এক অসুস্থ প্রজন্ম কে সাথি করে এগুচ্ছি আমরা
- আপডেটের সময় : ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪
- / ২৫০ টাইম ভিউ
অনেকদিন পর ভোরের আলো-আঁধারিতে বাড়ীর বারান্দায় বসে আছি। রমজান মাসের অভ্যাস পরিবর্তন হতে আরও দু একটা দিন সময় লাগবে। ঘন্টা তিনেক পরই তো ঈদুল ফিতরের জামাত। এখন ঘুমও আসবে না। কারণ পুরো রমজান মাসেই ছিল আমার রাতজাগার অভ্যাস।
পূবের আকাশটা একটু একটু করে আলোকিত হচ্ছে। ভোরের পাখীরা কলরব করে গাছের শাখায় শাখায় ছুটছে। অসম্ভব এক ভালো লাগা অনুভব করছি।
আকাশ,নদী, সাগর, পাহাড় আর সবুজ গাছপালা বরাবরই আমার প্রিয়। অথচ আমার সন্তানেরা এগুলো অনুভবই করে না। অদ্ভুত এক প্রজন্ম এরা। এরা ভোর আর গোধূলির আকাশ দেখে না। পাখীর কলরব তাদের হৃদয়ে কখনো ছন্দ জাগায় না।
কম্পিউটার আর মোবাইলের গেমসে ডুবে এরা প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। সবুজ গাছের ছায়া এদেরকে আজ কাছে টানে না।
আমি খুব আফসোস করি! এই প্রজন্মটা কেন এমন হচ্ছে!
এরা সবার সাথে মিশতে পারে না, একা একা থাকতে পছন্দ করে। জীবনের সংজ্ঞাটাও বোধহয় এরা বুঝে না। কী এক অসুস্থ প্রজন্মকে সাথী করে এগোচ্ছি আমরা।
একক পরিবার আমাদের সামাজিক চেতনাকে বিলুপ্ত করে দিচ্ছে!
শৈশব কৈশোরে ঈদের দিনগুলো আমরা কী আনন্দেই না কাটাতাম। প্রাণঝরা সেই আনন্দ আজ এদের মধ্যে নেই!
আমাদেরও ব্যর্থতা আছে। আমরা শুধু এ+ প্লাসের ধান্ধায় সন্তানদেরকে শুধু পড়ার টেবিলে বসিয়ে রাখছি। সামাজিক হবার সুযোগ থেকে এদেরকে বঞ্চিত করছি।
আমাদের অজান্তেই এরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে বড় হচ্ছে। সামাজিক জীবনটা এদের উপলব্ধি থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে।
আমি তো মনে করি…যে প্রজন্ম উচ্চশিক্ষিত হয়ে সমাজের কোন কাজে আসবে না… এমন শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কোন প্রয়োজনই নেই।
কেন জানি মনে হয়, ভয়ংকর একটা সময়ের মুখোমুখি হবো আমরা। বাঁচার জন্য তখন পুরনো সেই দিনকে আবার খুঁজে ফিরবো… কিন্তু পাবো না।
কালের গর্ভে সেই দিনগুলো তখন হারিয়ে যাবে!
লেখক ও কবি প্রভাষক সিপার আহমেদ
কুলাউড়া সরকারি কলেজ।