ঢাকা , রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বর্তমান পরিস্থিতির উপর দেশবাসীকে যে বার্তা দিলেন শায়খ নূরে আলম হামিদী স্বাধিনতা মানে শুধুমাত্র নিজস্ব মানচিত্র অর্জন নয়, চাই বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা

ভুয়া সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারি: বাংলাদেশিদের আড় চোখে দেখছেন ইতালিয়ানরা

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ১২:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০
  • / ৪২০ টাইম ভিউ

ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারির প্রেক্ষিতে ইতালিতে থাকা বাংলাদেশিদের আলাদা নজরে দেখতে শুরু করেছেন সেখানকার অধিবাসীরা। কোনো কোনো বাংলাদেশি বলছেন যে, তাদেরকে সেখানে ‘সংক্রামক বোমার’ সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডয়েচে ভেলে।
খবরে ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এতে ১৮ বছর বয়সের তরুন ডিপ্লোমার ছাত্র  সৈয়দ ফয়সাল জানান, তিনি কয়েক বছর ধরেই ইতালিতে বাস করছেন। ইতালি এখন তার কাছে নিজের দেশের মতোই। তিনি জানান, এই ভুয়া সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারি কীভাবে তার জীবনকে প্রভাবিত করছে। তিনি বলেন, আমি সম্প্রতি বাংলাদেশে যাইনি।

তারপরেও, আমি যেখানে সপ্তাহে কয়েক ঘন্টা কাজ করি সেই রেস্তোরাঁর মালিক আমাকে করোনা টেস্ট করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এটি আমার জন্য এখন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তিনি জানান, এই ভুয়া সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারি নিয়ে তিনি বিব্রত।
শাহেদ নামের এক বাংলাদেশি হাসপাতাল মালিক হাজার হাজার ভুয়া করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিয়েছেন টাকার বিনিময়ে। ভারতে বোরকা পরে পালানোর সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাহেদসহ আরো প্রায় এক ডজন মানুষকে আটক করা হয় এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত থাকার দায়ে। সাহেদের হাসপাতালগুলো প্রায় ১০ হাজার ৫০০ করোনা টেস্ট করে। এরমধ্যে ৪২০০ সার্টিফিকেট ছিল বৈধ। বাকি ৬৩০০ সার্টিফিকেট কোনো ধরণের পরীক্ষা ছাড়াই প্রদান করা হয়।
সাহেদের থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে অনেকেই এরপরে ইউরোপে সফর করেছেন। তবে সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের দেহে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গত ৬ জুলাই ইতালি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ২২৫ যাত্রীর মধ্যে ২১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত করে। এরপর আরো টেস্টের পর এ সংখ্যা বেড়ে ৪৮এ দাঁড়ায়। এরমধ্যে অনেকেরই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছিল। এরপর ইতালি কর্তৃপক্ষ আগামি ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
ইতালিতে কাজ করেন প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ৩০ হাজারই রাজধানী শহর রোমে কাজ করেন। তবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী সেখানে রয়েছে আরো অন্তত ৪৫ হাজার বাংলাদেশি যারা অবৈধভাবে থাকেন। এসব অভিবাসীরা দেশটির পর্যটন ও কৃষি খাতে কাজ করছেন। তবে নতুন ওই কেলেঙ্কারির কারনে তারা নিজেদের ওপর খারাপ প্রভাবের আশঙ্কা করছেন। এছাড়া, বিদেশে বাংলাদেশিদের নতুন কাজ পেতেও সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে করেন তারা।
ইতালীর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ রোমে থাকা সকল বাংলাদেশিদের জন্য করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। এ জন্য তাদের থেকে কোনো অর্থও নেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। এরইমধ্যে ৭০০০ এর বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী সেখানকার হাসপাতালগুলোতে নিজেদের স্যা¤পল জমা দিয়েছে। তাদের অনেকেরই করোনা পজিটিভ ফল এসেছে। তবে তার সঠিক সংখ্যা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাংলাদেশিদের ইতালি ফিরে যাওয়ার পরেই ২ সপ্তাহ সেলফ কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। অনেকে সেটি মানলেও অনেকেই আবার তা মানছেন না। সরকার থেকে ঘোষিত নিয়ম কানুনও মানছেন না অনেক বাংলাদেশি। এ নিয়ে সেখানকার অধিবাসীরা বাংলাদেশিদের বাঁকা চোখে দেখতে শুরু করেছেন।
তবে, এই কেলেঙ্কারি বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যেকার সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত সোবহান শিকদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে রয়েছে দারুন স¤পর্ক। কিছুই এ স¤পর্ক নষ্ট করেনি। ইতালীয়রা জানে, বাংলাদেশিরা এখানে কাজ করতে আসে, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে যুক্ত হতে নয়। এ জন্য তারা বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে নেই।

