ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
স্বাধিনতা মানে শুধুমাত্র নিজস্ব মানচিত্র অর্জন নয়, চাই বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

দেশজুড়ে আলোচনায় ‘ফোনালাপ’

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ৩১৮ টাইম ভিউ

ফুটপাত থেকে মন্ত্রীপাড়ায়। আলোচনায় টেলিফোন। মানে ফোনালাপ। এ আলাপ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে। ফোনালাপের রেকর্ড ফাঁস হয়নি এখনো। কবে ফোনালাপ হয়েছে তার দিনক্ষণও প্রকাশিত হয়নি। তবে নানা রঙে রঙিন হয়ে ফোনালাপের খবর ডালপালা ছড়াচ্ছে দুর্বার গতিতে। ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে অপেক্ষায় পুরো দেশ। ফোনালাপ নিয়ে ইতোমধ্যে ঘরে বাইরে তোপের মুখে পড়েছেন মির্জা ফখরুল।

রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সরকার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রধান বা শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে ফোনালাপ, টেবিল সংলাপ নতুন কিছু নয়। বড় দুই দল আওয়ামী লীগ-বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালেই সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ও মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার মধ্যে একই মঞ্চে সংলাপ হয়েছে। তা সরাসরি সম্প্রচার করেছে টেলিভিশন। এরপর সংলাপ হয়েছে

সৈয়দ আশরাফ ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে। যদিও কোনো সংলাপই সফলতার ছিটেফোঁটাও দেখতে পায়নি। বরং সংলাপে দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের সেতু ভেঙে দিয়েছে। দলের মতো দূরত্ব বৃদ্ধি করেছে নেতায় নেতায়।

এখন থেকে প্রায় ৭ বছর আগে দেশের বর্তমান ও সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার ফোনালাপ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় হয়েছিল। ফাঁসও হয়েছে ফোনালাপের রেকর্ড। তারের দুই মেরুতে দুজনের কথা জনসম্মুখে চলে আসে। প্রায় মাসব্যাপী সেই আলোচনা ছিল গণমাধ্যমের খোরাক। এ নিয়ে সরকার দলীয়দের দোষারোপ করেছে বিএনপি। ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনাকে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ এবং ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে বর্ণনা করেছেন।

সেবারের (২০১৩ সালের অক্টোবর) এবং এবারের আলোচ্য বিষয় ভিন্ন। দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার ‘ইস্যু’ ছিল হরতাল বহাল আর প্রত্যাহার নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে। টেলিসংলাপে তখনকার টানা হরতাল প্রত্যাহার করে সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা। তবে তাতে রাজি হননি খালেদা জিয়া। তাদের ৩৭ মিনিটের ওই আলাপের ইস্যু ছিল মূলত হরতাল প্রসঙ্গ।

কিন্তু আলোচনার অধিকাংশ সময়ই ১৫ আগস্ট কেন জন্মদিন পালন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, লাল টেলিফোন রিসিভ না করাসহ (ওই ফোনের লাইন কাটা ছিল বলে খালেদা জিয়ার দাবি) বিভিন্ন ইস্যু উঠে আসে।

একপর্যায়ে সংলাপ বাকবিতণ্ডায় গড়ায়। ব্যর্থ হয় টেলিসংলাপ। কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত এই কথোপকথনের রেকর্ড খুব দ্রুত ইন্টারনেট, ফেসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

বিএনপির অভিযোগ ছিল- বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে যে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটাকে অঙ্কুরেই নষ্ট করার জন্য টেলিফোন আলাপ ফাঁস করা হয়েছে। অবশেষে ব্যর্থ হয় টেলিসংলাপের উদ্দেশ্য।

তবে এখনকার দুই মহাসচিবের আলোচনার বিষয় এখনো অস্পষ্ট। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, তাদের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

এদিকে ফোনালাপের বিষয়টি এড়িয়ে চলছেন বিএনপি মহাসচিব। কী আলাপ হয়েছে তাদের মধ্যে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন গণমাধ্যমের কাছে। বলেছেন, প্রশ্নটা উনাকেই (ওবায়দুল কাদের) করুন।’

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, সেটার রেকর্ড আছে। আমি আর নিচে যেতে চাই না।

এদিকে শাসক দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ফোনালাপে যুক্ত হওয়ার কারণে ঘরে-বাইরে তোপের মুখে পড়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। দলের স্থায়ী কমিটির সভাতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা গণফোরামের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি সমাবেশের মাধ্যমেই বিএনপির মহাসচিবের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, কেন ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করেছেন। ফোন করে কী সমাধান পাবেন?

