ঐতিহাসিক শততম টেস্ট জয়
- আপডেটের সময় : ০৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০১৭
- / ১৮৭৭ টাইম ভিউ
ঐতিহাসিক শততম টেস্টে অবিস্মরনীয় এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে শ্রীলংকাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। ফলে ২ ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করলো মুশফিকুরবাহিনী। ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনের প্রথম সেশনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩১৯ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা। ফলে বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ১৯১ রানের। এই টার্গেট বাংলাদেশ স্পর্শ করেছে ৬ উইকেট হারিয়ে। বাংলাদেশের পক্ষে তামিম ইকবাল ৮২, সাব্বির রহমান ৪১, অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ২২ ও সাকিব আল হাসান ১৫ রান করেন। প্রথম ইনিংসে শ্রীলংকা ৩৩৮ রান করেছিলো। বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিলো ৪৬৭ রান।
শততম এই ম্যাচ জয়ে যারা বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাবিক আল হাসান। ব্যাটে বলে তিনি বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ২ ইনিংসে তিনি রান করেছেন ১১৬ ও ১৫= ১৩১। উইকেট নিয়েছেন (২+৪) ৬টি। আজ রোববার কলম্বোর পি সারা ওভালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের শততম টেস্টে ঐতিহাসিক এই জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। অবশ্য এই সোনালী জয়ে সাকিবের সঙ্গে দ্যুতি ছড়িয়েছেন তামিম ইকবালও। অসম সাহসী সহযোদ্ধা হিসেবে রয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাব্বির রহমান কিংবা মোস্তাফিজুর রহমান, মেহদি হাসান মিরাজের কথাও লিখতেই হবে।
এতদিন লঙ্কানদের বিরুদ্ধে টেস্ট মানেই হতাশা, ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। দুটি ড্র ছিল সান্ত¡নার। তবে ওভালে অতীত ব্যর্থতা ছুড়ে ফেলে নতুন ইতিহাসই গড়ল টাইগাররা। শততম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আসল বাংলাদেশের প্রথম কাঙ্খিত জয়। সেই সঙ্গে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ড্রও করল মুশফিক শিবির। দেশের বাইরে ভারতীয় উপহাদেশে বাংলাদেশের এটি প্রথম টেস্ট জয়।
প্রথম ইনিংসে ১৫৯ বল মোকাবেলা করে সাকিব খেলেছেন ১১৬ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস। এতে ছিল ১০টি বাউন্ডারির মার। ওই ইনিংসে তিনি ৩৩ ওভার বল করে ৮০ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। ৪টি ছিল ম্যাডেন ওভার আর ইকনোমি রেট ছিল ২.৪২। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৩৬.২ ওভার বল করেছেন; এতে ছিল ৯টি ম্যাডেন ওভার। ৭৪ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছে ৪টি। আর ইকনোমি রেট ছিল ২.০৩। অবশ্য এই ইনিংসে ৪৩ বলে তিনি করেছেন মাত্র ১৫ রান।
এদিকে তৃতীয় উইকেট জুটিতে বীরের মতোই ব্যাটিং করেছেন তামিম ইকবাল। সাব্বির রহমানকে সঙ্গে নিয়ে দলকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যান তিনি। এই ম্যাচে তিনি তুলে নিয়েছেন ঐতিহাসিক হাফসেঞ্চুরি। তার ১২৫ বলে ৮২ রানের সফরে ছিল ৭টি ৪ ও ১টি ছক্কা। এটি তার নিজের ক্যারিয়ারের ২২তম ফিফটি। দলের কঠিন সময়ে সাধ্যমতো লড়াই করে গেছেন এই ওপেনার। তামিমের সবশেষ ৩ ইনিংস ছিল এমন-১৯, ৫৭, ৪৯।
এর আগে প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩৮ রান। ১৯১ রানের লক্ষ্যমাত্রা মাথায় নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুতে দেখেশুনে খেললেও ক্রমেই উড়িয়ে মারা শুরু করেন তামিম-সৌম্য জুটি। সেটার পরিণাম যে কতটা ভয়াবহ হলো টের পেয়েছেন সৌম্য। রীতিমত বাজে শটে আউট হয়েছেন তিনি। আর পিচে নেমে হতাশ করলেন ইমরুল। ফিরলেন খালি হাতেই।
তারও আগে ৩১৯ রানের মাথায় লঙ্কান লেজ কাটল টাইগার বোলাররা এর ফলে শততম টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে ১৯১ রান। ২৩৮ রানের মাথায় অষ্টম উইকেটের পতন হয় শ্রীলঙ্কার। এরপর নবম উইকেটে যা করছে লঙ্কানরা সেটা মোটেই স্বস্তিদায়ক ছিল না। দুজন মিলে স্কোরবোর্ড ৮০ রান যোগ করে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের তোপের মুখে পড়ে লঙ্কানরা। চতুর্থ দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেটে ২৬৮ রান। লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ১২৬ রানের ইনিংস খেলেন দিমুথ করুনারাতেœ। দুজন মিলে স্কোরবোর্ড ৮০ রান যোগ করে। সাকিবের ১১৬, মোসাদ্দেকের ৭৫ আর মুশফিকের ৫২ রানের সুবাদে লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪৬৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কান হয়ে বল হাতে ৪টি করে উইকেট নেন হেরাথ এবং সানদাকান।
প্রথম ইনিংসে দিনেশ চান্দিমালের ১৩৮ রানে ভর করে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ করে ৩৩৮ রান। চান্দিমাল ছাড়াও শেষ দিকে লাকমালের ক্যারিয়ার সেরা ৩৫ রান লঙ্কানদের লড়াকু পুঁজি গড়তে অবদান রাখে। গল টেস্টে রঙ্গনা হেরাথের বোলিং তোপে বাংলাদেশকে ২৫৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারায় শীলঙ্কা। সে ম্যাচে হেরাথ একাই ৬টি উইকেট শিকার করেছেন।