ঢাকা , শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
পর্তুগালে মানবিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন “সদিচ্ছা ফাউন্ডেশন” এর লোগো সম্বলিত টি শার্ট উন্মোচন যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে

ঝিনাইদহে শতফুট উচ্চতার বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সম্বলিত টাওয়ারের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ৭৬১ টাইম ভিউ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিভৃত পল্লী,স্বাধীনতা যুদ্ধে নিবেদিত প্রাণ ও বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত স্নেহভাজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ শমশের আলীর স্মৃতিবিজড়িত শমশেরনগরে উৎসবমুখর পরিবেশে সদ্য জাতীয়করণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনকৃত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় “The statue of speech and freedom” টাওয়ারের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।উদ্বোধন করেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সুযোগ্য অধ্যক্ষ জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম ডাবলু।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক রবিউল ইসলাম, বাংলা বিভাগের প্রভাষক গৌরাঙ্গ কুমার বিশ্বাস, দর্শন বিভাগের প্রভাষক এম. এ মারুফ,ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক মোঃ শফিকুল ইসলাম,সুমন শাহরিয়ার, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক গোকুল কুমার বিশ্বাস সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকামণ্ডলী, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে আজ এ পর্যায়ে পৌছেছে।আনন্দের বিষয় হলো গত ১৪ই জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনা কলেজটিকে সরকারিকরণের অনুমোদন দিয়েছেন।সে কারণে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের আনন্দ,তেমনি মুজিব বর্ষে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য কলেজ চত্বরে শতফুট উচ্চতায় বাংলাদেশের প্রথম “The statue of speech and freedom” টাওয়ারের কাজ শুরু হওয়াতে আনন্দের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষকের সাথে আলাপকালে এ প্রতিবেদককে বলেন,এটি আমাদের কলেজের সভাপতি ও অধ্যক্ষ মহোদয়ের একটি মহতি উদ্দোগ। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে যেন কেও বিকৃত করতে না পারে,সেজন্য এর ধারক ও বাহক হিসাবে আমাদের কলেজে নির্মাণ হচ্ছে “The statue of speech and freedom”।তারা বলেন,টাওয়াটির উচ্চতা হবে বেজ হতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য পর্যন্ত ১০০ ফুট।বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীতে এটি আমাদের অধ্যক্ষ ও সভাপতি মহোদয়ের উপহার।আমরা দেখাতে চায় আমাদের কলেজটি শুধুমাত্র নাম ধারণে বিশ্বাসী নয়;আমরা প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বুকে লালন ও পালন করি এবং তা ভবিষৎত প্রজন্মের জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র তৈরি করতে চায়।

জানা যায়, “The statue of speech and freedom”-এর বিভিন্ন অংশে থাকবে ক্যাফেটেরিয়া,বঙ্গবন্ধু যাদুঘর,বঙ্গবন্ধু লাইব্রেরী ও রিসার্চ সেন্টার,ছাত্র সংসদ,ক্লাব,মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস ও রেষ্ট হাউজ।এবং টাওয়ারের সর্বোচ্চ স্থানে থাকবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোন নির্দিষ্ট দল বা গোষ্ঠীর নন, তিনি সমগ্র বিশ্বের বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুল ইসলাম।ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধনকালে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সুযোগ্য অধ্যক্ষ জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম ডাবলু বলেন,বঙ্গবন্ধু পরাধীন বাঙালি জাতিকে কাঙ্খিত স্বাধীনতা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েই ক্ষান্ত হননি, বাঙালি জাতির জন্য সংবিধান রচনা করে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এই পাঁচটি মৌলিক অধিকার সংবিধানে নিশ্চিত করে গেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একে অপরের সমার্থক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ব ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা যেমন প্রশ্নাতীত, ঠিক তেমনি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা একক ও অনন্য। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দল ও মতের অমিলে আমাদের ইতিহাসে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। স্বাধীনতার স্বপক্ষে ও বিপক্ষের মধ্যে তফাৎটি দিন দিন বাড়তে থাকে। তারই ফলশ্রুতিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ড। এরপর কয়েক বার সরকার বদল হয়েছে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের সাথে সাথে শিক্ষাঙ্গন ও সামাজিক অস্থিরতার ফলে আমরা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে সামগ্রীক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে শিক্ষাকে ধাপে ধাপে জাতীয়করণে আনার বিষয়টি ব্যাপক প্রসংসার দাবিদার। ক্যাসিনো, মাদক, সড়ক দুর্ঘটনার শুদ্ধি অভিযান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে একজন সাহসী ও সৎ রাজনীতিবিদের মর্যাদা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে শিশুদের অধিকারের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বিনীত আহবান জানাচ্ছি। শেখ রাসেলের মত একটি নিষ্পাপ শিশু সেদিন বর্বর হত্যাকারীদের হাতে রেহায় পায়নি। রাসেল একটি প্রতীক। জাতির পিতার নিষ্পাপ শিশুপুত্র শেখ রাসেলের স্মৃতি সুরক্ষার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শিশুদের প্রতি দায়িত¦ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। শেখ রাসেল জীবন দিয়ে পৃথিবীর নিষ্ঠুর আচরণের জন্য প্রতিবাদ করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশের ইতিহাসে শুধু নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও এ হত্যাকাণ্ড বর্বরোচিত ও জঘন্যতম। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার নিশ্চিন্ন করতে শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে। শিশু রাসেলকে যেভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তা একজন বিবেকবান মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। শেখ রাসেলের নিষ্পাপ দৃষ্টি ও নিথর দেহটিকে কেন্দ্র করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে বোধশক্তি জাগ্রত করতে হবে।

