ঢাকা , শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
কোকোনাস হুজুর আর রোলার কোষ্টারের গল্প ভুতে ধরা নাকি মানসিক রোগ রোগী, চিকিৎসক নিগ্রহ, হাসপাতাল ভাংচুর ও আমাদের সচেতনতা রাশেদ কি সত্যিকারের পীর, না কি মানসিক রোগী নিজ গ্রামে চিরশায়িত হলেন এ আই জি কুলাউড়ার সন্তান মাসুম আনন্দ উল্লাসে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করলো পর্তুগাল বিএনপি কুলাউড়ায় উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মিসেস নাজমা বেগম হাজীপুরের মেধাবী শিক্ষার্থী রহুল আমিনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া ডাকসু নির্বাচন ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা: ভিপি আবিদুল, জিএস হামিম, এজিএস মায়েদ রাবেয়া আদর্শ পাঠশালা’র প্রাক্তন শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নানের স্মরণসভা

ভুতে ধরা নাকি মানসিক রোগ

ডা. সাঈদ এনাম
  • আপডেটের সময় : ১০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৯৭ টাইম ভিউ

ভুতে ধরা নাকি মানসিক রোগ?

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সমাজে ভূত-প্রেত, জ্বিন, কালো যাদু নিয়ে শতাব্দীর পুরোনো লোকবিশ্বাস প্রচলিত। ছোটবেলা থেকেই এসব গল্প শুনে বড় হওয়ায় মানসিক অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে মানুষ সহজেই তাকে “ভুতে ধরা” বলে ব্যাখ্যা করে।

অদৃশ্য রোগ ও সামাজিক কলঙ্ক
শারীরিক অসুস্থতা চোখে দেখা যায়, কিন্তু মানসিক অসুস্থতা ভেতরের পরিবর্তন—যা সরাসরি ধরা যায় না। এজন্য মানুষ সেটিকে মানতে চায় না। আবার সমাজে কলঙ্কের ভয়ে পরিবারগুলো মানসিক রোগকে গোপন রাখে, যাতে কেউ “পাগল” তকমা না দেয়।

পূর্বপুরুষের পাপের ফলের ধারণা
অনেকেই মানসিক রোগকে পূর্বপুরুষদের পাপের ফল মনে করেন। এর ফলে রোগী ও পরিবারকে বাঁকা চোখে দেখা হয়। ভবিষ্যতে বিয়েশাদি অনুষ্ঠানে সমস্যা হবে ভেবে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকেন। এই সামাজিক চাপের কারণে পরিবারের সদস্যরা প্রিয়জনের অসুস্থতা স্বীকার করতে চায় না। বরং অনিচ্ছাসত্ত্বেও ঝাড়ফুঁক, কালো যাদু বা তাবিজ-টোটকার শরণ নেন, যদিও এগুলো কোনো কার্যকর চিকিৎসা নয়।

সমাধান: সচেতনতা ও চিকিৎসা
মানসিক রোগও অন্য শারীরিক রোগের মতোই বৈজ্ঞানিকভাবে নিরাময়যোগ্য। আধুনিক চিকিৎসা, পরামর্শ ও ওষুধের মাধ্যমে রোগী সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে। তাই কুসংস্কার ভেঙে চিকিৎসকের শরণ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর পথ।

ভুতে ধরা নয়, মানসিক রোগকে রোগ হিসেবেই দেখা উচিত। সামাজিক কলঙ্ক নয়, সহমর্মিতা ও সচেতনতা দিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নিতে হবে।

ডা. সাঈদ এনাম
সহযোগী অধ্যাপক সাইকিয়াট্রি
ইন্টারন্যাশনাল ফেলো
আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন

পোস্ট শেয়ার করুন

ভুতে ধরা নাকি মানসিক রোগ

আপডেটের সময় : ১০:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

ভুতে ধরা নাকি মানসিক রোগ?

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সমাজে ভূত-প্রেত, জ্বিন, কালো যাদু নিয়ে শতাব্দীর পুরোনো লোকবিশ্বাস প্রচলিত। ছোটবেলা থেকেই এসব গল্প শুনে বড় হওয়ায় মানসিক অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে মানুষ সহজেই তাকে “ভুতে ধরা” বলে ব্যাখ্যা করে।

অদৃশ্য রোগ ও সামাজিক কলঙ্ক
শারীরিক অসুস্থতা চোখে দেখা যায়, কিন্তু মানসিক অসুস্থতা ভেতরের পরিবর্তন—যা সরাসরি ধরা যায় না। এজন্য মানুষ সেটিকে মানতে চায় না। আবার সমাজে কলঙ্কের ভয়ে পরিবারগুলো মানসিক রোগকে গোপন রাখে, যাতে কেউ “পাগল” তকমা না দেয়।

পূর্বপুরুষের পাপের ফলের ধারণা
অনেকেই মানসিক রোগকে পূর্বপুরুষদের পাপের ফল মনে করেন। এর ফলে রোগী ও পরিবারকে বাঁকা চোখে দেখা হয়। ভবিষ্যতে বিয়েশাদি অনুষ্ঠানে সমস্যা হবে ভেবে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকেন। এই সামাজিক চাপের কারণে পরিবারের সদস্যরা প্রিয়জনের অসুস্থতা স্বীকার করতে চায় না। বরং অনিচ্ছাসত্ত্বেও ঝাড়ফুঁক, কালো যাদু বা তাবিজ-টোটকার শরণ নেন, যদিও এগুলো কোনো কার্যকর চিকিৎসা নয়।

সমাধান: সচেতনতা ও চিকিৎসা
মানসিক রোগও অন্য শারীরিক রোগের মতোই বৈজ্ঞানিকভাবে নিরাময়যোগ্য। আধুনিক চিকিৎসা, পরামর্শ ও ওষুধের মাধ্যমে রোগী সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে। তাই কুসংস্কার ভেঙে চিকিৎসকের শরণ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর পথ।

ভুতে ধরা নয়, মানসিক রোগকে রোগ হিসেবেই দেখা উচিত। সামাজিক কলঙ্ক নয়, সহমর্মিতা ও সচেতনতা দিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নিতে হবে।

ডা. সাঈদ এনাম
সহযোগী অধ্যাপক সাইকিয়াট্রি
ইন্টারন্যাশনাল ফেলো
আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন