ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে কুলাউড়া বিএনপির দীর্ঘ যুগ পর কোন্দলের অবসান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার

প্রকল্পে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা, কাজে হেরফের হলে আওয়াজ উঠবে

শেখ নিজামুর রহমান টিপু:
  • আপডেটের সময় : ০৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুন ২০২০
  • / ১৬৯০ টাইম ভিউ
শেখ নিজামুর রহমান টিপু: মৌলভীবাজার জেলা বাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল, সোমবার বিকালে একনেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মনু নদীর ভাঙ্গণ থেকে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা’ প্রকল্পে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা পাশ হয়েছে।
মৌলভীবাজারবাসীর দীর্ঘ যুগের আন্দোলনের ফসল ও প্রতিক্ষিত এ প্রকল্পটি পাশ করে দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এ নিয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে অভিনন্দন এর ঝড় বহিছে যেমন, থেমনি সাথে সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় হুশিয়ারীও উচ্চারণ হচ্ছে দুর্নীতির ধারাবাহিকতায় যেনো প্রকল্পটি হারিয়ে না যায়, যেন-তেন ভাবে কাজ করে লুটপাট যেনো না করা হয়।সোস্যাল মিডিয়ায় এমনও উল্লেখ করেছেন লুটপাট তো করবেই তো, ৬ কোটি ২৮ লাখ খেয়ে নাও।অবশিষ্ট ৯৯০ কোটির কাজ করলেই চলবে । সবটাকা গুলো যেনো না খায় সরকার দলীয় চাঁদাবাজরা কিংবা প্রকৌশলীরা ।
এ কাজটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে মৌলভীবাজার সদর শহর সহ রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা স্থায়ী বন্যা সমস্যার সমাধান হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ও জেলার সাধারন জনগণ আশা করেন । দীর্ঘদিন ধরে বন্যার সর্বগ্রাসী কবল থেকে রক্ষায় জেলাবাসী মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সময় আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, সেই দাবী সফল হলো প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একনেকে পাশ হওয়ার মধ্যে দিয়েই ।
মনু নদীর সর্বগ্রাসী অভিশাপ থেকে বাঁচতে বন্যা প্রতিরোধে প্রকল্প গ্রহণের জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নেছার আহমদ বিষয়টি মহান জাতীয় সংসদে একাধিকবার উত্থাপন করেছিলেন, বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন।
মৌলভীবাজারবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রতিক্ষিত এ প্রকল্পটি পাশ হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে মৌলভীবাজার জেলাবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাংসদ নেছার আহমদ এমপি। বিষয়টি অনেকেই নানাভাবে গণমাধ্যম উত্থাপন করেছেন ।
বিশেষ করে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাধায়ক প্রকৌশলী এবং নির্বাহি প্রকৌশলীকে প্রকল্পটি গ্রহণে করতে দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে এই সফলতার দিকে নিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ জানান- মাননীয় সংসদ সদস্য নেছার আহমদ ।
উল্লেখ্য ভারতে ত্রিপুরা হতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার। শরীফপুর নদীর প্রথম সম্মুখপথ তারপর হাজীপুর ও ঠিলাগাঁও ইউনিয়ন ঘেষে জেলার তিনটি উপজেলা হয়ে মৌলভীবাজার জেলা সদরের মধ্যে দিয়ে গিয়ে কুশিয়ারা নদীতে বিলিন হয় মনু নদী। কয়েকযুগ থেকে জেলার বড় ছোট নদীগুলোর সর্বগ্রাসী বন্যায় কৃষকদের পথে নামিয়ে দেয় । তন্মধ্যে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা, এই তো গত বন্যায় শতবর্ষের পুরতান কাউকাপন বাজারটির অনেকগুলো দোকান নদীতে বিলিন হয়ে দংশস্তুপে দাড়িয়ে আছে বাজার। নদী গর্ভে একের পর এক বিলীন হয়ে যাচ্ছে শতবছরের পুরাতন হাট-বাজার, মসজিদ-সড়ক, ফসলাদি জমি । ভয়াবহ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে জেলার চারটি উপজেলা মানুষ বর্ষাকালে সবসময় দিশেহারা হয়ে পড়ে ।
যাদের প্রকল্পের এই কাজগুলো করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা যদি কোনো ধরনের দায়ীত্বহীনতা দেখায় আর জেলার সরকার দলীয় নেতা ও প্রকৌশলীরা মিলে মিশে একাকার হয়ে লুটপাট করে, নামমাত্র কিছু কাজ করে দ্বায়ভার শেষ করলে চলবে না । তাহলে জেলার সাধারন মানুষ ঘরে বসে থাকবে না সোস্যাল মিডিয়াতে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে দিয়েছে এলাকার জনসাধারন “তোমরা চোর” আখ্যায়িত করবে । দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সরকার সহযোগিতা যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সেজন্য মৌলভীবাজার জেলাবাসী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম ।
ত্রিপুরার পাহার থেকে উজানের পানি নেমে সরাসরি মনু নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়,আর তাই প্রবল খর স্রোত থাকে এই নদীতে । তাই নদী শাসনের জন্য মাঝ নদীতে ড্রেজিং খুব প্রয়োজন, কিন্তু যদি নদীর মাটি কেটে তা আবার নদীতেই ফেলা হয় তাতে লাভ কিছুই হবে না ।
প্রায়ই দেখা যায় সরকারী প্রকল্প দূর্নীতিবাজদের কারণে কোথাও কখনো কোনো সফলতা পাচ্ছে না।
যদি মাঝেমধ্যে নদী ভাঙনে সিমেন্ট ও বালির বস্তা ফেলতে দেওয়া, তাও সামান্য কিছু দিয়েই কাজ শেষ, গণনা করার সাধ্য কার?