আর তাই,বঙ্গবন্ধু,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বাঙালীর ঐতিহ্য যাতে নতুন প্রজন্মে কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরা যায় এবং জাতীর শ্রেষ্ট সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা যায় সেজন্য বাংলাদেশের মধ্যে আমরাই প্রথম “The statue of speech and freedom” প্রকল্পটি হাতে নিয়েছি।যেখানে বঙ্গবন্ধু যাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য থাকবে,বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার ভাস্কর্য ছাড়াও জাতির পিতার নিষ্পাপ শিশুপুত্র শেখ রাসেলের ভাস্কর্য,১৫ই আগষ্টে নিহতদের ভাস্কর্য,৭জন বীর শ্রেষ্ট,ভাষা শহীদ ও বিশ্বে যারা স্বাধীনতার জন্য অমর হয়ে আছেন তাদের ভাস্কর্য।তিনি বলেন,আগামী ১৬ই ডিসেম্বর আমরা এর শুভ উদ্বোধন ও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দিতে পারবো বলে আশা প্রকাশ করছি এবং সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে।

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জনাব ডাঃ রাশেদ শমশের কলেজের বিশেষ কাজে বাইরে থাকায় মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, এই দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করে দিতে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিকল্প নেই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গান, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ, উপন্যাস, নাটক ইত্যাদি আগামী প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের দলিল হতে পারে। আমাদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি শিক্ষক সমাজ এবং অন্যান্য পেশার মানুষগুলোও তাদের কর্মকাণ্ডে ও প্রচার-প্রচারণায় বঙ্গবন্ধুকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। একটি গণ্ডির সীমাবদ্ধ না রেখে অসীমের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। এই হোক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনের মূল লক্ষ্য।

আর সে লক্ষ্যেকে সামনে রেখে মুজিব বর্ষে আমাদের উপহার “The statue of speech and freedom”।যার মধ্যে দিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পৌছে যাবে।

পরে ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন শেষে এক বিশেষ মোনাজাত ও সকলের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

পোস্ট শেয়ার করুন

ঝিনাইদহে শতফুট উচ্চতার বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সম্বলিত টাওয়ারের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন

আপডেটের সময় : ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিভৃত পল্লী,স্বাধীনতা যুদ্ধে নিবেদিত প্রাণ ও বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত স্নেহভাজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ শমশের আলীর স্মৃতিবিজড়িত শমশেরনগরে উৎসবমুখর পরিবেশে সদ্য জাতীয়করণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনকৃত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় “The statue of speech and freedom” টাওয়ারের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।উদ্বোধন করেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সুযোগ্য অধ্যক্ষ জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম ডাবলু।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক রবিউল ইসলাম, বাংলা বিভাগের প্রভাষক গৌরাঙ্গ কুমার বিশ্বাস, দর্শন বিভাগের প্রভাষক এম. এ মারুফ,ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক মোঃ শফিকুল ইসলাম,সুমন শাহরিয়ার, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক গোকুল কুমার বিশ্বাস সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকামণ্ডলী, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে আজ এ পর্যায়ে পৌছেছে।আনন্দের বিষয় হলো গত ১৪ই জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনা কলেজটিকে সরকারিকরণের অনুমোদন দিয়েছেন।সে কারণে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের আনন্দ,তেমনি মুজিব বর্ষে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য কলেজ চত্বরে শতফুট উচ্চতায় বাংলাদেশের প্রথম “The statue of speech and freedom” টাওয়ারের কাজ শুরু হওয়াতে আনন্দের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষকের সাথে আলাপকালে এ প্রতিবেদককে বলেন,এটি আমাদের কলেজের সভাপতি ও অধ্যক্ষ মহোদয়ের একটি মহতি উদ্দোগ। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে যেন কেও বিকৃত করতে না পারে,সেজন্য এর ধারক ও বাহক হিসাবে আমাদের কলেজে নির্মাণ হচ্ছে “The statue of speech and freedom”।তারা বলেন,টাওয়াটির উচ্চতা হবে বেজ হতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য পর্যন্ত ১০০ ফুট।বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীতে এটি আমাদের অধ্যক্ষ ও সভাপতি মহোদয়ের উপহার।আমরা দেখাতে চায় আমাদের কলেজটি শুধুমাত্র নাম ধারণে বিশ্বাসী নয়;আমরা প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বুকে লালন ও পালন করি এবং তা ভবিষৎত প্রজন্মের জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র তৈরি করতে চায়।

