ঢাকা , রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বর্তমান পরিস্থিতির উপর দেশবাসীকে যে বার্তা দিলেন শায়খ নূরে আলম হামিদী স্বাধিনতা মানে শুধুমাত্র নিজস্ব মানচিত্র অর্জন নয়, চাই বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা

প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদকের পা ভেঙে দিলেন মেয়র

দেশদিগন্ত নিউজ ডেক্স
  • আপডেটের সময় : ০১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল ২০১৯
  • / ৭৪০ টাইম ভিউ

দেশদিগন্ত নিউজ ডেক্সঃ  কক্সবাজারের মহেশখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহকে মারধর করে পা ভেঙে দিয়েছেন পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ মিয়া। রড ও হাতুড়ির আঘাতে সাংবাদিক ছালামত উল্লাহর পুরো শরীর থেঁতলে গেছে।

আহত সাংবাদিককে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নৃশংস এ হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর মেয়র মকসুদ মিয়াকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় অভিযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আহতের পরিবার।

চমেক হাসপাতালে নেয়ার সময় আহত সাংবাদিক ছালামত উল্লাহ বলেন, ‘পৌরসভার কাউন্সিলর হিসেবে মিটিংয়ে বিভিন্ন সময় নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করতেন তিনি। এ নিয়ে পৌর মেয়রের সঙ্গে তার সম্পর্কের দূরত্বের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সময় পৌর মেয়র ও তার অনুগত লোকজন আমাকে ভয় দেখাতেন। বলতেন ভাগভাটোয়ারা করে আপসে খাও। কিন্তু আমি তাদের অনিয়ম ও অন্যায়ের কাছে আমার সততাকে বিসর্জন দেইনি বলে আজ আমার এ পরিণতি।’

ছালামত উল্লাহ জানান, মঙ্গলবার রাতে প্রেস ক্লাবে বসে কাজ করছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহেশখালী পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ মিয়া তার সহযোগীদের নিয়ে হঠাৎ অফিসে উপস্থিত হন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পৌর মেয়র তাকে টানা-হিঁচড়ে তার ব্যবহৃত গাড়িতে তোলেন।

এ সময় চিৎকার করলেও পৌর মেয়রের ভয়ে তার সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনি। গাড়িতে তোলার পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। এরপর পৌরসভার অন্তত চারটি স্পটে নিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়। ওইসব স্পটে আগে থেকেই মকসুদ মিয়ার লোকজন উপস্থিত ছিল।

তিনি জানান, হামলাকারীরা রড, হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক আঘাত করেছে। তিনি বার বার জীবন ভিক্ষা চাইলেও তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে। পরে অর্ধমৃত অবস্থায় তাকে দীঘির পূর্ব পাড়ে ফেলে চলে যায় মেয়র ও তার সহযোগীরা। সেখান থেকে লোকজন তাকে উদ্ধার করে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পৌর মেয়র মকসুদ মিয়া ও কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহর মধ্যে দূরত্ব চলে আসছিল। সম্প্রতি ছালামত উল্লাহ তার ফেসবুক ওয়ালে পৌর মেয়র মকসুদ মিয়ার নাম না দিয়েও তাকে ইঙ্গিত করে বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মকসুদ মিয়া ও তার সহযোগীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

ইতোমধ্যে নির্যাতিত সাংবাদিকের ছবি ও হাসপাতালের বেডে তার কান্নকাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষ এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে।

অন্যদিকে তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মহেশখালী পৌর মেয়র মকসুদ মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার মহেশখালী ছিলাম না, আজ (বুধবার) এসেছি। তার স্বভাব চরিত্র ভালো নয়। নানা অপকর্ম করে বেড়াত শুনেছি। হয়তো কেউ আক্রমণ করে থাকতে পারে। শুধু সে নয়, কোনো কাউন্সিলরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ নয়।’

