ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে কুলাউড়া বিএনপির দীর্ঘ যুগ পর কোন্দলের অবসান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার

কাদিয়ানী সম্প্রদায় অমুসলিম কেনো?

মাহদী হাসান
  • আপডেটের সময় : ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩
  • / ৩৫৪ টাইম ভিউ

মহান আল্লাহ তা’আলার নেযাম অনুযায়ী দুুনিয়ায় প্রেরিত সর্বশেষ এবং সর্বশেষ্ঠ নবি হযরত মুহাম্মদ সা.। তাঁর আনীত ধর্মের অস্বীকারকারিরা কাফির। তবে কর্ম-বিশ্বাসে অনেক পার্থক্য থাকায় প্রত্যেক দলকে ভিন্ন নামে সম্বোধন করা হয়। যারা ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয়ের অপব্যাখ্যা করে তারা ‘যিন্দীক’। যারা প্রতিমা-মূর্তি-ভাষ্কর্য বা অন্যান্য মাখলুকের পূজা-অর্চনা করে তারা মুশরীক এবং যারা মহান আল্লাহ তা’আলার অস্তীত্বকে অস্বীকার করে তাদেরকে নাস্তিক বলা হয়। কাদিয়ানীরা ইসলামের অপব্যাখ্যা করে ‘খতমে নবুওয়াতকে’ তথা হযরত মুহাম্মদ সা.সর্বশেষ নবি হওয়াকে অস্বীকার করে মিস্টার মির্জা গোলাম কাদিয়ানীকে শেষ নবি মান্য করার দরুণ তারা কাফির, যিন্দীক এবং ইসলামের গণ্ডিবহিভূ্ত।

[ ফাতাওয়ায় রহিমিয়া পৃ.৩৬ খণ্ড.৭ মাক.দারুল ইশাআত]
পুরো মুসলিম উম্মাহ’র আকিদা-বিশ্বাস এবং কুরআনুল কারিম- হাদিসে নববির সুস্পষ্ট এলান হলো, কাহাকে ‘নবুওয়াত’ দান করা বা নবি-রাসুল বানানো একমাত্র খোদাপ্রদত্ত মহা-নির্বাচন। নবুওয়াত-রিসালতের এই ধারাবাহিকতা সাইয়্যিদুনা হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম থেকে শুরু হয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালিন হযরত মুহাম্মদ সা.পর্যন্ত শেষ-সমাপ্ত বা পূর্ণ হয়ে গেছে। এই পবিত্র নবুওয়াতের ধারাবাহিকতা পূর্ণ হওয়ার পর যে নবি-রাসুল হওয়ার দাবি করবে সে অবশ্যই মিথ্যুক-দাজ্জাল-ধোকাবাজ। কেননা, ইসলামে শরীয়াতে’খতমে নবুওয়াত’ জনাব রাসুলে কারীম সা.পর্যন্ত পূর্ণ হয়ে গেছে। যা স্বরণ আল্লাহ তা’আলা তাঁর মহান কালামে ঘোষণা করেন; ” মুহাম্মদ সা.সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের কারও [জন্মদাতা] পিতা নয়, তবে তিনি আল্লাহর রাসুল ও সর্বশেষ নবি।[ সুরা আহযাব, আয়াত নং ৪০]

মাওলানা মনজুর নোমানী রাহ.স্বীয় গ্রন্হে উল্লেখ করেন,
কুখ্যাত মির্জা গোলাম আহমদ কাদীয়ানীরর ছেলে মির্জা বশিরুদ্দীন মাহমুদ ১৯১৫ ইংরেজিতে ‘হাকিকাতুন নুবুওয়াহ্’ নামে একটি পুস্তক প্রকাশ করেন, যাতে তিনি নিজ পিতা মির্জা গোলাম আহমদ কাদীয়ানী নবি হওয়ার ব্যাপারে ২০ টি দলিল পেশ করেন। যাতে তিনি স্বরণ মির্জা কাদিয়ানীর পরিস্কার দাবি এবং ব্যক্তব্য তুলে ধরেন।

