েছে। বাগানে মোট ৫৩৭ জন শ্রমিক আছেন। প্রত্যেক শ্রমিক দৈনিক ১০২ টাকা করে মজুরি পান। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তা পরিশোধের কথা। কিন্তু ১২ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছেন না। বাগানের শ্রমিক সরদার ও স্টাফদেরও ১১ মাসের বেতন আটকা পড়ে আছে।
বাগান শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক উত্তম কালোয়ার বলেন, ‘শ্রমিকেরা এমনিতেই সামান্য মজুরি পান। এরপর ১২ সপ্তাহ থেকে কেউ সেই মজুরি পাচ্ছেন না। কাজ করেও মজুরি মিলছে না। ঘরে চাল-ডাল নেই। উপোস দিন কাটাতে হচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষ আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি বলে সময়ক্ষেপণ করছে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য লছমি নারায়ণ অলমিক বলেন, বাগানে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা। শ্রমিকদের আগের মজুরিরও বেশ কিছু টাকা বকেয়া পড়ে আছে। অনেক শ্রমিক জরাজীর্ণ কাঁচাঘরে বাস করছেন। এসব ঘর মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অবসরে যাওয়া শ্রমিকেরা তহবিলের টাকা পাচ্ছেন না। অথচ প্রত্যেক শ্রমিকের মজুরি থেকে সাত শতাংশ করে ভবিষ্যৎ তহবিলের টাকা কেটে রাখা হয়। এর সঙ্গে মালিকপক্ষ আরও সাত শতাংশ যোগ করে মোট ১৫ শতাংশ টাকা শ্রম অধিদপ্তরে জমা দেওয়া কথা। বাগান কর্তৃপক্ষ তা-ও করছে না। ছাত্র-যুবক নেতা দয়াল অলমিক বলেন, বাগানে চিকিৎসক নেই। শ্রমিকেরা বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করালে বাগান কর্তৃপক্ষ বিলের টাকা দেয় না। বাগানে বিরাজমান এসব সমস্যার কথা তুলে ধরে এর প্রতিকার চেয়ে ৫ জানুয়ারি তাঁরা শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
চা শ্রমিক সন্তান মোহন রবিদাস বলেন,একদিকে ১২ সপ্তাহ ধরে মজুরি বঞ্চিত অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঝুঁকিতে আছেন এই বাগানের শ্রমিকগণ। অবিলম্বে এই বাগানের সংকট নিরসন করা না গেলে শত শত চা শ্রমিকের জীবন বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
মজুরি বন্ধের বিষয়ে কালিটি বাগানের ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দাশ বলেন, কোম্পানির কাছ থেকে যথাসময়ে টাকা না পাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।তিনিসহ বাগানের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ১১ মাসের বেতন বন্ধ আছে।

পোস্ট শেয়ার করুন

১২ সপ্তাহের বকেয়া মজুরির দাবিতে ভূখা লংমার্চ কুলাউড়ায়

আপডেটের সময় : ০৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০

ছয়ফুল আলম সাইফুলঃ: ১২ সপ্তাহ যাবত মজুরিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকার প্রতিবাদে আজ (১৯ এপ্রিল,রবিবার) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে অবস্থিত কালিটি চা-বাগান থেকে কুলাউড়া অভিমুখে “ভূখা লংমার্চ ” করেন চা শ্রমিকগণ।

এতে সংহতি প্রকাশ করেন গাজীপুর ও রাঙ্গিছড়া চা বাগানের শ্রমিকগণ ও নেতৃবৃন্দ।
এই লংমার্চে শ্রমিকগণ মুখে কাপড় বেঁধে (মাস্ক হিসেবে),হাতে প্ল্যাকার্ড ও খালি থালা-বাসন নিয়ে “সামাজিক দূরত্ব” (তিন ফুট) বজায় রেখে কালিটি চা বাগান থেকে পায়ে হেঁটে দীর্ঘ দুইঘন্টা পর কুলাউড়া পৌঁছেন ।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালিটি বাগানটি ‘জোবেদা টি কোম্পানি লিমিটেডের’ নামে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া হয়েছে। বাগানে মোট ৫৩৭ জন শ্রমিক আছেন। প্রত্যেক শ্রমিক দৈনিক ১০২ টাকা করে মজুরি পান। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তা পরিশোধের কথা। কিন্তু ১২ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছেন না। বাগানের শ্রমিক সরদার ও স্টাফদেরও ১১ মাসের বেতন আটকা পড়ে আছে।
বাগান শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক উত্তম কালোয়ার বলেন, ‘শ্রমিকেরা এমনিতেই সামান্য মজুরি পান। এরপর ১২ সপ্তাহ থেকে কেউ সেই মজুরি পাচ্ছেন না। কাজ করেও মজুরি মিলছে না। ঘরে চাল-ডাল নেই। উপোস দিন কাটাতে হচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষ আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি বলে সময়ক্ষেপণ করছে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য লছমি নারায়ণ অলমিক বলেন, বাগানে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা। শ্রমিকদের আগের মজুরিরও বেশ কিছু টাকা বকেয়া পড়ে আছে। অনেক শ্রমিক জরাজীর্ণ কাঁচাঘরে বাস করছেন। এসব ঘর মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অবসরে যাওয়া শ্রমিকেরা তহবিলের টাকা পাচ্ছেন না। অথচ প্রত্যেক শ্রমিকের মজুরি থেকে সাত শতাংশ করে ভবিষ্যৎ তহবিলের টাকা কেটে রাখা হয়। এর সঙ্গে মালিকপক্ষ আরও সাত শতাংশ যোগ করে মোট ১৫ শতাংশ টাকা শ্রম অধিদপ্তরে জমা দেওয়া কথা। বাগান কর্তৃপক্ষ তা-ও করছে না। ছাত্র-যুবক নেতা দয়াল অলমিক বলেন, বাগানে চিকিৎসক নেই। শ্রমিকেরা বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করালে বাগান কর্তৃপক্ষ বিলের টাকা দেয় না। বাগানে বিরাজমান এসব সমস্যার কথা তুলে ধরে এর প্রতিকার চেয়ে ৫ জানুয়ারি তাঁরা শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
চা শ্রমিক সন্তান মোহন রবিদাস বলেন,একদিকে ১২ সপ্তাহ ধরে মজুরি বঞ্চিত অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঝুঁকিতে আছেন এই বাগানের শ্রমিকগণ। অবিলম্বে এই বাগানের সংকট নিরসন করা না গেলে শত শত চা শ্রমিকের জীবন বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
মজুরি বন্ধের বিষয়ে কালিটি বাগানের ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দাশ বলেন, কোম্পানির কাছ থেকে যথাসময়ে টাকা না পাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।তিনিসহ বাগানের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ১১ মাসের বেতন বন্ধ আছে।