কুয়েতে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান এর এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কার
- আপডেটের সময় : ০৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর ২০২০
- / ১৩১২ টাইম ভিউ
কুয়েতে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কার
কূটনৈতিক বা কূটনীতিবিদ (ইংরেজি: diplomat) কোন রাষ্ট্র কর্তৃক কূটনৈতিক পদমর্যাদাসম্পন্ন মনোনীত ব্যক্তি। তিনি অন্য কোন দেশ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
রাষ্ট্রদূতের প্রধান কাজই হচ্ছে নিজ দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং অক্ষুণ্ন রাখার উদ্দেশ্যে কোন কিছু উপস্থাপনা করা।
রাষ্ট্রদূত হিসেবে একে-অপরের দেশে নিযুক্ত করা হয় সভা এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অনেক সমস্যা সমাধানের জন্য, এখানেই রাষ্ট্রদূতের উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তা বিদ্যমান।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত : কুটনৈতিক সম্পর্ক জোড়ালো করার জন্য রাষ্ট্রদুতের কি করা প্রয়োজন মনে করেন
** রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান : একজন রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে কোন দেশের প্রতিনিধিত্ব করে যাবতীয় রাষ্ট্রীয় কার্যাদি সম্পন্ন করেন। নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং দ্বি-পক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বাস্তবায়নে সদা তৎপর থাকেন।
দূতাবাস যত যোগাযোগ ও দেখা – সাক্ষাত করবে তথ ভালো । আমি আসার মাত্র দুই মাস হলো, এরই মধ্যে আমি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত গণের সাথে সাক্ষাত শুরু করছি ।যখনই আমি বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের সাথে দেখা করি,তখনই আমাদের দেশের প্রসপেট তাদের বলি, যেনো তারা বাংলাদেশের আসবাব সম্পর্কে অবগত থাকে ।
এখন কোভিড ১৯ অবস্হায় দূতাবাস গুলোও কার্যক্রম পুরোধমে নেই , যা না করলে না হয় তাই করছে ।
আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রীমহোদয় এসেছিলেন, উনিও বিভিন্ন ক্যাটাগরির জন্য লোক আনতে বলেছেন,তারাও আগ্রহ দেখিয়েছে । এই পেনডামিক সময়ে কোনো কিছু সম্পূর্নভাবে বলা যাচ্ছে না, আমাদের অনেক সুযোগ আছে ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত : প্রবাসীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দূতাবাসের কি ধরনের কাজ করা উচিত মনে করেন ?
** রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান : এদেশে আমাদের শ্রমিকদের অনেক সমস্যা আছে, ব্যাক্তিগতভাবে বিভিন্ন জনের সাথে আলাপ করে জানতে পারি, প্রথমত তারা বেশ অর্থ ব্যায় করে এখানে এসেছে, এখানে কোম্পানী এসে তারা যে সমস্যার মুখামুখি হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কোম্পানীগুলো তাদের বেতন ঠিকমত দেয় না,সেখান থেকেও আবার কিছু কর্তন করে নেয়,বাসস্হান যেভাবে মানসম্পন্ন থাকার কথা, সেভাবে নেই । আকামা(ওয়ার্কপারমিড) বৃদ্ধির জন্য যখন সময় আসে, ওগুলোর জন্য টাকার ব্যাপার আছে, ম্যানেজার- সুপারভাইজারদের ব্যাবহার ভালো না । এই ধরনের সমস্যাগুলোর খবরাখবর ভালোভাবে পাওয়ার জন্য অনলাইন রেজিষ্টশন এর কথা বলেছি, যে যার কোম্পানী গুলোতে যে সমস্যায় আছে,তারা যদি অভিযোগ করে, তাহলে আমি তা খোজে পেতে সুবিদা হবে । ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছি এই পর্যন্ত একমাসের তিনটি কোম্পানীর সমস্যা সমাধান করেছি, অনলাইনে অভিযোগ পেলে, গোপনীয়তা রক্ষা করে আমাদের শ্রমিকরা যে চুক্তিবদ্ধ, সেই চুক্তিনুযায়ী যেনো তারা পায় সে ব্যাবস্হা করবো ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত :নারী শ্রমিকরা যে বিভিন্ন কোম্পানীতে হয়রানী হচ্ছে, সে সম্পর্কে দূতাবাস অবগত আছে কি ?
