ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
স্বাধিনতা মানে শুধুমাত্র নিজস্ব মানচিত্র অর্জন নয়, চাই বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

হাকালুকির সুন্দরী কসুতি বদলে দিতে পারে জীবনের রঙ

চৌধুরী আবু সাঈদ ফুয়াদ:
  • আপডেটের সময় : ০৪:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • / ১৭৩৬ টাইম ভিউ

একথালা লাল সূর্য পুব আকাশে। আশ্বিনের সকাল। ভোররাতে ঝমঝম বৃষ্টি হয়েছে। দূরের গাছ গাছালি, শেওলা, ক্ষুদিপানা, জলজ জঙ্গলী উদ্ভিদ সোনারোদে ভাসছে। গাঢ় সোনা রঙের এক দঙ্গল মাছ বুনো ঘাস টেনে হেচড়ে নিয়ে যায়। জলকেলিতে মগ্ন সোনালি অবাক সুন্দর ওই কসুতি পুঁটি মাছগুলো হাকালুকি হাওরের তলপেটে দেখা মেলেছে।

বিলুপ্ত প্রজাতির কসুতি পুঁটি বিখ্যাত অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস গোল্ড ও এ্যঞ্জেলকে হার মানায়। হাকালুকি ছাড়াও এসব এলাকার নদী, হ্রদ ও জলাভূমিতে ব্যাপক আকারে কসুতি পুঁটি চাষ করা সম্ভব। বর্তমান পৃথিবীতে সৌন্দর্য বর্ধনে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস ব্যাপক সমাদৃত। চীন দেশে কনফুসিয়াসের আমলে অ্যাকোয়ারিয়ামের যাত্রা শুরু হয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটিশ, জাপানিরা ভিয়েতনাম, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ফান্স থেকে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস আমদানি করে আসছে। আমাদের দেশের হাকালুকিতে কসুতি পুঁটি ব্রিডিং করে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস হিসেবে ব্যাপক হারে দেশের বাহিরে রপ্তানি করা যায়।

উড়োজাহাজের মতো দেখতে কসুতি পুঁটির বৈজ্ঞানিক নাম- Oreichthys cosuatis (Hamilton), ইংরেজি নাম- Cosuatis barb, বাংলা নাম- কসুতি পুঁটি বা কোসা পুঁটি। দেহ বেশ পুরু ও চাপা। মাথার পাশে অসংখ্য সূক্ষ্ম সমান্তরাল সেন্সরি ফোল্ড রয়েছে। মুখ ছোট, কোনো বার্বেল নেই। পৃষ্ঠীয় পাখনা সুউচ্চ এবং এর অবস্থান পায়ু পাখনা অপেক্ষা নাসাগ্রের অধিকতর নিকটবর্তী। আঁইশ বড়, পার্শ্বরেখা অসম্পূর্ণ, সামনের ৪-৫টি আঁইশেই সীমাবদ্ধ। লম্বালম্বিভাবে আঁইশের সংখ্যা ২২;, পৃষ্ঠীয় পাখনার অগ্রভাবে আঁইশের সংখ্যা ৮-৯। পার্শ্বরেখার ওপর অবস্থিত আঁইশ অন্যান্য আঁইশ অপেক্ষা বড়। পৃষ্ঠীয় পাখনার উচ্চতা দেহের গভীরতা অপেক্ষা বেশি। আঁইশের গোড়ালি কালচে; পায়ু পাখনার গোড়ালিতে ধূসর দাগ রয়েছে। পৃষ্ঠীয় ও পায়ু পাখনায় আবছা দাগ আছে।

এদের ডোবা, পুকুর, বিল নদী ও খালে দেখা যায়। মাছটি বর্ষার শুরুতেই প্রজনন করে। এটি একটি উপাদেয় খাদ্য। সম্ভাবনা ও উপযোগিতা থাকলেও এখনো এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় না। এটি অ্যাকোয়ারিয়ামে বেশ ভালই থাকে। মাছটির সর্ব্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৮ সেমি।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, কালচে সোনালি ও হালকা রূপালি রঙের মিশেলে কসুতি পুঁটি দেখতে খুবই চমৎকার। হাকালুকি হাওরের বিলে এবং ওই এলাকার হ্রদ ও নদীতে কসুতি পুঁটির দেখা মেলে। অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস হিসেবে ব্যাপকতা বাড়ানো যাবে। প্রজননের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে আয় করা সম্ভব। এই মাছ চাষ করে অনেকেই জীবনের রং বদলাতে পারেন।#

