ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
পবিত্র কাবা থেকে বদরের প্রান্তরে… কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলম কে সংবর্ধনা দিয়েছে মনফালকনে গরিজিয়া বিএনপি ইতালির মিলানে রকমারি সাজে নানান আয়োজনে প্রবাসীদের বৈশাখী অনুষ্ঠান সম্পন্ন বর্তমান পরিস্থিতির উপর দেশবাসীকে যে বার্তা দিলেন শায়খ নূরে আলম হামিদী স্বাধিনতা মানে শুধুমাত্র নিজস্ব মানচিত্র অর্জন নয়, চাই বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন

শীতজনিত রোগ বেড়েছে ঠাঁই নেই হাসপাতালে

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২০
  • / ৫৮৩ টাইম ভিউ

বায়ুদূষণের সঙ্গে হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভিড় বেড়েছে। বলতে গেলে হাসপাতালগুলোতে ঠাঁই নেই। ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ এবং নানা রোগে আক্রান্তের হার গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও।

চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের সঙ্গে হঠাৎ করে শৈত্যপ্রবাহ যোগ হয়েছে। এ কারণে অ্যাজমা, ডায়রিয়া, ব্রংকিউলাইটিস, নিউমোনিয়া, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবমতে, গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নানা অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ১৭ হাজার ৪৪৯ জন। সারা দেশে এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭৮৬ জন শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৬৫৩ জন। আর শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ১০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ এমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে নতুন বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ জন। এছাড়া অন্যান্য অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৩০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০ হাজার ৪৪৬ জন, ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৫ হাজার ৮৮১ জন আর অন্যান্য অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০ হাজার ৪৩২ জন। মারা গিয়েছিলেন ১১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছরে দেশের ২০টি জেলা থেকে এ সংখ্যা আসত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। কিন্তু এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সারা দেশ থেকে নেওয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে নিয়ম অনুসরণ করেই চলতি বছরে পুরো দেশ থেকে শীতকালীন অসুখ এবং আক্রান্তের সংখ্যা সংগ্রহ করছে কন্ট্রোল রুম। ফলে সে হিসাবে চলতি বছরে এমনিতেই এ সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যাবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার। তিনি বলেন, তবে হঠাৎ করে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার কারণেও রোগী সংখ্যা বেড়েছে।

ডা. আয়শা আক্তার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা রেকর্ড করেছে। বায়ুদূষণ হয়ে গেল দেশের এক নম্বর দূষণ। শীতকালে বায়ুদূষণ আরো বেশি বেড়ে যায়, বাতাসে ধূলিকণা আরো বেশি ওড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, শীতের সময়ে বাইরে বের হলে ধুলাবালি নাকে বেশি লাগে।

ধুলাবালির সঙ্গে হাঁচি-কাঁশি বেড়ে যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো সবই ছোঁয়াচে রোগ। বাতাসের মাধ্যমে একজনের কাছ থেকে আরেকজনে ছড়ায়। হাঁচি-কাঁশিতে আক্রান্ত একজনের থেকে একহাত দূরত্বে থাকা আরেকজন সুস্থ মানুষ আক্রান্ত হবেন হাঁচি-কাঁশির মাধ্যমে। এজন্য নাক-মুখে ‍রুমাল চেপে হাঁচি-কাশি দিতে হবে, যাতে সেটি না ছড়াতে পারে। দূষিত বাতাসের কারণে অ্যাজমা আক্রান্তদের হাঁপানি বেড়ে যাচ্ছে, সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ যা ফুসফুসের এক ধরনের জটিল রোগ) বাড়ছে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ও সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ানুল আহসান বলেন, শৈত্যপ্রবাহের সময়ে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল, তবে শীত একটু কমে আসার কারণে আবার রোগী সংখ্যা কিছুটা কমেছে।