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল
আশিকুজ্জামান :দূতাবাস অবশ্যই জানে, কিছুদিন আগে একজন নির্যাতিত নারী শ্রমিক এসেছিলো,খোঁজ নিয়ে জানতে ইমিগ্রেশন থেকে জানতে পেরেছি সে দেশে চলে গিয়েছে । যদি এধরনের কোনো অভিযোগ পাই,সাথে সাথে তা খোজে বের করে সমাধান করার চেষ্টা করি, বিশেষ করে মহিলাদের জন্য ।যারা এখানে যে সমস্যা নিয়ে প্রবাসীদের নিয়ে চিন্তা করি, লেখা-লেখি হয়, বিভিন্ন অভিযোগ,অনুযোগ থাকে,মূলত এই সমস্যায় পড়ছে শ্রমিকরাই ।
তা পুরুষ বা মহিলা যেই হোক না কেনো, আমার মূল লক্ষ্যে হচ্ছে তাদের সমস্যার সমাধান করা ।
আমি ব্যাক্তিগতভাবে অনেক মার্কেটে গেছি, তাদের সাথে কথা বলেছি, যখন দেখি ট্রলি টেলছে কিংবা সাফাই কাজ করছে, তখন তাদের খবরাখবর নিতে তাদের সাথে কথা বলেছি, জিজ্ঞেস করেছি বেতন কত পায়, প্রতি উত্তরে বলেছে ফ্রি ভিসার লোক, উল্টো মালিক কে প্রতিদিন ৭/৮ দিনার দিতে হয় । তো এই যে কানে কানে শোনে বা মুখে মুখে শোনে তো একটা জায়গা যাওয়া যায় না।
হ্যা আমি এটাও নিশ্চিত করতে চাই, যে লোক গুলো অভিযোগ করবে, তাদের যেনো কোম্পানী ক্ষতি না করতে পারে,সেজন্য তাদের তথ্যটা গোপন রাখবো,তাদের অভিযোগ নিয়ে কোম্পানীদের সাথে আলোচনা করবো ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত : দূতাবাস পাসপোর্ট সেকশনে প্রবাসীদের অনেক হয়রানির কথা সোস্যাল মিডিয়াতে আসে , সে সম্পর্কে কিছু বলবেন কি ?
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান: আমি বাংলাদেশী কমিউনিটির সাথে পরিচিত সভায় বক্তব্য বলেছিলাম আমাদের সরকারের লক্ষ্যে হচ্ছে জিরো ট্রলারেন্স ।
জিরো ট্রলারেন্স বলতে এই না যে কয়েকদিনের মধ্যেই দূনীর্তি মুক্ত হয়ে যাবে , তবে একটা লক্ষ্যে আর লক্ষ্যে কে সামনে রেখেই বলেছিলাম যে আগে আমি আমার ধর ঠিক করবো,তারপর বাহির ঠিক করবো, বাস্তবতা হলো অনেকেই আছে যে সময়ের কারনে দূতাবাসে এসে পাসপোর্ট জমা দিতে পারছে না, তখন পরিচিতজনদের বলে পাসপোর্ট পাটায়, আমি একদম বলছি না যে এখানেও এরকম কিছু নাই, যারা ভিতরে কাজ করে তারাও সুযোগটি নিয়ে নেয় ।এরকম একটা প্রেকটিস যে ছিলো না, বা নেই তা বলছি না ।
আমি এসে দেখলাম যে ফরম লেখার জন্য টাকা নেয়, আমি যখন এটাকে নিয়ে আলোচনা করে জানতে পারলাম যে ফরম লেখার সাথে পাসপোর্ট এন্টি করার সাথে খুব একটা সম্পর্ক নেই , পাসপোর্ট দেখেই পাসপোর্ট এন্টি করে ।
ফরম পূরন করা হয় এজন্য যে সে সশরীরে উপস্হিত হয়েছে সেই প্রমানের জন্য । এখন আমি তা বন্ধ করে দিয়েছি । অনলাইনে সবাইকে জানানো হয়েছে তা , দূনীর্তির বিরুদ্ধে আমি কটোর, যারা দূতাবাসে কাজ করে জানিয়ে দিয়েছি, যদি কাউকে দূনীর্তিতে ধরা হয়, সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্হা নেওয়া হবে,এবং খুব শ্রিগ্রহই এর প্রতিফলন দেখতে পাবেন ।আমার চেষ্টার শেষ নেই, দূতাবাসের দিতে কেউ যেনো আঙ্গুল না তুলতে পারে,দূনীর্তিমুক্ত হলো আমার কাজ।
*সম্পাদক দেশদিগন্ত : প্রবাসীদের আইনী অধিকার ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে দূতাবাস কি ধরনের সহযোগিতা করবে ?