মির্জা গোলামের পরিস্কার দাবি;
[১] আমি সেই খোদার নামে কসম করে বলছি, যার হাতে আমার প্রাণ! তিনিই আমাকে নবি বানিয়ে পাঠিয়েছেন। এই উম্মতের নবি হিসাবে আমাকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আমার ‘নবুওয়াত’ অস্বীকারকারীর পেছনে নামাজ পড়া জায়েজ নয়।[কিফায়াতুল মুফতি পৃ.৪৫৯ খণ্ড.১ মাক.যাকারিয়া]
[২] আমার হুকুম মতে আমি নবি। আমার নিকট অহি আসে, আমাকে অস্বীকারীরা কাফির। নাউযুবিল্লাহ!
আমি প্রতিশ্রুিত ইমাম মাহদি, আল্লাহ তা’আলা আমাকে বলেছেন, হে আমার পুত্র শুন!
[নাউযুবিল্লাহ!]
[৩] আমার দাবি আমি রাসুল ও নবি। আমাকে অন্য কারো সঙ্গে কিয়াস করো না। [খুতবায়ে ইলহামিয়া পৃ.১৯]
[৪] আমাকে ‘হাওযে কাওসার’ দান করা হয়েছে। আমি ‘মুরসালিন’দের অন্তভূক্ত।[হাকিকাতুল অহি পৃ.১০৭. কিফায়াতুল মুফতি পৃ.৪৫৯ খণ্ড.১ মাক.যাকারিয়া]
[৫] এতে কি সন্দেহ আছে আমার ভবিষ্যত-বাণীগুলোর পর দুনিয়ার মধ্যে একের এক ভুমিকম্প ও অন্যান্য বিপদ-আপদ আসা কি আমার সত্যতার নিদর্শন নয়? মনে রাখা উচিত, পৃথিবীর কোন প্রান্তরে আল্লাহর রাসুলকে অস্বীকার করলে অপর অপরাধীকে ও পাকড়াও করা হয়।[কাদিয়ানীরা অমুসলিম কেন?পৃ.৩৩,]

[৬] আল্লাহ তা’আলা নবির আগমন ছাড়া কোন জাতিকে শাস্তি প্রদান করেন না। তাহলে এসব কি হচ্ছে, একদিকে মহামারিতে দেশের মানুষ উজাড় হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ভুমিকম্প মানুষের পিছু ছাড়ছে না। হে গাফেল লোকেরা! হয়তো এসে গেছেন তোদের নিকট আল্লাহর পক্ষ হতে কোন রাসুল আর তোমরা তাকে অস্বীকার করছো।

[৭] আল্লাহ তা’আলা কাদীয়ানবাসীকে এই ধ্বংসাত্বক মহামারী থেকে রক্ষা করবেন, কেননা এইটা তাঁর রাসুলের রাজধানী। তিনিই সত্য খোদা যিনি কাদীয়ানে তার রাসুলকে পাঠিয়েছেন।[নাউযুবিল্লাহ]

এইসব আকিদা-মতাদর্শের ভিত্তিতে বিশ্বের সকল প্রাজ্ঞ-বরেণ্য উলামায়ে কেরামদের ঐক্যমতে মির্জা গোলাম আহমদ কাদীয়ানী এবং এই আকিদা-বিশ্বাস লালনকারি তথা ‘আহমদীয়া মুসলিম জামাত’র লোকের ইসলামে গণ্ডিবহিভূর্ত-কাফির। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা-মিলে-মিশে চলা ইসলামের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ, বরং দ্বীন-ইসলামকে ধ্বংস করার নামান্তর।[কিফায়াতুল মুফতি পৃ.৪৬২ মাক. যাকারীয়া]
আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এই ফিতনা থেকে হেফাজত করুন। এবং তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়াতের আকিদাকে হ্রদয়ে লালন করার তাওফিক করুন।

লেখক.
মুফতি ও মুহাদ্দিস
জামেয়া আবু হুরায়রা রা. আল-ইসলামিয়া ইয়ারপোর্ট, সিলেট।

পোস্ট শেয়ার করুন

কাদিয়ানী সম্প্রদায় অমুসলিম কেনো?

