প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ হলেন কুলাউড়ার রাজু !
- আপডেটের সময় : ০২:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯
- / ১৩৬৫ টাইম ভিউ
ছয়ফুল আলম সাইফুলঃ প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ পদে নিয়োগ পেয়েছেন মোঃ আবু জাফর রাজু। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাজুকে এ পদে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।
রাজু মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার আলালপুর গ্রামের সাবেক এমপি মরহুম আব্দুল জব্বারের পুত্র এবং কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলামের বড় ভাই।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওই আদেশে বলা হয়েছে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল অথবা তার সন্তুষ্টি সাপেক্ষে (যেটি আগে ঘটে) গ্রেড-৬ ভুক্ত ৩৫৫০০-৬৭০১০ টাকা বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ ধাপে ৬৭০১০ টাকা নির্ধারিত বেতনে প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলো।উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অনুবিভাগে দু’জন প্রটোকল অফিসার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
মোঃ আবু জাফর রাজু সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ ডিগ্রি অজন করেন।তিনি ২০১৮ সালে পবিত্র ওমরা হজ্জ পালন করেন। তার একমাত্র পুত্র সন্তান আহমেদ আদিয়ান।তার পিতা মরহুম আব্দুল জব্বার, মাতা মরহুমা আয়েশা জব্বার এবং মরহুম আব্দুল মজিদ ও মরহুমা সমিতা বানুর দৌহিত্র। তার পিতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য, সাবেক সংসদ সদস্য (সিলেট -১৩, ২য় সংসদ, ১৯৭৯) ভাষা সৈনিক ( ১৯৬২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রভাত ফেরি, প্লেকাড প্রদর্শন ও বিক্ষোভ করার কারনে গ্রেফতার এবং ৬ মাস কারারুদ্ধ ) মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সভাপতি, ’৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬ এর ছয়-দফা, ’৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন এবং ’৯০-এর স্বৈরাচার বিরুধী আন্দোলন সহ সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
তিনি ছিলেন কুলাউড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৪)।এছাড়া তিনির পিতা বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সভাপতি , মৌলভীবাজার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সহ-সভাপতি এবং ঘাতক দালাল নিমূল কমিটি কুলাউড়া থানার আহবায়ক ছিলেন।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আব্দুল জব্বারের ভূমিকা, কারারুদ্ধ ও নির্যাতনঃ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার অবিশ্বাস্য, হৃদয় বিদারক দুঃসংবাদ শুনে ১৭ আগস্ট কুলাউড়া শহরে তাঁর নেতৃত্বে প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ কারনে তাঁকে গ্রেফতার করে বঙ্গবন্ধুর প্রধান খুনি মেজর নুর অমানুসিক নির্যাতন করে এবং এক পর্যায়ে হত্যার জন্য নির্জন কক্ষে নিয়ে যায়। তৎকালীন সেনা অফিসার, পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূত প্রয়াত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জনাব আমিন আহমেদ চৌধুরী তাঁকে উদ্ধার করেন।
পুনরায় কুরবানী ঈদের রাতে গ্রেফতার, কারারুদ্ধ ও নির্যাতনঃ জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেন। সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিনের উপস্থিতিতে এক সভায় তাঁর বক্তব্য এতই সাহসিকতাপূর্ণ ছিল যে, উপস্থিত নেতৃবৃন্দ অনেকেই ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। তিনি জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে সামরিক শ্বাসন প্রত্যাহারসহ বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের আহবান জানান। তাঁর বক্তব্যের সময় সৈয়দা জোহরা তাজ উদ্দিন ও মিজানুর রহমান চৌধুরী অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন কিছুটা বিষন্ন ও কৌতুহল নিয়ে এর কিছু দিন পর কুরবানী ঈদের রাতে তাঁকে পুনরায় গ্রেপ্তার হন।জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তান ১৯৯২ সালের ২৮ আগস্ট শোকের মাসে মাত্র ৪৭ (১৯৪৫-১৯৯২) বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
আবু জাফর রাজু জানান আমার পরম সৌভাগ্য, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাজ করার এ বিরল সুযোগ পেয়েছি। তাছাড়া আমি সেই সৌভাগ্যবানদের একজন, আমার আকিকাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ” জয় খঁচিত ” স্বর্ণের আংটি উপহার দিয়েছিলেন। আমি মহান আল্লাহর দরবারে অসংখ্য, অগনিত শুকরিয়া জানাই এবং আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি আল্লাহ্ যেনো আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুগত থেকে আস্থা, সততা, বিশ্বস্ততার ও অভিপ্রায় অনুযায়ী কাজ করার তৌফিক দান করেন । এমন এক সময় আমি এ দায়িত্ব পেলাম যখন সমগ্র জাতি অধীর আগ্রহে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী পালনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আজকের এ শুভক্ষণে আমি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করি সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করি শ্রদ্ধা জানাই বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব সহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের প্রতি । শ্রদ্ধা জানাই আমার আব্বা সাবেক এমপি মরহুম আব্দুল জব্বার ও আম্মা মরহুমা আয়েশা জব্বারের প্রতি, তাদের ত্যাগ ও অবদান ছাড়া আমি এতদুর আসতে পারতামনা। আমি দেশবাসীর সহ সকলের কাছ দোয়া চাই, আল্লাহ্ যেনো আমাকে সততা, দক্ষতা ও নিষ্টার সাথে কাজ করার তৌফিক দান করেন।