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান : এখানে মূলত যে জিনিষগুলো দেখি, সাধারনত দুই ধরনের মৃত্য, যেমন একটি হলো দূঘটনা জনিত মৃত্য ও আরেকটি হলো প্রাকৃতিকভাবে মৃত্য ।
যদি প্রাকৃতিকভাবে মৃত্য হয় তাহলে যে কাউকে পাওয়ার অফ এটর্নি দিতে পারে, আর যদি দূঘটনায় মৃত্যবরন করে তাহলে অবশ্যই দূতাবাসের মাধ্যম করতে হবে, এজন্য দুইজন আইনজীবি আছে তারা এসব দেখে, আমি নিজেই এসবের তদারকি করি এবং সব ধরনের সাপোর্ট দিয়ে থাকি ।
*সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আহসাব এর সময় প্রথম কুয়েতে বাংলাদেশী বিজনেস কাউন্সিল হলেও, তাদের কার্যক্রম থেমন ছিলো না, মেয়াদউত্তির্ন হয়ে গিয়েছে
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান: বিজনেস কাউন্সিলের কথা যেহেতু এসেছে, হ্যা তারা আমার সাথে এসে দেখা করেছে এবং এও বলেছে তাদের মেয়াদ উত্তির্ন হয়েছে অনেক দিন আগেই,এসব ব্যাপারে দূতাবাসের থেকে কোনো “ডিকটেড”সিন্ধান্ত চাপিয়ে দিবে না, সভাপতি কে হবেন, সাধারন সম্পাদক কে হবেন দূতাবাস তা ঠিক করবে না । পরিস্কার করে বলে দিয়েছি উনারা সিন্ধান্ত
নিয়ে ঠিক করবেন কে কোথায় আসবেন ।
যে কোনো সংগঠন হোক দূতাবাস হস্তক্ষেপ করবে না, যতদিন আমি দূতাবাসের দায়ীত্বে থাকবো । আমি চাইবো একটি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশী বিজনেস কাউন্সিল থাকবে, আমাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে বর্তমান পররাষ্ট্র নীতি অন্যতম দিক হচ্ছে ইকোনোমিকস ডিপ্লমেসি । কুয়েতে সাথে আমাদের ব্যাবসায়ী রপ্তানী খুবই কম, আমাদের উচিত বিভিন্ন চেম্বার অফ কর্মাসের সাথে যোগাযোগ আমাদের জিনিষপত্র আমদানি করা ।
প্রয়োজন বোধে জোমআপসের মাধ্যমে মতবিনিময় করতে পারি, আমদানি ও রপ্তানীর জন্য যদি অফিসিয়ালি যত কাজে দূতাবাসের প্রয়োজন হলে, দূতবাস সবধরনের সহযোগিতা করবে ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত : অনেক সময় দেখা যায়, বিভিন্ন অনিয়ম ও দূনীর্তিতে জড়িত বাংলাদেশিরা, যেমন ধরেন বাংলাদেশের একজন সাংসদ বর্তমানে কুয়েতের জেলে আছেন, সেই ব্যাপারে দূতাবাস আইনি কোনো সহযোগিতা করবে কি ?
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান: দেখেন এ নিয়ে তদন্ত চলছে, তাই এসব নিয়ে বর্তমানে আমি কোনো কথা বলতে চাইনা, তবে হ্যা এখানে আইনী সহায়তা চাইলে অবশ্যই আমরা তা দিবো, তবে উনি এখনও আইনী সহায়তা চায় নাই । উনি নিজেই আইনজীবি নিয়োগ করেছে, এখানে দূতাবাসের করার কিছু নাই । আর এই মামলার ব্যাপারে আমাদের বলার কিছু নাই, আমার জানা মতে কুয়েত সরকার এখন পর্যন্ত আমাদের মানে বাংলাদেশ সরকার কে অফিসিয়ালী লিখিতভাব কিছু জানায় নি, তা নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত :দূতাবাস হলো সকল প্রবাসীদের, সকল রাজনৈতিক দলের, কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় অনুষ্ঠানের খবর নিদির্ষ্ট একটি সংগটন বা ব্যাক্তিবিশেষরা জানে, অন্যদের জানানো হয় না,
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান: এখানে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত, তাই হলো বাস্তবতা । আমি যতটুকু পারছি তাদের সাথে কথা বলছি, এও বলছি সবাইকে আপনাদের মূল উদ্দেশ্য যদি একই হয় তাহলে আলাদাভাবে বিভক্তিত অংশগুলো কেনো ?