পোস্ট শেয়ার করুন

হাকালুকির সুন্দরী কসুতি বদলে দিতে পারে জীবনের রঙ

আপডেটের সময় : ০৪:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

একথালা লাল সূর্য পুব আকাশে। আশ্বিনের সকাল। ভোররাতে ঝমঝম বৃষ্টি হয়েছে। দূরের গাছ গাছালি, শেওলা, ক্ষুদিপানা, জলজ জঙ্গলী উদ্ভিদ সোনারোদে ভাসছে। গাঢ় সোনা রঙের এক দঙ্গল মাছ বুনো ঘাস টেনে হেচড়ে নিয়ে যায়। জলকেলিতে মগ্ন সোনালি অবাক সুন্দর ওই কসুতি পুঁটি মাছগুলো হাকালুকি হাওরের তলপেটে দেখা মেলেছে।

বিলুপ্ত প্রজাতির কসুতি পুঁটি বিখ্যাত অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস গোল্ড ও এ্যঞ্জেলকে হার মানায়। হাকালুকি ছাড়াও এসব এলাকার নদী, হ্রদ ও জলাভূমিতে ব্যাপক আকারে কসুতি পুঁটি চাষ করা সম্ভব। বর্তমান পৃথিবীতে সৌন্দর্য বর্ধনে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস ব্যাপক সমাদৃত। চীন দেশে কনফুসিয়াসের আমলে অ্যাকোয়ারিয়ামের যাত্রা শুরু হয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটিশ, জাপানিরা ভিয়েতনাম, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ফান্স থেকে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস আমদানি করে আসছে। আমাদের দেশের হাকালুকিতে কসুতি পুঁটি ব্রিডিং করে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস হিসেবে ব্যাপক হারে দেশের বাহিরে রপ্তানি করা যায়।

উড়োজাহাজের মতো দেখতে কসুতি পুঁটির বৈজ্ঞানিক নাম- Oreichthys cosuatis (Hamilton), ইংরেজি নাম- Cosuatis barb, বাংলা নাম- কসুতি পুঁটি বা কোসা পুঁটি। দেহ বেশ পুরু ও চাপা। মাথার পাশে অসংখ্য সূক্ষ্ম সমান্তরাল সেন্সরি ফোল্ড রয়েছে। মুখ ছোট, কোনো বার্বেল নেই। পৃষ্ঠীয় পাখনা সুউচ্চ এবং এর অবস্থান পায়ু পাখনা অপেক্ষা নাসাগ্রের অধিকতর নিকটবর্তী। আঁইশ বড়, পার্শ্বরেখা অসম্পূর্ণ, সামনের ৪-৫টি আঁইশেই সীমাবদ্ধ। লম্বালম্বিভাবে আঁইশের সংখ্যা ২২;, পৃষ্ঠীয় পাখনার অগ্রভাবে আঁইশের সংখ্যা ৮-৯। পার্শ্বরেখার ওপর অবস্থিত আঁইশ অন্যান্য আঁইশ অপেক্ষা বড়। পৃষ্ঠীয় পাখনার উচ্চতা দেহের গভীরতা অপেক্ষা বেশি। আঁইশের গোড়ালি কালচে; পায়ু পাখনার গোড়ালিতে ধূসর দাগ রয়েছে। পৃষ্ঠীয় ও পায়ু পাখনায় আবছা দাগ আছে।

এদের ডোবা, পুকুর, বিল নদী ও খালে দেখা যায়। মাছটি বর্ষার শুরুতেই প্রজনন করে। এটি একটি উপাদেয় খাদ্য। সম্ভাবনা ও উপযোগিতা থাকলেও এখনো এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় না। এটি অ্যাকোয়ারিয়ামে বেশ ভালই থাকে। মাছটির সর্ব্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৮ সেমি।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, কালচে সোনালি ও হালকা রূপালি রঙের মিশেলে কসুতি পুঁটি দেখতে খুবই চমৎকার। হাকালুকি হাওরের বিলে এবং ওই এলাকার হ্রদ ও নদীতে কসুতি পুঁটির দেখা মেলে। অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস হিসেবে ব্যাপকতা বাড়ানো যাবে। প্রজননের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে আয় করা সম্ভব। এই মাছ চাষ করে অনেকেই জীবনের রং বদলাতে পারেন।#