আপডেটের সময় : ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩

মহান আল্লাহ তা’আলার নেযাম অনুযায়ী দুুনিয়ায় প্রেরিত সর্বশেষ এবং সর্বশেষ্ঠ নবি হযরত মুহাম্মদ সা.। তাঁর আনীত ধর্মের অস্বীকারকারিরা কাফির। তবে কর্ম-বিশ্বাসে অনেক পার্থক্য থাকায় প্রত্যেক দলকে ভিন্ন নামে সম্বোধন করা হয়। যারা ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয়ের অপব্যাখ্যা করে তারা ‘যিন্দীক’। যারা প্রতিমা-মূর্তি-ভাষ্কর্য বা অন্যান্য মাখলুকের পূজা-অর্চনা করে তারা মুশরীক এবং যারা মহান আল্লাহ তা’আলার অস্তীত্বকে অস্বীকার করে তাদেরকে নাস্তিক বলা হয়। কাদিয়ানীরা ইসলামের অপব্যাখ্যা করে ‘খতমে নবুওয়াতকে’ তথা হযরত মুহাম্মদ সা.সর্বশেষ নবি হওয়াকে অস্বীকার করে মিস্টার মির্জা গোলাম কাদিয়ানীকে শেষ নবি মান্য করার দরুণ তারা কাফির, যিন্দীক এবং ইসলামের গণ্ডিবহিভূ্ত।

[ ফাতাওয়ায় রহিমিয়া পৃ.৩৬ খণ্ড.৭ মাক.দারুল ইশাআত]
পুরো মুসলিম উম্মাহ’র আকিদা-বিশ্বাস এবং কুরআনুল কারিম- হাদিসে নববির সুস্পষ্ট এলান হলো, কাহাকে ‘নবুওয়াত’ দান করা বা নবি-রাসুল বানানো একমাত্র খোদাপ্রদত্ত মহা-নির্বাচন। নবুওয়াত-রিসালতের এই ধারাবাহিকতা সাইয়্যিদুনা হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম থেকে শুরু হয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালিন হযরত মুহাম্মদ সা.পর্যন্ত শেষ-সমাপ্ত বা পূর্ণ হয়ে গেছে। এই পবিত্র নবুওয়াতের ধারাবাহিকতা পূর্ণ হওয়ার পর যে নবি-রাসুল হওয়ার দাবি করবে সে অবশ্যই মিথ্যুক-দাজ্জাল-ধোকাবাজ। কেননা, ইসলামে শরীয়াতে’খতমে নবুওয়াত’ জনাব রাসুলে কারীম সা.পর্যন্ত পূর্ণ হয়ে গেছে। যা স্বরণ আল্লাহ তা’আলা তাঁর মহান কালামে ঘোষণা করেন; ” মুহাম্মদ সা.সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের কারও [জন্মদাতা] পিতা নয়, তবে তিনি আল্লাহর রাসুল ও সর্বশেষ নবি।[ সুরা আহযাব, আয়াত নং ৪০]

মাওলানা মনজুর নোমানী রাহ.স্বীয় গ্রন্হে উল্লেখ করেন,
কুখ্যাত মির্জা গোলাম আহমদ কাদীয়ানীরর ছেলে মির্জা বশিরুদ্দীন মাহমুদ ১৯১৫ ইংরেজিতে ‘হাকিকাতুন নুবুওয়াহ্’ নামে একটি পুস্তক প্রকাশ করেন, যাতে তিনি নিজ পিতা মির্জা গোলাম আহমদ কাদীয়ানী নবি হওয়ার ব্যাপারে ২০ টি দলিল পেশ করেন। যাতে তিনি স্বরণ মির্জা কাদিয়ানীর পরিস্কার দাবি এবং ব্যক্তব্য তুলে ধরেন।

