ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে কুলাউড়া বিএনপির দীর্ঘ যুগ পর কোন্দলের অবসান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার

সম্রাট থেকে চাঁদার ভাগ পেতেন যারা

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেটের সময় : ০৬:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০১৯
  • / ৫৫২ টাইম ভিউ

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি (বহিষ্কৃত) ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ক্যাসিনোর চাঁদার ভাগ ২০ জনকে দিতেন। এদের মধ্যে সাতজন সরাসরি চাঁদার টাকা নিতেন। এদের মধ্যে দুইজন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতা, তিনজন সংসদ সদস্য (এমপি) এবং দুজন পুলিশ কর্মকর্তা।

অঙ্গসংগঠনের মধ্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার। তিন এমপির মধ্যে একজন গোপালগঞ্জের, একজন ভোলার ও অন্যজনের নাম বললেও কোন আসনের এমপি তা নিশ্চিত করতে পারেননি সম্রাট। এছাড়া দুই পুলিশ কর্মকর্তাও সরাসরি চাঁদা নিতেন। তাদের দুজনই অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সমমর্যাদার কর্মকর্তা।
অস্ত্র ও মাদক আইনে করা দুই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে থাকা সম্রাট জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে এসব তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট জানায়, মতিঝিলের ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, আরামবাগ ক্লাব, দিলকুশা ক্লাব, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে। পাশাপাশি ইয়াংমেন্স ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ ছিল যৌথভাবে সম্রাট ও যুবলীগের (বহিষ্কৃত) সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার হাতে। সম্রাট এই ছয়টি ক্লাবের ক্যাসিনো থেকে প্রতিদিন রাতে ৭ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন। এছাড়াও গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেট, আদর্শ মহানগর মার্কেট, ফুলবাড়িয়া ও বঙ্গবাজারের চারটি মার্কেট থেকে প্রতি রাতে ১ লাখ টাকা আসতো তার কাছে। এসব টাকার ভাগ সরাসরি ৭ জনকে দিতেন বলে দাবি করেছেন সম্রাট।

সম্রাট রিমান্ডে জানান, মূলত ওই সাতজনকে সুবিধা দিয়েই নির্বিঘ্নে ক্যাসিনো ও চাঁদাবাজি টিকিয়ে রেখেছিলেন।

এদিকে সূত্র আরও জানায়, তদন্তে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে সম্রাটের বিপুল পরিমাণ টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হবে।

সম্রাটের রিমান্ডের বিষয়ে জানতে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সারওয়ার-বিন-কাশেম
জাগো নিউজকে বলেন, ‘সম্রাটের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে সে বিষয়ে তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য প্রকাশ করতে পারছি না।’

এদিকে সম্রাট যাদের কথা বলেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন ইতোমধ্যে আত্মগোপনে। রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুককে সংগঠনের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেন। ৩ অক্টোবর তার ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক, তবে তার দেশত্যাগে কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।

সম্রাটের রিমান্ডের দেয়া তথ্যের বিষয়ে ওমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আমার ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। যদি তারা পায় যে, আমার ব্যাংকে ক্যাসিনোর টাকা ঢুকেছে তাহলে তারা এনবিআর ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এটা দেবে। এরপর আমার বিচার শুরু হবে, আমি উচ্চ আদালতে নিজেকে প্রমাণ করব।’

এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও দুই এমপির ব্যক্তিগত মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সম্রাট। নানা গুঞ্জনের পর ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেফতার করে র্যাব।

পোস্ট শেয়ার করুন

সম্রাট থেকে চাঁদার ভাগ পেতেন যারা

আপডেটের সময় : ০৬:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০১৯

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি (বহিষ্কৃত) ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ক্যাসিনোর চাঁদার ভাগ ২০ জনকে দিতেন। এদের মধ্যে সাতজন সরাসরি চাঁদার টাকা নিতেন। এদের মধ্যে দুইজন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতা, তিনজন সংসদ সদস্য (এমপি) এবং দুজন পুলিশ কর্মকর্তা।

অঙ্গসংগঠনের মধ্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার। তিন এমপির মধ্যে একজন গোপালগঞ্জের, একজন ভোলার ও অন্যজনের নাম বললেও কোন আসনের এমপি তা নিশ্চিত করতে পারেননি সম্রাট। এছাড়া দুই পুলিশ কর্মকর্তাও সরাসরি চাঁদা নিতেন। তাদের দুজনই অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সমমর্যাদার কর্মকর্তা।
অস্ত্র ও মাদক আইনে করা দুই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে থাকা সম্রাট জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে এসব তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট জানায়, মতিঝিলের ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, আরামবাগ ক্লাব, দিলকুশা ক্লাব, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে। পাশাপাশি ইয়াংমেন্স ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ ছিল যৌথভাবে সম্রাট ও যুবলীগের (বহিষ্কৃত) সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার হাতে। সম্রাট এই ছয়টি ক্লাবের ক্যাসিনো থেকে প্রতিদিন রাতে ৭ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন। এছাড়াও গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেট, আদর্শ মহানগর মার্কেট, ফুলবাড়িয়া ও বঙ্গবাজারের চারটি মার্কেট থেকে প্রতি রাতে ১ লাখ টাকা আসতো তার কাছে। এসব টাকার ভাগ সরাসরি ৭ জনকে দিতেন বলে দাবি করেছেন সম্রাট।

সম্রাট রিমান্ডে জানান, মূলত ওই সাতজনকে সুবিধা দিয়েই নির্বিঘ্নে ক্যাসিনো ও চাঁদাবাজি টিকিয়ে রেখেছিলেন।

এদিকে সূত্র আরও জানায়, তদন্তে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে সম্রাটের বিপুল পরিমাণ টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হবে।

সম্রাটের রিমান্ডের বিষয়ে জানতে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সারওয়ার-বিন-কাশেম
জাগো নিউজকে বলেন, ‘সম্রাটের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে সে বিষয়ে তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য প্রকাশ করতে পারছি না।’

এদিকে সম্রাট যাদের কথা বলেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন ইতোমধ্যে আত্মগোপনে। রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুককে সংগঠনের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেন। ৩ অক্টোবর তার ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক, তবে তার দেশত্যাগে কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।

সম্রাটের রিমান্ডের দেয়া তথ্যের বিষয়ে ওমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আমার ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। যদি তারা পায় যে, আমার ব্যাংকে ক্যাসিনোর টাকা ঢুকেছে তাহলে তারা এনবিআর ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এটা দেবে। এরপর আমার বিচার শুরু হবে, আমি উচ্চ আদালতে নিজেকে প্রমাণ করব।’

এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও দুই এমপির ব্যক্তিগত মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সম্রাট। নানা গুঞ্জনের পর ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেফতার করে র্যাব।