তাই নদী শাসন রোধ প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি হরিলুট চলে এবং এখনও যে এই প্রকল্প থেকে চলবে না তাও কেউ বলতে পারবে না, এখানে কোন সাক্ষী প্রমান থাকে না।পানির নিচে কত কি গেলো তা খোঁজ করার যৌক্তিক কোন সুযোগ নেই, তবে সবচেয়ে হতাশাজনক খবর হলো যেভাবে হরিলুট চলছে দেশে তার ধারাবাহিকতা এখানেও থাকবে কি ।
একনেকে পাশ হওয়া ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার খরচ ।ঠিকাদার নিয়মনীতি মেনে কাজ করবে কি ? এসব কাজে বড় ধরনের দুর্নীতি থাকার খবর নিয়মিতই মিডিয়াতে পাওয়া যায়। পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করা না গেলে সরকারের ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার প্রকল্প কোন উপকারের আসবে না।
পানি প্রবাহের জন্য গভীর নদীর প্রয়োজন,তাতে নদীর পাড় সুরক্ষিত থাকতো। কিন্তু দায়সারা গোছের কিছু খনন করা হলেও বেশীরভাগ জায়গা এখন ভরাট হয়ে পড়েছে। তাই সরকার যদি কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ নির্মাণ করে তাহলেও তাতে কোন ধরনের কার্যকর এবং ফলদায়ক হবে না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে দুর্নীতি৷ নদী ভাঙন রোধে নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে৷ দেখা যাচ্ছে, যে প্রক্রিয়ায় এবং যে ধরণের দ্রব্য ব্যবহার করে নদীর পাড় মজবুত করতে বলা হয়, দুর্নীতি করতে গিয়ে তা করা সম্ভব হয় না৷ ফলে সরকারি উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে তা তেমন সহায়ক হয় না৷ নদীর ভাঙনের কারণগুলোর দিকে তাকালে কিন্তু আপনারও মনে হবে অনেককিছুই আমাদের হাতে রয়েছে,অনেকক্ষেত্রেই আমাদের কারণেই নদী ভাঙন ঘটছে ।
চলুন জেনে নিই নদী ভাঙনের কয়েকটি মানবসৃষ্ট কারণ:
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নদীর গতি রোখার চেষ্টার কারণে নদীভাঙন ঘটতে পারে,অনেক সময় নদীর মাঝখান দিয়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করা হয়, যা ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে, অবশ্য এই কাজ যদি একান্ত করতেই হয় তাহলে আগে নদীর পাড় যথেষ্ট মজবুত করে নিতে হবে৷
অপরিকল্পিতভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টাও নদী ভাঙনের এক বড় কারণ । এবং তা করা হচ্ছে মনু নদীর বিভিন্ন স্হানে স্হানীয় প্রশাসন দেখেও যেনো না দেখার ভান করে বসে আছে ।
মনুষ্যসৃষ্ট এসব কারণ ছাড়াও প্রাকৃতিক কারণেও নদী ভাঙে,সেই প্রাকৃতিক খেলা আমাদের পক্ষে বন্ধ করা কঠিন৷ কিন্তু আমরা, মানুষরা, যেসব কারণ সৃষ্টি করেছি, সেগুলো যদি রোধ করা যায়, তাহলে নিঃসন্দেহে নদী ভাঙনের ক্ষতি রোধ সম্ভব হবে, প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি এই ব্যাপারে সচেষ্ট হবো?