বরং ফোন করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সাধারণ মানুষের মধ্যে খাটো করা হয়েছে। তিনি যে ‘আপসহীন’ তাতে আঘাত করা হয়েছে। মান্নার এই প্রশ্ন এখন বিএনপি ও তার মিত্র রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মুখে মুখে।

চাউর হয়েছে- ফোনালাপই মির্জা ফখরুলের জন্য কাল হতে পারে।

পোস্ট শেয়ার করুন

দেশজুড়ে আলোচনায় ‘ফোনালাপ’

আপডেটের সময় : ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০

ফুটপাত থেকে মন্ত্রীপাড়ায়। আলোচনায় টেলিফোন। মানে ফোনালাপ। এ আলাপ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে। ফোনালাপের রেকর্ড ফাঁস হয়নি এখনো। কবে ফোনালাপ হয়েছে তার দিনক্ষণও প্রকাশিত হয়নি। তবে নানা রঙে রঙিন হয়ে ফোনালাপের খবর ডালপালা ছড়াচ্ছে দুর্বার গতিতে। ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে অপেক্ষায় পুরো দেশ। ফোনালাপ নিয়ে ইতোমধ্যে ঘরে বাইরে তোপের মুখে পড়েছেন মির্জা ফখরুল।

রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সরকার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রধান বা শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে ফোনালাপ, টেবিল সংলাপ নতুন কিছু নয়। বড় দুই দল আওয়ামী লীগ-বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালেই সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ও মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার মধ্যে একই মঞ্চে সংলাপ হয়েছে। তা সরাসরি সম্প্রচার করেছে টেলিভিশন। এরপর সংলাপ হয়েছে

সৈয়দ আশরাফ ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে। যদিও কোনো সংলাপই সফলতার ছিটেফোঁটাও দেখতে পায়নি। বরং সংলাপে দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের সেতু ভেঙে দিয়েছে। দলের মতো দূরত্ব বৃদ্ধি করেছে নেতায় নেতায়।

এখন থেকে প্রায় ৭ বছর আগে দেশের বর্তমান ও সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার ফোনালাপ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় হয়েছিল। ফাঁসও হয়েছে ফোনালাপের রেকর্ড। তারের দুই মেরুতে দুজনের কথা জনসম্মুখে চলে আসে। প্রায় মাসব্যাপী সেই আলোচনা ছিল গণমাধ্যমের খোরাক। এ নিয়ে সরকার দলীয়দের দোষারোপ করেছে বিএনপি। ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনাকে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ এবং ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে বর্ণনা করেছেন।

সেবারের (২০১৩ সালের অক্টোবর) এবং এবারের আলোচ্য বিষয় ভিন্ন। দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার ‘ইস্যু’ ছিল হরতাল বহাল আর প্রত্যাহার নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে। টেলিসংলাপে তখনকার টানা হরতাল প্রত্যাহার করে সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা। তবে তাতে রাজি হননি খালেদা জিয়া। তাদের ৩৭ মিনিটের ওই আলাপের ইস্যু ছিল মূলত হরতাল প্রসঙ্গ।

কিন্তু আলোচনার অধিকাংশ সময়ই ১৫ আগস্ট কেন জন্মদিন পালন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, লাল টেলিফোন রিসিভ না করাসহ (ওই ফোনের লাইন কাটা ছিল বলে খালেদা জিয়ার দাবি) বিভিন্ন ইস্যু উঠে আসে।

একপর্যায়ে সংলাপ বাকবিতণ্ডায় গড়ায়। ব্যর্থ হয় টেলিসংলাপ। কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত এই কথোপকথনের রেকর্ড খুব দ্রুত ইন্টারনেট, ফেসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

বিএনপির অভিযোগ ছিল- বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে যে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটাকে অঙ্কুরেই নষ্ট করার জন্য টেলিফোন আলাপ ফাঁস করা হয়েছে। অবশেষে ব্যর্থ হয় টেলিসংলাপের উদ্দেশ্য।

তবে এখনকার দুই মহাসচিবের আলোচনার বিষয় এখনো অস্পষ্ট। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, তাদের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

এদিকে ফোনালাপের বিষয়টি এড়িয়ে চলছেন বিএনপি মহাসচিব। কী আলাপ হয়েছে তাদের মধ্যে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন গণমাধ্যমের কাছে। বলেছেন, প্রশ্নটা উনাকেই (ওবায়দুল কাদের) করুন।’

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, সেটার রেকর্ড আছে। আমি আর নিচে যেতে চাই না।

এদিকে শাসক দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ফোনালাপে যুক্ত হওয়ার কারণে ঘরে-বাইরে তোপের মুখে পড়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। দলের স্থায়ী কমিটির সভাতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা গণফোরামের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি সমাবেশের মাধ্যমেই বিএনপির মহাসচিবের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, কেন ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করেছেন। ফোন করে কী সমাধান পাবেন?

বরং ফোন করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সাধারণ মানুষের মধ্যে খাটো করা হয়েছে। তিনি যে ‘আপসহীন’ তাতে আঘাত করা হয়েছে। মান্নার এই প্রশ্ন এখন বিএনপি ও তার মিত্র রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মুখে মুখে।

চাউর হয়েছে- ফোনালাপই মির্জা ফখরুলের জন্য কাল হতে পারে।