২০০ বছরের বৌ-মেলায় সাত কেজির মিষ্টি, ৮২ কেজির বাঘাইড়
- আপডেটের সময় : ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
- / ১৯০২ টাইম ভিউ
বগুড়ার গাবতলীতে ইছামতী নদীর তীরে চলছে পোড়াদহ মেলা। ঐতিহ্যবাহী এই মেলা মাত্র একদিনের হলেও স্বাভাবিকভাবেই মেলা দ্বিতীয় দিনে গিয়ে গড়ায়। আর দ্বিতীয় দিনের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বৌ-মেলা। আজ বৃহস্পতিবার পোড়াদহ মেলার দ্বিতীয় দিনে বৌ-মেলা হচ্ছে সেখানে।
এদিন এলাকার বৌয়েরা মেলায় কেনাকাটা বেশি করেন বলে মেলার এই নামকরণ। এছাড়া মেলায় আসেন নতুন জামাই ও শ্বশুররা। মূলত তাদের উদ্দেশ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা প্রজাতির বিশালাকৃতির মাছ আনা হয় মেলায়। এই মাছ কেনা নিয়ে জামাই-শ্বশুরের মধ্যে দারুণ উপভোগ্য প্রতিযোগিতা হয়।
প্রায় দুশ বছর ধরে চলা এ মেলা উপলক্ষে পার্শ্ববর্তী অন্তত ২০ গ্রামের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা মিলিত হন। এ মিলনমেলায় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতেও জ্যান্ত মাছ ছাড়াও মাছসদৃশ বিশালাকৃতির বিভিন্ন ধরনের মিষ্টিও তোলা হয়।
প্রবীণ এলাকাবাসী জানান, আগে গাবতলীর মহিষাবান ইউনিয়নে ইছামতী নদীসংলগ্ন পোড়াদহের বটতলায় সন্ন্যাসী মেলা বসতো। শত বছর ধরে প্রতি বছর মাঘ মাসের শেষ অথবা ফাল্গুনের প্রথম বুধবার এ মেলার আয়োজন করা হতো। কালের আবর্তে সেটি স্থানীয়দের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
একসময় এ মেলাকে ঘিরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আমদানি করার রেওয়াজ চালু হলে মাছের মেলা নামেও এটি পরিচিত হতে থাকে। এর সঙ্গে চালু হয় আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানোর রেওয়াজও।
এ বছর মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল মাছপট্টিতে বিশাল আকৃতির একটি বাঘাইড় মাছ। ৮২ কেজি ওজনের মাছটির প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। আর ৪০-৫০ কেজির বাঘাইড় মাছের কেজি হাজার টাকা এবং সাত কেজি ওজনের মাছমিষ্টি ২ হাজার ১০০ টাকা করে বিক্রি হয়। এছাড়াও মেলায় ছিল বড় বড় চিতল, বোয়াল, রুই, কাতলা, সিলভার কার্প ও শোল মাছ।
মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও মহিষাবান ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রায় দুশ’ বছরের এ মেলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। এ মেলায় আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষ মিলিত হন। এবার চাহিদা বেশি থাকায় একাধিক স্থানে মাছের বাজার বসানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে গাবতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম আহম্মেদ জানান, ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় শান্তি-সুশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। গ্রামীণ এ মেলা টিকিয়ে রাখতে আগামীতেও প্রশাসনের সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে।