ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
স্বাধিনতা মানে শুধুমাত্র নিজস্ব মানচিত্র অর্জন নয়, চাই বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

লন্ডনে বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে : বহু হতাহত

অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেটের সময় : ০৯:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭
  • / ১২৩৬ টাইম ভিউ

লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড বলছে, পশ্চিম লন্ডনে লাটিমার রোডের যে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তাতে ‘বহু হতাহত’ হয়েছে।

শহরের নর্থ কেনসিংটনে অবস্থিত ‘গ্রেনফেল টাওয়ার’ নামের ওই আবাসিক ভবনটিতে ব্রিটেনের স্থানীয় সময় রাত সোয়া একটার দিকে আগুন লাগে।

প্রায় দুইশো’র মতো দমকলকর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ভবনে বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে।

লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স জানাচ্ছে, ভবন থেকে ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গ্রেনফেল টাওয়ারের সাত তলার বাসিন্দা পল মুনাকর কোনোরকমে ভবন থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন।

‘আমরা যখন সিড়ি দিয়ে নামছিলাম তখন দেখলাম দমকলকর্মীরা ওপরে উঠছে। তারা আগুনের মধ্যে ঢুকে যেভাবে পারছে মানুষকে বের করে আনার চেষ্টা করছে’- বিবিসিকে বলেন পল মুনাকর।

তিনি জানান, ভবনে যে আগুন লেগেছে সেটা কিন্তু তিনি ফায়ার অ্যালার্মের মাধ্যমে বুঝেননি। রাস্তায় থাকা মানুষেরা চিৎকার করে বলছিল ‘ঝাঁপ দিও না, ঝাঁপ দিও না’ তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে ভবনে আগুন লেগেছে।

‘আগুন থেকে বাঁচার জন্য কত মানুষ নিচে ঝাঁপ দিয়েছে আমি জানি না । কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এটাই যে ভবনের ফায়ার অ্যালার্ম বাজেনি’, বলছিলেন মি. মুনাকর।

অন্যদিকে জর্ডি মার্টিন নামে আরেকজন জানান আগুন দেখার পর প্রথমে তিনি দৌড়ে ভবনটির কাছে গিয়ে বাসিন্দাদের বেরিয়ে আসতে বলেন।

‘আমি একজনকে পড়ে যেতে দেখেছি, শিশু কোলে এক নারীকে দেখেছি জানালার ধারে চিৎকার করছিল….।’

‘আমি সবাইকে বাইরে বের হতে বললেও ভবনে আটকে থাকা লোকজন চিৎকার করে বলছিলেন তাদের বাইরে বের হবার উপায় নেই। কারণ করিডোরের ভেতরটা পুরোটা ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল সে সময়।’

অন্যদিকে বিবিসির সংবাদদাতা অ্যান্ডি মুর বলেন, ‘ভবন থেকে ধ্বংসাবশেষ পড়তে দেখছি। আমরা বড় বিস্ফোরণের শব্দও শুনেছি। কাঁচ ভাঙার শব্দও পেয়েছি।’

জর্জ ক্লার্ক নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসি রেডিও ফাইভকে জানিয়েছেন, ‘আমার সারা গায়ে ছাই লেগে গেছে। আগুনটা কত ভয়াবহ হতে পারে চিন্তা করুন।’

‘আমি প্রায় ১০০ মিটার দূরে এবং পুরোপুরি ছাইয়ে ঢেকে গেছি।’

‘এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আমি দেখেছি ভবনের উপরের দিকে কেউ টর্চ জ্বালাচ্ছিল। তারা অবশ্যই বের হতে পারেনি। হয়তো তারা বেঁচে নেই,’ বলছিলেন মি. ক্লার্ক।

বিবিসির সাইমন লেডারমেন জানান, ‘ভবনটি যেভাবে জ্বলছে, তা কয়েক মাইল দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।’

ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।

লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার ডেন ডেলি বলছেন, ‘পরিস্থিতি ভয়াবহ। এমন জটিল পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা।’

‘অনেক বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এটি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি’ – বলেন তিনি।

আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়া কয়েকজনকে চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের জরুরি বিভাগের কর্মকর্তাদেরও ভবনটিতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এটাকে ‘অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছেন।

আগুনের এই ঘটনার পর লন্ডন পাতাল রেলের হ্যামারস্মিথ এবং সিটি অ্যান্ড সার্কেল লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তারা ছাদের ওপর থেকে আলো নাড়ানো দেখেছেন। ভবনে থাকা লোকজন ছাদের ওপর থেকে টর্চের আলো দিয়ে সাহায্যও চেয়েছেন। আর্তনাদও তারা শুনতে পেয়েছেন।

ভবনটিতে আগুন লাগার তিন ঘণ্টা পর পুলিশ বলছে, ভবনের ভেতর থেকে তখনো লোকজনকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি

পোস্ট শেয়ার করুন

লন্ডনে বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে : বহু হতাহত

আপডেটের সময় : ০৯:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭

লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড বলছে, পশ্চিম লন্ডনে লাটিমার রোডের যে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তাতে ‘বহু হতাহত’ হয়েছে।

শহরের নর্থ কেনসিংটনে অবস্থিত ‘গ্রেনফেল টাওয়ার’ নামের ওই আবাসিক ভবনটিতে ব্রিটেনের স্থানীয় সময় রাত সোয়া একটার দিকে আগুন লাগে।

প্রায় দুইশো’র মতো দমকলকর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ভবনে বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে।

লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স জানাচ্ছে, ভবন থেকে ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গ্রেনফেল টাওয়ারের সাত তলার বাসিন্দা পল মুনাকর কোনোরকমে ভবন থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন।

‘আমরা যখন সিড়ি দিয়ে নামছিলাম তখন দেখলাম দমকলকর্মীরা ওপরে উঠছে। তারা আগুনের মধ্যে ঢুকে যেভাবে পারছে মানুষকে বের করে আনার চেষ্টা করছে’- বিবিসিকে বলেন পল মুনাকর।

তিনি জানান, ভবনে যে আগুন লেগেছে সেটা কিন্তু তিনি ফায়ার অ্যালার্মের মাধ্যমে বুঝেননি। রাস্তায় থাকা মানুষেরা চিৎকার করে বলছিল ‘ঝাঁপ দিও না, ঝাঁপ দিও না’ তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে ভবনে আগুন লেগেছে।

‘আগুন থেকে বাঁচার জন্য কত মানুষ নিচে ঝাঁপ দিয়েছে আমি জানি না । কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এটাই যে ভবনের ফায়ার অ্যালার্ম বাজেনি’, বলছিলেন মি. মুনাকর।

অন্যদিকে জর্ডি মার্টিন নামে আরেকজন জানান আগুন দেখার পর প্রথমে তিনি দৌড়ে ভবনটির কাছে গিয়ে বাসিন্দাদের বেরিয়ে আসতে বলেন।

‘আমি একজনকে পড়ে যেতে দেখেছি, শিশু কোলে এক নারীকে দেখেছি জানালার ধারে চিৎকার করছিল….।’

‘আমি সবাইকে বাইরে বের হতে বললেও ভবনে আটকে থাকা লোকজন চিৎকার করে বলছিলেন তাদের বাইরে বের হবার উপায় নেই। কারণ করিডোরের ভেতরটা পুরোটা ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল সে সময়।’

অন্যদিকে বিবিসির সংবাদদাতা অ্যান্ডি মুর বলেন, ‘ভবন থেকে ধ্বংসাবশেষ পড়তে দেখছি। আমরা বড় বিস্ফোরণের শব্দও শুনেছি। কাঁচ ভাঙার শব্দও পেয়েছি।’

জর্জ ক্লার্ক নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসি রেডিও ফাইভকে জানিয়েছেন, ‘আমার সারা গায়ে ছাই লেগে গেছে। আগুনটা কত ভয়াবহ হতে পারে চিন্তা করুন।’

‘আমি প্রায় ১০০ মিটার দূরে এবং পুরোপুরি ছাইয়ে ঢেকে গেছি।’

‘এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আমি দেখেছি ভবনের উপরের দিকে কেউ টর্চ জ্বালাচ্ছিল। তারা অবশ্যই বের হতে পারেনি। হয়তো তারা বেঁচে নেই,’ বলছিলেন মি. ক্লার্ক।

বিবিসির সাইমন লেডারমেন জানান, ‘ভবনটি যেভাবে জ্বলছে, তা কয়েক মাইল দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।’

ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।

লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার ডেন ডেলি বলছেন, ‘পরিস্থিতি ভয়াবহ। এমন জটিল পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা।’

‘অনেক বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এটি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি’ – বলেন তিনি।

আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়া কয়েকজনকে চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের জরুরি বিভাগের কর্মকর্তাদেরও ভবনটিতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এটাকে ‘অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছেন।

আগুনের এই ঘটনার পর লন্ডন পাতাল রেলের হ্যামারস্মিথ এবং সিটি অ্যান্ড সার্কেল লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তারা ছাদের ওপর থেকে আলো নাড়ানো দেখেছেন। ভবনে থাকা লোকজন ছাদের ওপর থেকে টর্চের আলো দিয়ে সাহায্যও চেয়েছেন। আর্তনাদও তারা শুনতে পেয়েছেন।

ভবনটিতে আগুন লাগার তিন ঘণ্টা পর পুলিশ বলছে, ভবনের ভেতর থেকে তখনো লোকজনকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি