হেমন্তের বাতাসে আমনের ঘ্রান
- আপডেটের সময় : ১২:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৭
- / ১৪৮৯ টাইম ভিউ
চলতি বছরের শুরু থেকে অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের সৃষ্ট বন্যায় মৌলষভীবাজারের জুড়ী উপজেলার নিম্নাঞ্চলে চাষাবাদকৃত বোরো ও আউস ফসলী জমিগুলোর ফসল বানের পানিতে বিলীণ হয়ে যায়।
যার ফলে, নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। কৃষক পরিবারে দেখা দেয় অভাব, অনটন ও খাদ্য সংকট। পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকে চালের দাম নিয়ন্ত্রণহীনভাবে।
চলতি মৌসুমে রুপা-আমন চাষীরা অতি বৃষ্টিসহ সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে দিনের পর দিন হাড় ভাঙা পরিশ্রমেই জমিগুলো চাষাবাদ করেন। সেই অক্লান্ত পরিশ্রমে হেমন্তের বাতাসে ছড়াচ্ছে চতুর্দিকে কৃষকের আনন্দের পাঁকা ধানের ঘ্রাণ। জমিতে জমিতে দোল খাচ্ছে সোনারঙ্গা পাকা ও আধা পাকা ধান। প্রাকৃতিক অপরূপ এ সৌন্দর্যে কৃষকের বুকে যেন অপার আনন্দ। ধান কাটা নিয়ে চারিদিকে চলছে নবান্ন উৎসব। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে উপজেলার কৃষি নির্ভর পরিবারগুলোতে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমন ধান কাটা মহোৎসব শুরু হয়েছে। হেমন্তের সকাল থেকে শুরু করে পড়ন্ত বিকেল পর্যন্ত মাঠে মাঠে ধান কাটা, মাড়াই, বাছাই ও শুকনোর কাজে ব্যস্ত কৃষক ও কৃষাণীরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৮হাজার ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকায় অর্থাৎ চলতি মৌসুমে কয়েক দফা বন্যার পানি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় লক্ষমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। যার ফলে লক্ষমাত্রার চেয়ে ৩০৫ হেক্টর জমি আবাদ কম হয়েছে। আবাদকৃত জমির পরিমাণ ৭হাজার ৯শ ৪৫ হেক্টর। তন্মধ্যে ব্রি-৪৯ জাতের ধান ১হাজার হেক্টর আবাদ হয়েছে।
এ ধান হেক্টর প্রতি ৫-৬টন ফলন পাওয়া যাবে। নতুন ধান হিসেবে ব্রি-৫১ ও ব্রি-৫২ জাতের ধান ৫শ হেক্টর এবারে পরীক্ষা মূলকভাবে চাষাবাদ করা হয়েছে। এ ধানটি ৭-১০দিন পর্যন্ত পানিতে নিমজ্জিত থাকলেও কোনো ক্ষতি হয় না। এছাড়াও ২৩ভাসমান আলোক সংবেদনশীল জাতের ধানের ফলন ভাল হয়েছে। এ জাতের ধান বিলম্বে রোপন করলেও ভালো ফলন দেয়।
গোয়ালবাড়ি ইউপির কচুরগুল গ্রামের কৃষক হাজী নজির আহমদ, বশারত মিয়া ও টালিয়াউরা গ্রামের কামরুল ইসলাম জানান, আমন চাষে খরচ অনেক কম হয়। কারণ, বোরো চাষের মতো বেশি সেচ ও সার দিতে হয় না। পর্যাপ্ত বৃষ্টি আর পরিচর্যা করলেই আমন ফসল ভালো পাওয়া যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার বলেন, অত্রাঞ্চলের কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, উন্নতমানের বীজসহ অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভালো ফলণ সম্ভব হয়েছে।