ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
স্বাধিনতা মানে শুধুমাত্র নিজস্ব মানচিত্র অর্জন নয়, চাই বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ৬০ ফুট উঁচু বাঁশের সাঁকো!

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেটের সময় : ০৭:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জানুয়ারী ২০১৯
  • / ৮৭৪ টাইম ভিউ

খিলগাঁও এলাকার ত্রিমোহনী নদীর ঘাট। ওপারে নাসিরাবাদ ইউনিয়নের নয়াপাড়া। দুই এলাকার মাঝখানে নদী। বছর দুয়েক আগেও নদী পারাপারের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। পারাপারে কড়ির পাশাপাশি বাড়তি খরচ হতো সময়। তার অবসান হয়েছে অত্যুচ্চ এক সেতু বানিয়ে। অনেকের মতে, এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু বাঁশের সাঁকো।

রাজধানীর বুকে এমন এক সাঁকো অনেককেই কৌতূহলী করে। বিভিন্ন এলাকা থেকে কেউ কেউ যান সাঁকোটি দেখতে।

বিশালদর্শন এই সাঁকো নির্মাণ কিন্তু শখের বশে নয়। এখানে এই নদীর ওপর একটি সেতুর জন্য দিনের পর দিন জনপ্রতিনিধির পেছনে ঘুরেছেন এলাকাবাসী। কিন্তু কোনো ফল না পেয়ে শেষে নিজেরাই উদ্যোগী হন সাঁকো নির্মাণে।

সমস্যা হলো এই নদী দিয়ে চলে বড় বড় কার্গো জাহাজ। দেশে প্রচলিত গতানুতিক সাঁকো বানালে লোকচলাচল করা যাবে, কিন্তু নদীতে জাহাজ চলতে পারবে না। বাধ্য হয়ে নিজেদের অর্থায়নে নির্মাণ করেন এই ৬০ ফুট উঁচু বাঁশের সাঁকো।

সেটা ২০১৭ সালের শুরুর কথা। নয়াপাড়া ও ত্রিমোহনী এলাকার বাসিন্দারা চাঁদা তুলে সেতুটি নির্মাণ করেন। এতে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় মুরব্বি সাহাবুদ্দিন। নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় আড়াই লাখ টাকা জোগান দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ৩০০ ফুটের বেশি দীর্ঘ সাঁকোটির উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। নিচ দিয়ে চলে বড় কার্গো। এখন এই শুষ্ক মৌসুমে সেতুর ওপর থেকে নিচে পানির স্তরের ফারাক এমন যে বড় কোনো জাহাজ অনায়াসে চলতে পারবে।

ত্রিমোহনী ও নয়াপাড়ার সংযোগ সেতুটি এমন উঁচু করে বানানোর কারণ জানতে চাইলে স্থানীয়রা জানান, এর নিচ দিয়ে বালুবাহী বড় বড় জাহাজ নিয়মিত যাতায়াত করে। তাই সেতুটি উঁচু করে বানানো হয়েছে। দেশের আর কোথাও এমন উঁচু বাশের সাঁকো নেই বলে দাবি তাদের।

স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অনেক বছর ধরে এলাকার লোকজন নদী পারাপারের জন্য একটা সেতু চাইছে নেতাদের কাছে। তারাও আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কেউ কথা রাখেনি।’

সেতু না হওয়ায় কোনো কোনো নেতার প্রতি এলাকার মানুষের অবিশ্বাসের কথাও জানা যায়। এমনকি এখানে সেতু কিংবা সাঁকোর নাম করে কেউ কেউ সরকারি টাকা এনে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ মোহাম্মদ আলী নামের একজন মুরব্বির। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা অনেক নেতাদের জানাইছি। এমপিও অনেকবার বলছে বানাইয়া দিবে। ছোট ছোট নেতারা টাকা আইনা খায়া ফেলে। ব্রিজ হয় নাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভাইরা যারা আছে, সবাই উদ্যোগ নিয়া, এলাকার লোকজনের কাছ থেকে কমবেশি টাকা উঠাইয়া ব্রিজটা বানাইছি।’

বিশালাকার এই উঁচু বাঁশের সাঁকো দেখে অবাক হচ্ছেন এই এলাকায় প্রথমবার যাতায়াতকারী লোকজন। অনেকে দাঁড়িয়ে থেকে সাঁকুটির গায়ে চোখ বোলান। নগরে এত বড় বাঁশের সাঁকো, এত উঁচু! যারা নতুন তারা সাঁকো পার হতে হতে নিচের দিকে ঝুঁকে দেখেন। দুই পাশে দৃষ্টি মেলে দেন।

পথচারী কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হলে তারা জানান, এমন উঁচু সাঁকো কখনো দেখেননি তারা। কারও কারও মতে, এটি দেশের সবচেয়ে উঁচু বাঁশের সাঁকো। আবার কেউ বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বাঁশের সেতু বলে ঘোষণা দিয়ে বসেন।

পোস্ট শেয়ার করুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ৬০ ফুট উঁচু বাঁশের সাঁকো!