একটি সংগঠনের যদি সাঁতটি অংশে বিভক্তিত অংশ থাকে, তাহলে সাঁত অংশের সাথে কথা বলে কিছু করতে পারবো না, একতা না থাকলে ভালো কিছু করা যাবে না । যেহেতু আমি এখন নতুন দুমাস হচ্ছে, আমি সকল সংগঠন ও সকলের সাথে পরিচিত না, আমি সকল প্রবাসীদের, কোনো ব্যাক্তিবিশেষের না । আমি আগেও বলেছি আবারও দেশদিগন্ত মাধ্যমে জানাতে চাই দূতাবাস গল্প করার জায়গা না,দূতাবাস প্রবাসীদের সেবা দেওয়ার জন্য,এখানে কেউ খোশ গল্প করার জন্য আসবে, আমি তা সহ্য করবো না । এই ম্যাসেজ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জানানো হয়েছে, গণমাধ্যম কর্মিরা এলেই তা দেখতে পাবেন ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত : সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আসহাব এর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় একমাত্র বাংলাদেশী স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো, ব্যাক্তিপ্রভাবের কারনে তা বন্ধ হয়েছে, স্কুলটি পূনরায় চালু হবে কি ?
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান: হ্যা আমি এই স্কুল সম্বন্ধে অবগত আছি, তবে মনে রাখতে হবে, যে কোনো কিছু করতে গেলে দুটো বিষয় কাজ করে “ একটি হলো আবেগ আরেকটি হলো বাস্তবতা “ আবেগ এর দিক দিয়ে চিন্তা করলে, একটি বাংলাদেশী স্কুল থাকবে ।বাংলাদেশী ছেলে মেয়েরা পড়া শুনা করবে,বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশী স্কুল আছে একটা বিশাল ব্যাপার ।
কিন্তু বাস্তবতা যুক্ত করতে হবে, আমি যতটুকু খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি,খুবই ভালো উদ্দ্যোগ ছিলো, স্কুলটি করা হয়েছিলো, তবে ব্যাবস্হাপনা কমিটির বিভক্তির জন্য স্কুলটি বন্ধ হয়েছে শুনেছি ।সবার বুঝতে হবে ক্লাস যে পর্যায়ে শুরু হয়েছে, সেখানে সবধরনের ছাত্র-ছাত্রী দেওয়া হবে কি ? তাই আমাদের টার্গেট করতে হবে কোন ধরনের অভিবাবক তাদের সন্তানদের দিবে , এবং স্কুলটি যে জায়গায় ছিলো সেখানে যোগাযোগ ব্যাবস্হা ভালো ছিলো না,তাও একটা ব্যাপার ।
তারপরও আমি আশাবাদী স্কুলে যারা জড়িত তাদের কে নিয়ে আমি বসবো । স্কুলের ব্যাপারে আমার পরিকল্পনা আছে, রেডিও আও তাদের নিয়েও আমি বসবো ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত : সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আহসাব কে নিয়ে ভালো কাজের উদাহরন দেওয়া হয় এখনও ,এরচেয়েও বেশী উদাহরন আপনাকে নিয়ে দেওয়া হোক তা মনে করেন কি ?