পোস্ট শেয়ার করুন

ভুয়া সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারি: বাংলাদেশিদের আড় চোখে দেখছেন ইতালিয়ানরা

আপডেটের সময় : ১২:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০

ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারির প্রেক্ষিতে ইতালিতে থাকা বাংলাদেশিদের আলাদা নজরে দেখতে শুরু করেছেন সেখানকার অধিবাসীরা। কোনো কোনো বাংলাদেশি বলছেন যে, তাদেরকে সেখানে ‘সংক্রামক বোমার’ সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডয়েচে ভেলে।
খবরে ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এতে ১৮ বছর বয়সের তরুন ডিপ্লোমার ছাত্র  সৈয়দ ফয়সাল জানান, তিনি কয়েক বছর ধরেই ইতালিতে বাস করছেন। ইতালি এখন তার কাছে নিজের দেশের মতোই। তিনি জানান, এই ভুয়া সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারি কীভাবে তার জীবনকে প্রভাবিত করছে। তিনি বলেন, আমি সম্প্রতি বাংলাদেশে যাইনি।

তারপরেও, আমি যেখানে সপ্তাহে কয়েক ঘন্টা কাজ করি সেই রেস্তোরাঁর মালিক আমাকে করোনা টেস্ট করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এটি আমার জন্য এখন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তিনি জানান, এই ভুয়া সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারি নিয়ে তিনি বিব্রত।
শাহেদ নামের এক বাংলাদেশি হাসপাতাল মালিক হাজার হাজার ভুয়া করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিয়েছেন টাকার বিনিময়ে। ভারতে বোরকা পরে পালানোর সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাহেদসহ আরো প্রায় এক ডজন মানুষকে আটক করা হয় এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত থাকার দায়ে। সাহেদের হাসপাতালগুলো প্রায় ১০ হাজার ৫০০ করোনা টেস্ট করে। এরমধ্যে ৪২০০ সার্টিফিকেট ছিল বৈধ। বাকি ৬৩০০ সার্টিফিকেট কোনো ধরণের পরীক্ষা ছাড়াই প্রদান করা হয়।
সাহেদের থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে অনেকেই এরপরে ইউরোপে সফর করেছেন। তবে সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের দেহে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গত ৬ জুলাই ইতালি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ২২৫ যাত্রীর মধ্যে ২১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত করে। এরপর আরো টেস্টের পর এ সংখ্যা বেড়ে ৪৮এ দাঁড়ায়। এরমধ্যে অনেকেরই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছিল। এরপর ইতালি কর্তৃপক্ষ আগামি ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
ইতালিতে কাজ করেন প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ৩০ হাজারই রাজধানী শহর রোমে কাজ করেন। তবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী সেখানে রয়েছে আরো অন্তত ৪৫ হাজার বাংলাদেশি যারা অবৈধভাবে থাকেন। এসব অভিবাসীরা দেশটির পর্যটন ও কৃষি খাতে কাজ করছেন। তবে নতুন ওই কেলেঙ্কারির কারনে তারা নিজেদের ওপর খারাপ প্রভাবের আশঙ্কা করছেন। এছাড়া, বিদেশে বাংলাদেশিদের নতুন কাজ পেতেও সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে করেন তারা।
ইতালীর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ রোমে থাকা সকল বাংলাদেশিদের জন্য করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। এ জন্য তাদের থেকে কোনো অর্থও নেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। এরইমধ্যে ৭০০০ এর বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী সেখানকার হাসপাতালগুলোতে নিজেদের স্যা¤পল জমা দিয়েছে। তাদের অনেকেরই করোনা পজিটিভ ফল এসেছে। তবে তার সঠিক সংখ্যা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাংলাদেশিদের ইতালি ফিরে যাওয়ার পরেই ২ সপ্তাহ সেলফ কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। অনেকে সেটি মানলেও অনেকেই আবার তা মানছেন না। সরকার থেকে ঘোষিত নিয়ম কানুনও মানছেন না অনেক বাংলাদেশি। এ নিয়ে সেখানকার অধিবাসীরা বাংলাদেশিদের বাঁকা চোখে দেখতে শুরু করেছেন।
তবে, এই কেলেঙ্কারি বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যেকার সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত সোবহান শিকদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে রয়েছে দারুন স¤পর্ক। কিছুই এ স¤পর্ক নষ্ট করেনি। ইতালীয়রা জানে, বাংলাদেশিরা এখানে কাজ করতে আসে, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে যুক্ত হতে নয়। এ জন্য তারা বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে নেই।