রাজধানীর মাতুয়াইলের মা ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. ইমরান শাহেদ জানান, শীতের বিভিন্ন রোগে শিশুরাই বেশি ধরাশায়ী হয়। যেহেতু বড়দের চেয়ে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। শিশুদের ক্ষেত্রে তাই সাবধানতা অবলম্বন করাটাই শ্রেয়। তবে যেহেতু এবার শৈত্যপ্রবাহের মাত্রা বেশি, সেহেতু বড়দেরও সাবধান থাকতে হবে। এ সময়ে কোনো ধরনের রোগে আক্রান্ত হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পোস্ট শেয়ার করুন

শীতজনিত রোগ বেড়েছে ঠাঁই নেই হাসপাতালে

আপডেটের সময় : ০২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২০

বায়ুদূষণের সঙ্গে হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভিড় বেড়েছে। বলতে গেলে হাসপাতালগুলোতে ঠাঁই নেই। ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ এবং নানা রোগে আক্রান্তের হার গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও।

চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের সঙ্গে হঠাৎ করে শৈত্যপ্রবাহ যোগ হয়েছে। এ কারণে অ্যাজমা, ডায়রিয়া, ব্রংকিউলাইটিস, নিউমোনিয়া, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবমতে, গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নানা অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ১৭ হাজার ৪৪৯ জন। সারা দেশে এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭৮৬ জন শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৬৫৩ জন। আর শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ১০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ এমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে নতুন বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ জন। এছাড়া অন্যান্য অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৩০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০ হাজার ৪৪৬ জন, ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৫ হাজার ৮৮১ জন আর অন্যান্য অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০ হাজার ৪৩২ জন। মারা গিয়েছিলেন ১১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছরে দেশের ২০টি জেলা থেকে এ সংখ্যা আসত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। কিন্তু এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সারা দেশ থেকে নেওয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে নিয়ম অনুসরণ করেই চলতি বছরে পুরো দেশ থেকে শীতকালীন অসুখ এবং আক্রান্তের সংখ্যা সংগ্রহ করছে কন্ট্রোল রুম। ফলে সে হিসাবে চলতি বছরে এমনিতেই এ সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যাবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার। তিনি বলেন, তবে হঠাৎ করে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার কারণেও রোগী সংখ্যা বেড়েছে।

ডা. আয়শা আক্তার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা রেকর্ড করেছে। বায়ুদূষণ হয়ে গেল দেশের এক নম্বর দূষণ। শীতকালে বায়ুদূষণ আরো বেশি বেড়ে যায়, বাতাসে ধূলিকণা আরো বেশি ওড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, শীতের সময়ে বাইরে বের হলে ধুলাবালি নাকে বেশি লাগে।

ধুলাবালির সঙ্গে হাঁচি-কাঁশি বেড়ে যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো সবই ছোঁয়াচে রোগ। বাতাসের মাধ্যমে একজনের কাছ থেকে আরেকজনে ছড়ায়। হাঁচি-কাঁশিতে আক্রান্ত একজনের থেকে একহাত দূরত্বে থাকা আরেকজন সুস্থ মানুষ আক্রান্ত হবেন হাঁচি-কাঁশির মাধ্যমে। এজন্য নাক-মুখে ‍রুমাল চেপে হাঁচি-কাশি দিতে হবে, যাতে সেটি না ছড়াতে পারে। দূষিত বাতাসের কারণে অ্যাজমা আক্রান্তদের হাঁপানি বেড়ে যাচ্ছে, সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ যা ফুসফুসের এক ধরনের জটিল রোগ) বাড়ছে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ও সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ানুল আহসান বলেন, শৈত্যপ্রবাহের সময়ে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল, তবে শীত একটু কমে আসার কারণে আবার রোগী সংখ্যা কিছুটা কমেছে।

রাজধানীর মাতুয়াইলের মা ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. ইমরান শাহেদ জানান, শীতের বিভিন্ন রোগে শিশুরাই বেশি ধরাশায়ী হয়। যেহেতু বড়দের চেয়ে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। শিশুদের ক্ষেত্রে তাই সাবধানতা অবলম্বন করাটাই শ্রেয়। তবে যেহেতু এবার শৈত্যপ্রবাহের মাত্রা বেশি, সেহেতু বড়দেরও সাবধান থাকতে হবে। এ সময়ে কোনো ধরনের রোগে আক্রান্ত হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।