ফুলে ফুলে দ্বিজেন শর্মাকে শেষ শ্রদ্ধা
- আপডেটের সময় : ০৯:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
- / ১৪৭৫ টাইম ভিউ
ফুলে ফুলে প্রকৃতিসখা দ্বিজেন শর্মাকে শেষ বিদায় জানাল সর্বস্তরের মানুষ। তার প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ আনা হলে লেখকের বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড়ে শোকে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই লেখকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর আগে বাংলা একাডেমিতে বন্ধু-অনুরাগী এবং দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
বাংলা একাডেমিতে কথাসাহিত্যিক হায়াৎ মামুদ, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, অভিনেতা রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, প্রাবন্ধিক রমণীমোহন দেবনাথ ও লেখক ইনাম আল হক সেখানে দ্বিজেন শর্মার প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি বলেন, বাংলা একাডেমির সাহিত্য পত্রিকা উত্তরাধিকারে দ্বিজেন শর্মাকে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা বের করবেন তারা। তার স্মরণে স্মারকগ্রন্থ ও জীবনীগ্রন্থ প্রকাশের পরিকল্পনাও বাংলা একাডেমির রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দ্বিজেন শর্মা সব সময় ঢাকা শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ানোর কথা বলতেন। ঢাকা শহর বিপন্ন, বিপর্যস্ত হয়ে যাবে- এটা তিনি মানতে পারতেন না।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় দ্বিজেন শর্মার মরদেহ নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় দ্বিজেন শর্মার নাগরিক শ্রদ্ধানুষ্ঠান হয়।
দ্বিজেন শর্মার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, ছড়াকার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আমিরুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ মফিদুল হক, সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, গোলাম কুদ্দুস, রাজনীতিবিদ জোনায়েদ সাকি, শিশু সাহিত্যিক ও উপস্থাপক আলী ইমাম, প্রাবন্ধিক ড. হায়াত মাহমুদ, জীবন ও প্রকৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু প্রমুখ।
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, নজরুল ইনস্টিটিউট, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন, স্থাপত্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ রাশিয়া মৈত্র্য সমিতি, শিল্পকলা একাডেমিসহ প্রকৃতি, পরিবেশ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে মারা যান ৮৮ বছর বয়সী দ্বিজেন শর্মা। কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতা ছাড়াও বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।
স্কয়ার হাসপাতালের হিমঘর থেকে রোববার বেলা ১১টার দিকে দ্বিজেন শর্মার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাংলা একাডেমিতে।
১৯২৯ সালের ২৯ মে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় দ্বিজেন শর্মার জন্ম। বাবা কবিরাজ ছিলেন বলে ছোটবেলা থেকেই লতা-পাতা, বৃক্ষ আর অরণ্য-প্রকৃতির সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে।
প্রকৃতিপ্রেমী দ্বিজেন শর্মা উদ্ভিদ জগৎ, প্রকৃতি বিজ্ঞান আর বিজ্ঞান ভাবনা নিয়ে প্রায় দেড় ডজন বই লিখেছেন।
শহীদ মিনারের শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান শেষে দ্বিজেন শর্মার কফিন নিয়ে যাওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল নটর ডেম কলেজ প্রাঙ্গণে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানোর পর রাজধানীর সবুজবাগে রাজারবাগ বরদেশ্বরী কালী মন্দিরসংলগ্ন শ্মশানে তার শেষকৃত্য হয়।