ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
সাবেক সাংসদ সেলিমা আহমাদ মেরীর সাথে পর্তুগাল আওয়ামিলীগের মতবিনিময় সভা কুলাউড়ার হাজীপুরে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ১২ ঘন্টার মধ্যেই দুজন গ্রেফতার কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায়  আছকির মিয়া (৫০)নিহত  হয়েছেন। বর্ণাঢ্য আয়োজনে পর্তুগাল বিএনপির আহবায়ক কমিটির অভিষেক ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত। সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা প্রধান নির্বাচিত হলেন অধ্যক্ষ মাওলানা বশির আহমদ মুসলিম কমিউনিটি মৌলভীবাজার এর কমিটি গঠন পবিত্র কাবা থেকে বদরের প্রান্তরে… কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলম কে সংবর্ধনা দিয়েছে মনফালকনে গরিজিয়া বিএনপি ইতালির মিলানে রকমারি সাজে নানান আয়োজনে প্রবাসীদের বৈশাখী অনুষ্ঠান সম্পন্ন বর্তমান পরিস্থিতির উপর দেশবাসীকে যে বার্তা দিলেন শায়খ নূরে আলম হামিদী

তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা মিলেছে

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেটের সময় : ০৮:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০১৯
  • / ৫৪২ টাইম ভিউ

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ : কুলাউড়ার তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের আলোচিত সেই প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষিকার করা যৌন হুয়রানির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে নতুন করে জেলা প্রশাসনের তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে তদন্তে নেমেছেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মল্লিকা দে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদ কর্তৃক সহকারী শিক্ষিকাকে আপত্তিকর প্রস্তাব, যৌন হয়রানি, প্রাণনাশ ও অপহরণের হুমকিজনিত কারণে নিরাপত্তার জন্য ৩০ জুলাই জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেন ওই সহকারী শিক্ষিকা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে উভয়পক্ষের কাগজাদি ও স্বাক্ষী প্রমাণসহ উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তুু অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদ তদন্ত প্রতিবেদন তাঁর পক্ষে নিতে কৌশল অবলম্বন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করেন। এসময় প্রধান শিক্ষক তাঁর অনুসারী ও বহিরাগতদের বিদ্যালয়ে এনে তদন্ত কার্যক্রমে বিঘœ সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চালান, কিন্তুু অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাদের বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এনটিআরসির মাধ্যমে জনৈক এক নারী সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পান। সহকারী শিক্ষিকাকে এমপিও ভুক্ত করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি ও কুপ্রস্তাব দিয়ে যৌন হয়রানি করতেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোমান। তাঁর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে নিজ বলয়ের লোকজনদের দিয়ে সহকারী শিক্ষিকাকে নানা ভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাতেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির প্রতিকার ও নিরাপত্তা চেয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ করেন সহকারী শিক্ষিকা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই আবেদনটি থানায় পাঠিয়ে দিলে পুলিশ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় ২৫ জুলাই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হলে এলাকা ছাড়েন প্রধান শিক্ষক। অনেকেই এখন মুখ খুলছেন তাঁর বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষকের এমনসব কর্মকান্ডে তটস্ত হয়ে ৭ জুলাই থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেন সহকারী শিক্ষিকা। বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলে টনক নড়ে প্রশাসনের। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলেও ২৯ জুলাই উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরেন প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্তে যান উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো ঃ সাদি-উর রহিম জাদিদ। তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদি-উর রহিম জাদিদ বলেন, তদন্তে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট ইউএনও কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল লাইছ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক এর কাছে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। জেলা প্রশাসনের তদন্তের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মল্লিকা দে বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, এ বিষয়ের ঘটনা তদন্তনাধীন। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য বলেছিলাম, কিন্তুু বিদ্যালয়ে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী থাকায় আংশিক তদন্ত করেছি। পরবর্তীতে বাকি তদন্তের কার্যক্রম চলবে।

পোস্ট শেয়ার করুন

তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা মিলেছে

আপডেটের সময় : ০৮:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০১৯

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ : কুলাউড়ার তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের আলোচিত সেই প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষিকার করা যৌন হুয়রানির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে নতুন করে জেলা প্রশাসনের তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে তদন্তে নেমেছেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মল্লিকা দে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদ কর্তৃক সহকারী শিক্ষিকাকে আপত্তিকর প্রস্তাব, যৌন হয়রানি, প্রাণনাশ ও অপহরণের হুমকিজনিত কারণে নিরাপত্তার জন্য ৩০ জুলাই জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেন ওই সহকারী শিক্ষিকা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে উভয়পক্ষের কাগজাদি ও স্বাক্ষী প্রমাণসহ উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তুু অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদ তদন্ত প্রতিবেদন তাঁর পক্ষে নিতে কৌশল অবলম্বন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করেন। এসময় প্রধান শিক্ষক তাঁর অনুসারী ও বহিরাগতদের বিদ্যালয়ে এনে তদন্ত কার্যক্রমে বিঘœ সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চালান, কিন্তুু অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাদের বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এনটিআরসির মাধ্যমে জনৈক এক নারী সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পান। সহকারী শিক্ষিকাকে এমপিও ভুক্ত করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি ও কুপ্রস্তাব দিয়ে যৌন হয়রানি করতেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোমান। তাঁর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে নিজ বলয়ের লোকজনদের দিয়ে সহকারী শিক্ষিকাকে নানা ভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাতেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির প্রতিকার ও নিরাপত্তা চেয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ করেন সহকারী শিক্ষিকা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই আবেদনটি থানায় পাঠিয়ে দিলে পুলিশ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় ২৫ জুলাই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হলে এলাকা ছাড়েন প্রধান শিক্ষক। অনেকেই এখন মুখ খুলছেন তাঁর বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষকের এমনসব কর্মকান্ডে তটস্ত হয়ে ৭ জুলাই থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেন সহকারী শিক্ষিকা। বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলে টনক নড়ে প্রশাসনের। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলেও ২৯ জুলাই উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরেন প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্তে যান উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো ঃ সাদি-উর রহিম জাদিদ। তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদি-উর রহিম জাদিদ বলেন, তদন্তে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট ইউএনও কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল লাইছ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক এর কাছে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। জেলা প্রশাসনের তদন্তের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মল্লিকা দে বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, এ বিষয়ের ঘটনা তদন্তনাধীন। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য বলেছিলাম, কিন্তুু বিদ্যালয়ে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী থাকায় আংশিক তদন্ত করেছি। পরবর্তীতে বাকি তদন্তের কার্যক্রম চলবে।