পোস্ট শেয়ার করুন

প্রকল্পে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা, কাজে হেরফের হলে আওয়াজ উঠবে

আপডেটের সময় : ০৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুন ২০২০
শেখ নিজামুর রহমান টিপু: মৌলভীবাজার জেলা বাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল, সোমবার বিকালে একনেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মনু নদীর ভাঙ্গণ থেকে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা’ প্রকল্পে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা পাশ হয়েছে।
মৌলভীবাজারবাসীর দীর্ঘ যুগের আন্দোলনের ফসল ও প্রতিক্ষিত এ প্রকল্পটি পাশ করে দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এ নিয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে অভিনন্দন এর ঝড় বহিছে যেমন, থেমনি সাথে সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় হুশিয়ারীও উচ্চারণ হচ্ছে দুর্নীতির ধারাবাহিকতায় যেনো প্রকল্পটি হারিয়ে না যায়, যেন-তেন ভাবে কাজ করে লুটপাট যেনো না করা হয়।সোস্যাল মিডিয়ায় এমনও উল্লেখ করেছেন লুটপাট তো করবেই তো, ৬ কোটি ২৮ লাখ খেয়ে নাও।অবশিষ্ট ৯৯০ কোটির কাজ করলেই চলবে । সবটাকা গুলো যেনো না খায় সরকার দলীয় চাঁদাবাজরা কিংবা প্রকৌশলীরা ।
এ কাজটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে মৌলভীবাজার সদর শহর সহ রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা স্থায়ী বন্যা সমস্যার সমাধান হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ও জেলার সাধারন জনগণ আশা করেন । দীর্ঘদিন ধরে বন্যার সর্বগ্রাসী কবল থেকে রক্ষায় জেলাবাসী মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সময় আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, সেই দাবী সফল হলো প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একনেকে পাশ হওয়ার মধ্যে দিয়েই ।
মনু নদীর সর্বগ্রাসী অভিশাপ থেকে বাঁচতে বন্যা প্রতিরোধে প্রকল্প গ্রহণের জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নেছার আহমদ বিষয়টি মহান জাতীয় সংসদে একাধিকবার উত্থাপন করেছিলেন, বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন।
মৌলভীবাজারবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রতিক্ষিত এ প্রকল্পটি পাশ হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে মৌলভীবাজার জেলাবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাংসদ নেছার আহমদ এমপি। বিষয়টি অনেকেই নানাভাবে গণমাধ্যম উত্থাপন করেছেন ।
বিশেষ করে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাধায়ক প্রকৌশলী এবং নির্বাহি প্রকৌশলীকে প্রকল্পটি গ্রহণে করতে দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে এই সফলতার দিকে নিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ জানান- মাননীয় সংসদ সদস্য নেছার আহমদ ।
উল্লেখ্য ভারতে ত্রিপুরা হতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার। শরীফপুর নদীর প্রথম সম্মুখপথ তারপর হাজীপুর ও ঠিলাগাঁও ইউনিয়ন ঘেষে জেলার তিনটি উপজেলা হয়ে মৌলভীবাজার জেলা সদরের মধ্যে দিয়ে গিয়ে কুশিয়ারা নদীতে বিলিন হয় মনু নদী। কয়েকযুগ থেকে জেলার বড় ছোট নদীগুলোর সর্বগ্রাসী বন্যায় কৃষকদের পথে নামিয়ে দেয় । তন্মধ্যে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা, এই তো গত বন্যায় শতবর্ষের পুরতান কাউকাপন বাজারটির অনেকগুলো দোকান নদীতে বিলিন হয়ে দংশস্তুপে দাড়িয়ে আছে বাজার। নদী গর্ভে একের পর এক বিলীন হয়ে যাচ্ছে শতবছরের পুরাতন হাট-বাজার, মসজিদ-সড়ক, ফসলাদি জমি । ভয়াবহ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে জেলার চারটি উপজেলা মানুষ বর্ষাকালে সবসময় দিশেহারা হয়ে পড়ে ।
যাদের প্রকল্পের এই কাজগুলো করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা যদি কোনো ধরনের দায়ীত্বহীনতা দেখায় আর জেলার সরকার দলীয় নেতা ও প্রকৌশলীরা মিলে মিশে একাকার হয়ে লুটপাট করে, নামমাত্র কিছু কাজ করে দ্বায়ভার শেষ করলে চলবে না । তাহলে জেলার সাধারন মানুষ ঘরে বসে থাকবে না সোস্যাল মিডিয়াতে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে দিয়েছে এলাকার জনসাধারন “তোমরা চোর” আখ্যায়িত করবে । দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সরকার সহযোগিতা যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সেজন্য মৌলভীবাজার জেলাবাসী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম ।
ত্রিপুরার পাহার থেকে উজানের পানি নেমে সরাসরি মনু নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়,আর তাই প্রবল খর স্রোত থাকে এই নদীতে । তাই নদী শাসনের জন্য মাঝ নদীতে ড্রেজিং খুব প্রয়োজন, কিন্তু যদি নদীর মাটি কেটে তা আবার নদীতেই ফেলা হয় তাতে লাভ কিছুই হবে না ।
প্রায়ই দেখা যায় সরকারী প্রকল্প দূর্নীতিবাজদের কারণে কোথাও কখনো কোনো সফলতা পাচ্ছে না।
যদি মাঝেমধ্যে নদী ভাঙনে সিমেন্ট ও বালির বস্তা ফেলতে দেওয়া, তাও সামান্য কিছু দিয়েই কাজ শেষ, গণনা করার সাধ্য কার?
