ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত এক অসুস্থ প্রজন্ম কে সাথি করে এগুচ্ছি আমরা

মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ব্রিটিশ নাগরিক যুবককে হত্যার অভিযোগ

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্ক:
  • আপডেটের সময় : ০৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৯
  • / ৭৪১ টাইম ভিউ

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্ক: মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক জালাল উদ্দিন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের শ্রীমঙ্গল সড়কস্থ উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। নিহত জালালের শরিরের ভিবিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এ ঘটনার পর নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে খুজে পাওয়া যায়নি। চিকিৎসা নিতে আসা ২২ জন মাদকাসক্ত রাতে দরজা ভেঙ্গে ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায় হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের তফতিবাগ এলাকার মৃত মোঃ গিয়াস উদ্দিনের পুত্র জালাল উদ্দিন ৭ থেকে ৮ মাস পূর্বে দেশে আসেন। মাদকাসক্ত থাকায় তাকে উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে ২ সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ডিসেম্বর বাড়ি নেয়া হয়। পরে আবার ২৯ ডিসেম্বর ভর্তি করা হয় ওই নিরাময় কেন্দ্রে। নিহতের মা রুকসানা আক্তার জানান, রোববার ৬ জনিুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফোনে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে থেকে জানানো হয়, জালাল অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাঁকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ খবরে তাঁরা দ্রুত সিলেট যান এবং হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করে জালালকে পাননি। পরে মৌলভীবাজার এসে উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর তাঁর মৃতদেহ দেখতে পান। এ সময় নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে তাঁরা খুঁজে পাননি তারা।
নিহত জালাল দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। রাব্বি নামের পাঁচ বছর বয়সী তাঁর একটি ছেলে আছে। তাঁর স্ত্রী-সন্তান দেশে থাকতেন। পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই হত্যার ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খবর পেয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে প্রকৃত ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁদের অনেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা ধরেননি। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক।
২৫০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আহমেদ ফয়ছল জামান জানান, ময়না তদন্তে প্রাথমিক ভাবে নিহত জালালের শরিরে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে। পূর্ণঙ্গ রিপোর্ট আসলে বিস্থারিত জানা যাবে।
উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে পালিয়ে আসা রিপন নামের একজন জানান, জালালকে হাত পা বেঁধে মারধর করা হয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। রিপন আরো জানায় সে নিহত জালাল মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ভেতর এক সাথে থাকতো। জালাল তার মাকে দেখার জন্য আকুতি জানালে মাদক নিরাময় কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে হাত পা বেঁধে শুরু হয় নির্যাতন। রিপন আরো জানায় চিকিৎসা নিতে আসা ২৫ জনের মধ্যে ২২ জন রাতে দরজা ভেঙ্গে ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৩ জন মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় তারা বেরিয়ে যেতে পারে নাই।
নিহত জালালের মামা মোঃ এমদাদুল হক জানান, মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে জালালের মৃত্যুনিয়ে একেক বার একেক ধরনের কথা বলা হয়। তারা আমার ভাগ্নাকে হাত পা বেঁধে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ স্বাস্তির দাবী করেন।

পোস্ট শেয়ার করুন

মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ব্রিটিশ নাগরিক যুবককে হত্যার অভিযোগ

আপডেটের সময় : ০৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৯

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্ক: মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক জালাল উদ্দিন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের শ্রীমঙ্গল সড়কস্থ উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। নিহত জালালের শরিরের ভিবিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এ ঘটনার পর নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে খুজে পাওয়া যায়নি। চিকিৎসা নিতে আসা ২২ জন মাদকাসক্ত রাতে দরজা ভেঙ্গে ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায় হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের তফতিবাগ এলাকার মৃত মোঃ গিয়াস উদ্দিনের পুত্র জালাল উদ্দিন ৭ থেকে ৮ মাস পূর্বে দেশে আসেন। মাদকাসক্ত থাকায় তাকে উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে ২ সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ডিসেম্বর বাড়ি নেয়া হয়। পরে আবার ২৯ ডিসেম্বর ভর্তি করা হয় ওই নিরাময় কেন্দ্রে। নিহতের মা রুকসানা আক্তার জানান, রোববার ৬ জনিুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফোনে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে থেকে জানানো হয়, জালাল অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাঁকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ খবরে তাঁরা দ্রুত সিলেট যান এবং হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করে জালালকে পাননি। পরে মৌলভীবাজার এসে উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর তাঁর মৃতদেহ দেখতে পান। এ সময় নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে তাঁরা খুঁজে পাননি তারা।
নিহত জালাল দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। রাব্বি নামের পাঁচ বছর বয়সী তাঁর একটি ছেলে আছে। তাঁর স্ত্রী-সন্তান দেশে থাকতেন। পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই হত্যার ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খবর পেয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে প্রকৃত ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁদের অনেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা ধরেননি। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক।
২৫০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আহমেদ ফয়ছল জামান জানান, ময়না তদন্তে প্রাথমিক ভাবে নিহত জালালের শরিরে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে। পূর্ণঙ্গ রিপোর্ট আসলে বিস্থারিত জানা যাবে।
উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে পালিয়ে আসা রিপন নামের একজন জানান, জালালকে হাত পা বেঁধে মারধর করা হয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। রিপন আরো জানায় সে নিহত জালাল মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ভেতর এক সাথে থাকতো। জালাল তার মাকে দেখার জন্য আকুতি জানালে মাদক নিরাময় কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে হাত পা বেঁধে শুরু হয় নির্যাতন। রিপন আরো জানায় চিকিৎসা নিতে আসা ২৫ জনের মধ্যে ২২ জন রাতে দরজা ভেঙ্গে ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৩ জন মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় তারা বেরিয়ে যেতে পারে নাই।
নিহত জালালের মামা মোঃ এমদাদুল হক জানান, মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে জালালের মৃত্যুনিয়ে একেক বার একেক ধরনের কথা বলা হয়। তারা আমার ভাগ্নাকে হাত পা বেঁধে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ স্বাস্তির দাবী করেন।