মির্জা গোলামের পরিস্কার দাবি;
[১] আমি সেই খোদার নামে কসম করে বলছি, যার হাতে আমার প্রাণ! তিনিই আমাকে নবি বানিয়ে পাঠিয়েছেন। এই উম্মতের নবি হিসাবে আমাকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আমার ‘নবুওয়াত’ অস্বীকারকারীর পেছনে নামাজ পড়া জায়েজ নয়।[কিফায়াতুল মুফতি পৃ.৪৫৯ খণ্ড.১ মাক.যাকারিয়া]
[২] আমার হুকুম মতে আমি নবি। আমার নিকট অহি আসে, আমাকে অস্বীকারীরা কাফির। নাউযুবিল্লাহ!
আমি প্রতিশ্রুিত ইমাম মাহদি, আল্লাহ তা’আলা আমাকে বলেছেন, হে আমার পুত্র শুন!
[নাউযুবিল্লাহ!]
[৩] আমার দাবি আমি রাসুল ও নবি। আমাকে অন্য কারো সঙ্গে কিয়াস করো না। [খুতবায়ে ইলহামিয়া পৃ.১৯]
[৪] আমাকে ‘হাওযে কাওসার’ দান করা হয়েছে। আমি ‘মুরসালিন’দের অন্তভূক্ত।[হাকিকাতুল অহি পৃ.১০৭. কিফায়াতুল মুফতি পৃ.৪৫৯ খণ্ড.১ মাক.যাকারিয়া]
[৫] এতে কি সন্দেহ আছে আমার ভবিষ্যত-বাণীগুলোর পর দুনিয়ার মধ্যে একের এক ভুমিকম্প ও অন্যান্য বিপদ-আপদ আসা কি আমার সত্যতার নিদর্শন নয়? মনে রাখা উচিত, পৃথিবীর কোন প্রান্তরে আল্লাহর রাসুলকে অস্বীকার করলে অপর অপরাধীকে ও পাকড়াও করা হয়।[কাদিয়ানীরা অমুসলিম কেন?পৃ.৩৩,]

[৬] আল্লাহ তা’আলা নবির আগমন ছাড়া কোন জাতিকে শাস্তি প্রদান করেন না। তাহলে এসব কি হচ্ছে, একদিকে মহামারিতে দেশের মানুষ উজাড় হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ভুমিকম্প মানুষের পিছু ছাড়ছে না। হে গাফেল লোকেরা! হয়তো এসে গেছেন তোদের নিকট আল্লাহর পক্ষ হতে কোন রাসুল আর তোমরা তাকে অস্বীকার করছো।

[৭] আল্লাহ তা’আলা কাদীয়ানবাসীকে এই ধ্বংসাত্বক মহামারী থেকে রক্ষা করবেন, কেননা এইটা তাঁর রাসুলের রাজধানী। তিনিই সত্য খোদা যিনি কাদীয়ানে তার রাসুলকে পাঠিয়েছেন।[নাউযুবিল্লাহ]

এইসব আকিদা-মতাদর্শের ভিত্তিতে বিশ্বের সকল প্রাজ্ঞ-বরেণ্য উলামায়ে কেরামদের ঐক্যমতে মির্জা গোলাম আহমদ কাদীয়ানী এবং এই আকিদা-বিশ্বাস লালনকারি তথা ‘আহমদীয়া মুসলিম জামাত’র লোকের ইসলামে গণ্ডিবহিভূর্ত-কাফির। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা-মিলে-মিশে চলা ইসলামের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ, বরং দ্বীন-ইসলামকে ধ্বংস করার নামান্তর।[কিফায়াতুল মুফতি পৃ.৪৬২ মাক. যাকারীয়া]
আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এই ফিতনা থেকে হেফাজত করুন। এবং তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়াতের আকিদাকে হ্রদয়ে লালন করার তাওফিক করুন।

লেখক.
মুফতি ও মুহাদ্দিস
জামেয়া আবু হুরায়রা রা. আল-ইসলামিয়া ইয়ারপোর্ট, সিলেট।