তাই নদী শাসন রোধ প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি হরিলুট চলে এবং এখনও যে এই প্রকল্প থেকে চলবে না তাও কেউ বলতে পারবে না, এখানে কোন সাক্ষী প্রমান থাকে না।পানির নিচে কত কি গেলো তা খোঁজ করার যৌক্তিক কোন সুযোগ নেই, তবে সবচেয়ে হতাশাজনক খবর হলো যেভাবে হরিলুট চলছে দেশে তার ধারাবাহিকতা এখানেও থাকবে কি ।
একনেকে পাশ হওয়া ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার খরচ ।ঠিকাদার নিয়মনীতি মেনে কাজ করবে কি ? এসব কাজে বড় ধরনের দুর্নীতি থাকার খবর নিয়মিতই মিডিয়াতে পাওয়া যায়। পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করা না গেলে সরকারের ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার প্রকল্প কোন উপকারের আসবে না।
পানি প্রবাহের জন্য গভীর নদীর প্রয়োজন,তাতে নদীর পাড় সুরক্ষিত থাকতো। কিন্তু দায়সারা গোছের কিছু খনন করা হলেও বেশীরভাগ জায়গা এখন ভরাট হয়ে পড়েছে। তাই সরকার যদি কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ নির্মাণ করে তাহলেও তাতে কোন ধরনের কার্যকর এবং ফলদায়ক হবে না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে দুর্নীতি৷ নদী ভাঙন রোধে নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে৷ দেখা যাচ্ছে, যে প্রক্রিয়ায় এবং যে ধরণের দ্রব্য ব্যবহার করে নদীর পাড় মজবুত করতে বলা হয়, দুর্নীতি করতে গিয়ে তা করা সম্ভব হয় না৷ ফলে সরকারি উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে তা তেমন সহায়ক হয় না৷ নদীর ভাঙনের কারণগুলোর দিকে তাকালে কিন্তু আপনারও মনে হবে অনেককিছুই আমাদের হাতে রয়েছে,অনেকক্ষেত্রেই আমাদের কারণেই নদী ভাঙন ঘটছে ।
চলুন জেনে নিই নদী ভাঙনের কয়েকটি মানবসৃষ্ট কারণ:
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নদীর গতি রোখার চেষ্টার কারণে নদীভাঙন ঘটতে পারে,অনেক সময় নদীর মাঝখান দিয়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করা হয়, যা ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে, অবশ্য এই কাজ যদি একান্ত করতেই হয় তাহলে আগে নদীর পাড় যথেষ্ট মজবুত করে নিতে হবে৷
অপরিকল্পিতভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টাও নদী ভাঙনের এক বড় কারণ । এবং তা করা হচ্ছে মনু নদীর বিভিন্ন স্হানে স্হানীয় প্রশাসন দেখেও যেনো না দেখার ভান করে বসে আছে ।
মনুষ্যসৃষ্ট এসব কারণ ছাড়াও প্রাকৃতিক কারণেও নদী ভাঙে,সেই প্রাকৃতিক খেলা আমাদের পক্ষে বন্ধ করা কঠিন৷ কিন্তু আমরা, মানুষরা, যেসব কারণ সৃষ্টি করেছি, সেগুলো যদি রোধ করা যায়, তাহলে নিঃসন্দেহে নদী ভাঙনের ক্ষতি রোধ সম্ভব হবে, প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি এই ব্যাপারে সচেষ্ট হবো?