ঐতিহ্যবাহী ভাটেরায় এখন এক আতঙ্কিত জনপদের নাম
- আপডেটের সময় : ১১:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৯
- / ৭৮৬ টাইম ভিউ
নিউজ ডেস্ক: কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়ন অপরাধ কর্মকান্ড আর অপরাধীদের বেপরোয়া হয়ে উঠার নেপথ্যে রয়েছে বহিরাগতদের ইন্ধন।
দুটি প্রভাবশালী ও বিত্তশালী গ্রুপ নিজেদের ব্যবহারের জন্য ও প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তারে অপকর্মকারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। মুলত অপকর্মকারী ও তাদের সহযোগিরা মুল ভাটেরার বাসিন্দা নয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাটেরায় অপকর্মকারীদের জন্ম হয় মুলত ভাটেরা রাবার বাগান থেকে। প্রথমে বাগানের কষ ও গাছ চুরি করা। চুরির একাধিক মামলায় জেল খেটে বেরিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠা। পরে প্রকাশ্যে অপকর্ম এমনকি ডাকাতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে শীর্ষ ডাকাতে পরিণত হওয়া। ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ক্রস ফায়ারে মৃত্যু হয় ডাকাত সর্দার বাবুল (৩০) এর। ডাকাতি সাথে সম্পৃক্তরা বেশির ভাগই ভাটেরার মুল বাসিন্দা নয়।
১৯৯৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে নানা অপকর্মের কারণে ভাটেরার শান্তি শৃঙ্খলার স্বার্থে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করতে হয়। ভাটেরা ইউনিয়নে ব্যবসার সুবাদে সিলেট বিভাগের বাইরে কিছু মানুষ মাইজগাঁও গ্রামে এবং চাকুরির সুবাদে কিছু মানুষ কলিমাবাদ গ্রামে বসবাস করেন। এছাড়া গোটা ভাটেরা ইউনিয়ন জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মুলত ভুকশিমইল ইউনিয়নের মানুষ। ভাটেরার মুল বাসিন্দারা যেন এখনে সংখ্যালঘু। যে কারণেই মুলত বিশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করে।
ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর প্রথম চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আলী, ২য় চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়া, ৩য় চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ বখর, ৪র্থ চেয়ারম্যান সিরাজ মিয়া, ৫ম ও বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম। প্রথম ৪ জন ভাটেরার আদি বাসিন্দা হলেও বর্তমান চেয়ারম্যান মুল বাড়ি ভুকশিমইল ইউনিয়নে।
দুটি পক্ষ নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার ও অবৈধ দখলসহ বিভিন্ন অপকর্মে ব্যবহারের জন্য চিহ্নিত অপরাধীদের ব্যবহারের জন্য জেল থেকে জামিনে মুক্ত করে আনেন। সেই সুযোগে দাগি আসামীরাও জনপ্রতিনিধির আসন দখল করেছে। বসছে জনপ্রতিনিধির কাতারে।
ভাটেরা ইউনিয়নের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গোটা ইউনিয়ন জুড়ে রয়েছে আতঙ্ক। অপকর্মের প্রতিবাদকারীরা নিরাপত্তার স্বার্থে এলাকার বাইরে রাত্রি যাপন করেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে জনপ্রতিনিধিরাও মুখ খুলতে নারাজ। প্রবাসীরা বিমুখ দেশে ফেরার ব্যাপারে। নাম প্রকাশে একাধিক আমেরিকা ও ইংল্যান্ড প্রবাসীরা জানান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবির বাড়িতে একাধিকবার ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। কোন প্রতিকার নেই। আর প্রবাসীদের কি নিরাপত্তা আছে? পরিবার পরিজন নিয়ে কোন ভরসায় দেশে ফিরবেন। এর চেয়ে না ফেরার সিদ্ধান্তেই তারা অটল।