এ ঘটনায় মহেশখালী থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, মঙ্গলবার রাতে প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক ছালামত আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। মধ্যরাতে তাকে স্পিডবোটে কক্সবাজার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। কীভাবে আক্রান্ত হয়েছে জানতে পারিনি। এখনও অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পোস্ট শেয়ার করুন

প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদকের পা ভেঙে দিলেন মেয়র

আপডেটের সময় : ০১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল ২০১৯

দেশদিগন্ত নিউজ ডেক্সঃ  কক্সবাজারের মহেশখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহকে মারধর করে পা ভেঙে দিয়েছেন পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ মিয়া। রড ও হাতুড়ির আঘাতে সাংবাদিক ছালামত উল্লাহর পুরো শরীর থেঁতলে গেছে।

আহত সাংবাদিককে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নৃশংস এ হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর মেয়র মকসুদ মিয়াকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় অভিযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আহতের পরিবার।

চমেক হাসপাতালে নেয়ার সময় আহত সাংবাদিক ছালামত উল্লাহ বলেন, ‘পৌরসভার কাউন্সিলর হিসেবে মিটিংয়ে বিভিন্ন সময় নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করতেন তিনি। এ নিয়ে পৌর মেয়রের সঙ্গে তার সম্পর্কের দূরত্বের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সময় পৌর মেয়র ও তার অনুগত লোকজন আমাকে ভয় দেখাতেন। বলতেন ভাগভাটোয়ারা করে আপসে খাও। কিন্তু আমি তাদের অনিয়ম ও অন্যায়ের কাছে আমার সততাকে বিসর্জন দেইনি বলে আজ আমার এ পরিণতি।’

ছালামত উল্লাহ জানান, মঙ্গলবার রাতে প্রেস ক্লাবে বসে কাজ করছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহেশখালী পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ মিয়া তার সহযোগীদের নিয়ে হঠাৎ অফিসে উপস্থিত হন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পৌর মেয়র তাকে টানা-হিঁচড়ে তার ব্যবহৃত গাড়িতে তোলেন।

এ সময় চিৎকার করলেও পৌর মেয়রের ভয়ে তার সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনি। গাড়িতে তোলার পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। এরপর পৌরসভার অন্তত চারটি স্পটে নিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়। ওইসব স্পটে আগে থেকেই মকসুদ মিয়ার লোকজন উপস্থিত ছিল।

তিনি জানান, হামলাকারীরা রড, হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক আঘাত করেছে। তিনি বার বার জীবন ভিক্ষা চাইলেও তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে। পরে অর্ধমৃত অবস্থায় তাকে দীঘির পূর্ব পাড়ে ফেলে চলে যায় মেয়র ও তার সহযোগীরা। সেখান থেকে লোকজন তাকে উদ্ধার করে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পৌর মেয়র মকসুদ মিয়া ও কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহর মধ্যে দূরত্ব চলে আসছিল। সম্প্রতি ছালামত উল্লাহ তার ফেসবুক ওয়ালে পৌর মেয়র মকসুদ মিয়ার নাম না দিয়েও তাকে ইঙ্গিত করে বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মকসুদ মিয়া ও তার সহযোগীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

ইতোমধ্যে নির্যাতিত সাংবাদিকের ছবি ও হাসপাতালের বেডে তার কান্নকাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষ এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে।

অন্যদিকে তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মহেশখালী পৌর মেয়র মকসুদ মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার মহেশখালী ছিলাম না, আজ (বুধবার) এসেছি। তার স্বভাব চরিত্র ভালো নয়। নানা অপকর্ম করে বেড়াত শুনেছি। হয়তো কেউ আক্রমণ করে থাকতে পারে। শুধু সে নয়, কোনো কাউন্সিলরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ নয়।’

এ ঘটনায় মহেশখালী থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, মঙ্গলবার রাতে প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক ছালামত আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। মধ্যরাতে তাকে স্পিডবোটে কক্সবাজার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। কীভাবে আক্রান্ত হয়েছে জানতে পারিনি। এখনও অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।