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান: ভালো কে করেছে আর মন্দ করেছে কে ? এসব নিয়ে আমি কারো উদাহরন ঠানবো না । বরং আগের ভালো ও খারাপ থাকে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে যেনো ভালো কিছু করতে পারি তাই আমার মূল লক্ষ্যে । আমার মূল উদ্দেশ হচ্ছে দুটো, এমনিতেই কুয়েতের সাথে দেশের সম্পর্ক ভালো আছে, তবে আমি চেষ্টা করবো যেনো আরো ভালো সম্পর্ক তৈরী করতে পারি । আমাদের প্রচুর সেনাবাহিনী এখনও এখানে আছে,তারা শ্রদ্ধার সাথে স্বরন করে তা, আমি চেষ্টা করবো আরো ভালো করতে ।
দ্বিতীয় হচ্চে কিছু কিছু সিষ্টেম চালু করা দিতে হবে, আমাদের প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ লোক আছে তাদের বেশীর ভাগই শ্রমিক । তাদের সমস্যগুলো যেনো আমি মিমাংসা করতে পারি, তাই হলো আমার লক্ষ উদ্দেশ্য, সেজন্য আমি নিবেদিত থাকবো, তা আমি ইনসিওর দিতে পারি । কতটুকু পারবো তা মহান আল্লাহ জানেন,তবে আমার চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না ।
আরো হলো যারা ভিসা ট্রেড করে শ্রমিকদের হয়রানির মধ্যে ফেলেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিবো । আমার লক্ষ্যে ও উদ্দেশ্য হলো দূতাবাস কে সেবামূলক একটি প্রতিষ্ঠান হয়, লোকজন বিপদে পড়লে যেনো চিন্তায় আসে দূতাবাসে গেলে ভালো একটা কিছু পাবো, এই আস্হা সৃষ্টির লক্ষে আমি কাজ করে যাবো । আমি নিজেও একজন স্পোর্টস ম্যান,সাংস্কৃতি প্রিয় ব্যাক্তি, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গন কে জাগ্রত করবো সবাইকে নিয়ে , তার জন্য যা কিছু দরকার, বিভিন্ন পেশার ও বিভিন্ন দলের লোকদের মতামত নিয়ে তা করব ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত : আপনি সেনাচাউনী থেকে এসেছেন, একটা ক্লান্তি কালে দায়ীত্ব নিয়ে জনগণের সাথে মিশে কাজ শুরু করেছেন, তা নিয়ে আপনার অনুভূতি কি ?
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান: আমি মনে করি না এখানে বিশেষ কোনো অনুভূতি আছে, তবে কাজের ব্যাপারটা ভিন্ন । তবে আপনি এটাও দেখেছেন বাংলাদেশে সবসময় জাতী গঠনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যথেষ্ট ভূমিখা রেখেছে,এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ সহ যেকোনো সংকটময় মুহুর্তেও জনগণ ও সরকারের সাথে কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে কাজ করছে । এখানে প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন হলেও আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে, আমি আমার পেশাকে টেকনিক্যালি চ্যালেন্জ মনে করি ।তবে হ্যা আপনি যা বললেন ক্লান্তীকালে এসেছি, তবে এটা একটি ক্লান্তীলগ্ন সময় । বাংলাদেশ অবশ্যই এখন পর্যন্ত রেমিটেন্স একটা বিশাল ফ্যাক্টর । ইতিমধ্যেই দেখলাম যে কুয়েতের সংসদে একটা বিল দিয়েছে তা তারা পাশ করেছে ৩০% প্রবাসী কমতি করে নিবে, সেজন্য বছরখানেক সময় লাগবে, হয়তো নিশ্চয় কৌটা সিস্টেম করবে । তাদের আইন হলে অবশ্যই তা মানতে বাধ্য ।
তা হলেও আমাদের জন্য ভালো খবর থাকতে পারে, বাংলাদেশ থেকে কুয়েতের বিভিন্ন সেক্টরে টেকনিকাল ষ্টাফ আনতে পারে, তাদের ডিমান্ড আছে ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার,ল্যাব টেকনিশিয়ান, আইটি এক্সপার্ট আছে । স্হানীয় মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছি , দেশে থেকে এসবের লিষ্ট আসলে,এসব নিয়ে কাজ করে যাবো ।তা একদিনে হবে না, একটু সময় তো লাগবেই ।
* সম্পাদক দেশদিগন্ত : আপনাকে ধন্যবাদ আপনার অনেক মূল্যবান সময় ব্যায় করে আমাদের মাধ্যমে কল্যাণময়ী অনেক কিছু জানানোর জন্য
**রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান : আপনাকে ও দেশদিগন্ত পরিবার কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমারে কয়েকটি কথা তুলে ধরার সুযোগ দিয়েছেন এজন্য, সত্য এবং বাস্তবসম্মত খবরাখবর প্রচার করবেন সবসময় ।