আপডেটের সময় : ০৭:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জানুয়ারী ২০১৯

খিলগাঁও এলাকার ত্রিমোহনী নদীর ঘাট। ওপারে নাসিরাবাদ ইউনিয়নের নয়াপাড়া। দুই এলাকার মাঝখানে নদী। বছর দুয়েক আগেও নদী পারাপারের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। পারাপারে কড়ির পাশাপাশি বাড়তি খরচ হতো সময়। তার অবসান হয়েছে অত্যুচ্চ এক সেতু বানিয়ে। অনেকের মতে, এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু বাঁশের সাঁকো।

রাজধানীর বুকে এমন এক সাঁকো অনেককেই কৌতূহলী করে। বিভিন্ন এলাকা থেকে কেউ কেউ যান সাঁকোটি দেখতে।

বিশালদর্শন এই সাঁকো নির্মাণ কিন্তু শখের বশে নয়। এখানে এই নদীর ওপর একটি সেতুর জন্য দিনের পর দিন জনপ্রতিনিধির পেছনে ঘুরেছেন এলাকাবাসী। কিন্তু কোনো ফল না পেয়ে শেষে নিজেরাই উদ্যোগী হন সাঁকো নির্মাণে।

সমস্যা হলো এই নদী দিয়ে চলে বড় বড় কার্গো জাহাজ। দেশে প্রচলিত গতানুতিক সাঁকো বানালে লোকচলাচল করা যাবে, কিন্তু নদীতে জাহাজ চলতে পারবে না। বাধ্য হয়ে নিজেদের অর্থায়নে নির্মাণ করেন এই ৬০ ফুট উঁচু বাঁশের সাঁকো।

সেটা ২০১৭ সালের শুরুর কথা। নয়াপাড়া ও ত্রিমোহনী এলাকার বাসিন্দারা চাঁদা তুলে সেতুটি নির্মাণ করেন। এতে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় মুরব্বি সাহাবুদ্দিন। নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় আড়াই লাখ টাকা জোগান দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ৩০০ ফুটের বেশি দীর্ঘ সাঁকোটির উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। নিচ দিয়ে চলে বড় কার্গো। এখন এই শুষ্ক মৌসুমে সেতুর ওপর থেকে নিচে পানির স্তরের ফারাক এমন যে বড় কোনো জাহাজ অনায়াসে চলতে পারবে।

ত্রিমোহনী ও নয়াপাড়ার সংযোগ সেতুটি এমন উঁচু করে বানানোর কারণ জানতে চাইলে স্থানীয়রা জানান, এর নিচ দিয়ে বালুবাহী বড় বড় জাহাজ নিয়মিত যাতায়াত করে। তাই সেতুটি উঁচু করে বানানো হয়েছে। দেশের আর কোথাও এমন উঁচু বাশের সাঁকো নেই বলে দাবি তাদের।

স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অনেক বছর ধরে এলাকার লোকজন নদী পারাপারের জন্য একটা সেতু চাইছে নেতাদের কাছে। তারাও আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু কেউ কথা রাখেনি।’

সেতু না হওয়ায় কোনো কোনো নেতার প্রতি এলাকার মানুষের অবিশ্বাসের কথাও জানা যায়। এমনকি এখানে সেতু কিংবা সাঁকোর নাম করে কেউ কেউ সরকারি টাকা এনে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ মোহাম্মদ আলী নামের একজন মুরব্বির। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা অনেক নেতাদের জানাইছি। এমপিও অনেকবার বলছে বানাইয়া দিবে। ছোট ছোট নেতারা টাকা আইনা খায়া ফেলে। ব্রিজ হয় নাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভাইরা যারা আছে, সবাই উদ্যোগ নিয়া, এলাকার লোকজনের কাছ থেকে কমবেশি টাকা উঠাইয়া ব্রিজটা বানাইছি।’

বিশালাকার এই উঁচু বাঁশের সাঁকো দেখে অবাক হচ্ছেন এই এলাকায় প্রথমবার যাতায়াতকারী লোকজন। অনেকে দাঁড়িয়ে থেকে সাঁকুটির গায়ে চোখ বোলান। নগরে এত বড় বাঁশের সাঁকো, এত উঁচু! যারা নতুন তারা সাঁকো পার হতে হতে নিচের দিকে ঝুঁকে দেখেন। দুই পাশে দৃষ্টি মেলে দেন।

পথচারী কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হলে তারা জানান, এমন উঁচু সাঁকো কখনো দেখেননি তারা। কারও কারও মতে, এটি দেশের সবচেয়ে উঁচু বাঁশের সাঁকো। আবার কেউ বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বাঁশের সেতু বলে ঘোষণা দিয়ে বসেন।