জানা যায়, “The statue of speech and freedom”-এর বিভিন্ন অংশে থাকবে ক্যাফেটেরিয়া,বঙ্গবন্ধু যাদুঘর,বঙ্গবন্ধু লাইব্রেরী ও রিসার্চ সেন্টার,ছাত্র সংসদ,ক্লাব,মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস ও রেষ্ট হাউজ।এবং টাওয়ারের সর্বোচ্চ স্থানে থাকবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোন নির্দিষ্ট দল বা গোষ্ঠীর নন, তিনি সমগ্র বিশ্বের বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুল ইসলাম।ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধনকালে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সুযোগ্য অধ্যক্ষ জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম ডাবলু বলেন,বঙ্গবন্ধু পরাধীন বাঙালি জাতিকে কাঙ্খিত স্বাধীনতা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েই ক্ষান্ত হননি, বাঙালি জাতির জন্য সংবিধান রচনা করে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এই পাঁচটি মৌলিক অধিকার সংবিধানে নিশ্চিত করে গেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একে অপরের সমার্থক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ব ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা যেমন প্রশ্নাতীত, ঠিক তেমনি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা একক ও অনন্য। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দল ও মতের অমিলে আমাদের ইতিহাসে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। স্বাধীনতার স্বপক্ষে ও বিপক্ষের মধ্যে তফাৎটি দিন দিন বাড়তে থাকে। তারই ফলশ্রুতিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ড। এরপর কয়েক বার সরকার বদল হয়েছে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের সাথে সাথে শিক্ষাঙ্গন ও সামাজিক অস্থিরতার ফলে আমরা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে সামগ্রীক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে শিক্ষাকে ধাপে ধাপে জাতীয়করণে আনার বিষয়টি ব্যাপক প্রসংসার দাবিদার। ক্যাসিনো, মাদক, সড়ক দুর্ঘটনার শুদ্ধি অভিযান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে একজন সাহসী ও সৎ রাজনীতিবিদের মর্যাদা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে শিশুদের অধিকারের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বিনীত আহবান জানাচ্ছি। শেখ রাসেলের মত একটি নিষ্পাপ শিশু সেদিন বর্বর হত্যাকারীদের হাতে রেহায় পায়নি। রাসেল একটি প্রতীক। জাতির পিতার নিষ্পাপ শিশুপুত্র শেখ রাসেলের স্মৃতি সুরক্ষার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শিশুদের প্রতি দায়িত¦ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। শেখ রাসেল জীবন দিয়ে পৃথিবীর নিষ্ঠুর আচরণের জন্য প্রতিবাদ করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশের ইতিহাসে শুধু নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও এ হত্যাকাণ্ড বর্বরোচিত ও জঘন্যতম। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার নিশ্চিন্ন করতে শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে। শিশু রাসেলকে যেভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তা একজন বিবেকবান মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। শেখ রাসেলের নিষ্পাপ দৃষ্টি ও নিথর দেহটিকে কেন্দ্র করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে বোধশক্তি জাগ্রত করতে হবে।

আর তাই,বঙ্গবন্ধু,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বাঙালীর ঐতিহ্য যাতে নতুন প্রজন্মে কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরা যায় এবং জাতীর শ্রেষ্ট সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা যায় সেজন্য বাংলাদেশের মধ্যে আমরাই প্রথম “The statue of speech and freedom” প্রকল্পটি হাতে নিয়েছি।যেখানে বঙ্গবন্ধু যাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য থাকবে,বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার ভাস্কর্য ছাড়াও জাতির পিতার নিষ্পাপ শিশুপুত্র শেখ রাসেলের ভাস্কর্য,১৫ই আগষ্টে নিহতদের ভাস্কর্য,৭জন বীর শ্রেষ্ট,ভাষা শহীদ ও বিশ্বে যারা স্বাধীনতার জন্য অমর হয়ে আছেন তাদের ভাস্কর্য।তিনি বলেন,আগামী ১৬ই ডিসেম্বর আমরা এর শুভ উদ্বোধন ও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দিতে পারবো বলে আশা প্রকাশ করছি এবং সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে।

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জনাব ডাঃ রাশেদ শমশের কলেজের বিশেষ কাজে বাইরে থাকায় মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, এই দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করে দিতে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিকল্প নেই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গান, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ, উপন্যাস, নাটক ইত্যাদি আগামী প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের দলিল হতে পারে। আমাদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি শিক্ষক সমাজ এবং অন্যান্য পেশার মানুষগুলোও তাদের কর্মকাণ্ডে ও প্রচার-প্রচারণায় বঙ্গবন্ধুকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। একটি গণ্ডির সীমাবদ্ধ না রেখে অসীমের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। এই হোক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনের মূল লক্ষ্য।

আর সে লক্ষ্যেকে সামনে রেখে মুজিব বর্ষে আমাদের উপহার “The statue of speech and freedom”।যার মধ্যে দিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পৌছে যাবে।

পরে ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন শেষে এক বিশেষ মোনাজাত ও সকলের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।