ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত এক অসুস্থ প্রজন্ম কে সাথি করে এগুচ্ছি আমরা রিডানডেন্ট ক্লোথিং আর মজুর মামার ‘বিশ্বকাপ’ ইউরোপের সবচেয়ে বড় ঈদুল ফিতরের নামাজ পর্তুগালে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন ঈদের কাপড় কিনার জন্য মা’য়ের উপর অভিমান করে মেয়ের আত্মহত্যা লিসবনে বন্ধু মহলের আয়োজনে বিশাল ইফতার ও দোয়া মাহফিল

সূর্যের আলোয় ভিটামিন ডি ডা.সাঈদ এনাম

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ১০:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মে ২০২০
  • / ৩৭৮ টাইম ভিউ

ভিটামিন ডি কে আরেক নামে ডাকা হয় সোলার ভিটামিন বা সানসাইন ভিটামিন। সূর্যের আলোয় আমাদের ত্বকের গভীরতম স্থরে কলেস্টেরল থেকে ভিটামিন ডি-৩ (কলিক্যালসিফেরল) তৈরী হয়।

সূর্যের আলোর অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাব ভিটামিন ডি-৩ তৈরী হয়। আল্ট্রাভায়োলেট-রে (Ultraviolet Ray) বা অতি বেগুনি রশ্মি তিন প্রকার। A, B ও C. Ultraviolet Ray -C (UVC) এর প্রভাবে আমাদের ত্বকের একেবারে নীচের স্থরে এই ভিটামিন ডি-৩ তৈরি হয়।

ভিটামিন ডি দেহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস নিয়ন্ত্রণ করে হাড়, মাংস পেশী, দাতের গঠন সহ আরো নানাবিধ জৈবিক ক্রিয়াকলাপে নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্যে মাঝেমধ্যে আমাদের কে সূর্যালোকে হাটতে হয়। এতে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর হয়।

শীত প্রধান দেশের, শীতকালে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয়। কারন তখন সূর্যের দেখা খুব একটা পাওয়া যায়না। রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-ডি ক্যান্সার, ডায়বেটিস, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানী রোগ (এজমা) এবং হাইপ্রেশার হবার এর ঝুঁকি বহুলাংশে কমিয়ে দেয়।

গবেষণায় প্রমানিত ভিটামিন ডি-৩ (Vit-D3) ফুসফুসের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জীবাণু বাহিত রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে শক্তিশালী ভুমিকা পালন করে।

ভিটামিন ডি ক্যাথিলিসিডিন ও ডিফেনসিন ইনডাকশন (induction of cathelicidin and defensins) এবং প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি মেডিয়েটর সাইটোকাইন রিলিজ কমানোর মাধমে তার এন্টি ইনফ্ল্যামেটরি রোল প্লে করে।

ভিটামিন ডি ও করোনাভাইরাস রোগ:

করোনাভাইরাস এর আক্রমনে আমাদের দেহে অতিমাত্রার ইনফ্ল্যামেটরি মেডিয়েটর সাইটোকাইন রিলিজ হয়। একে সাইটোকাইন স্ট্রোম-ই বা সাইটোকইন ঝড় বলে। প্রাকৃতিক ডিফেনসিভ মেকানিজমের ফলেই এমনই ন হয়।

ধারনা করা হচ্ছে মুলত এই সাইটোকাইন ঝড়ের প্রভাবেই আমাদের ফুসফুস তীব্র ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অক্সিজেন স্বল্পতা ঘটে অবশেষে মাল্টি অর্গান ফেইলর হয়ে মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য যে করোনাভাইরাস এ শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের হাসপাতালে ভর্তি হবার প্রয়োজন পড়েনা এবং এ রোগে মৃত্যুর হার শতকরা ২ থেকে ৩ ভাগ। তবে এরোগ তীব্র ছোঁয়াছে।

সম্প্রতি ইউরোপে একটি গবেষণায় দেখা গেছে করোনাভাইরাস সংক্রমনে কোভিড-১৯ রোগে মারা যাওয়া বেশীর ভাগেরই ভিটামিন ডি এর ঘাটতি রয়েছে। গবেষণাটি আজ একটি জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। এ নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষণার দাবি রাখে।

ভিটামিন ডি ও মানসিক রোগ:

ভিটামিন -ডি ব্রেইনে ডোপামিন ও সেরোটোনিন নিউরোট্রান্সমিটার ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই ভিটামিন ডি এর অভাবে মানসিক সমস্যাও হতে পারে। সিজোন্যাল এফেকটিভ ডিসওর্ডার নামে এক ধরনের মানসিক রোগ রয়েছে।

Seasonal Affective Disorder (SAD) এর প্রভাবে সারাক্ষণ মন খারাপ থাকে, তাদের মেজাজ খিটিমিটে থাকে, মনে অশান্তি বিরাজ করে, ঘুমের ব্যাঘাত হয়, হতাশা বিরাজ করে, দূর্বলতা, কাজকর্মে অনিহা, উৎসাহ উদ্যম হীন থাকে। SAD চিকিৎসায় ঔষধের পাশাপাশি রোগীকে বিশেষ আলোর নীচে থাকতে বলা হয়। যাকে বলে লাইট থেরাপি বা ফটো থেরাপি।

প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত ভিটামিন মিনারেল আমাদের দেহের জন্যে অতি জরুরী। দুধে, ডিম এ ভিটামিন ডি পাওয়া যায় তাছাড়া ভিটামিন ডি ট্যাবলেট আকারেও পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এর সাথে ভিটামিন ডি-৩ মিশ্রিত থাকে।

দেহ মন ভালো রাখতে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে প্রতিদিন খানিকটা সময় সূর্যালোকে হাঠার অভ্যাস করা উচিৎ। এতে দেহ মন উভয়ই সতেজ থাকবে।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গেনাইজেশন এই কোভিড-১৯ মহামারী তে যাতে ভিটামিন অভাব না হয় সে জন্যে নিয়মিত ভিটামিন ডি খাবার পরামর্শ দিয়েছে।

ডা. সাঈদ এনাম
সহকারী অধ্যাপক
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।

পোস্ট শেয়ার করুন

সূর্যের আলোয় ভিটামিন ডি ডা.সাঈদ এনাম

আপডেটের সময় : ১০:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মে ২০২০

ভিটামিন ডি কে আরেক নামে ডাকা হয় সোলার ভিটামিন বা সানসাইন ভিটামিন। সূর্যের আলোয় আমাদের ত্বকের গভীরতম স্থরে কলেস্টেরল থেকে ভিটামিন ডি-৩ (কলিক্যালসিফেরল) তৈরী হয়।

সূর্যের আলোর অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাব ভিটামিন ডি-৩ তৈরী হয়। আল্ট্রাভায়োলেট-রে (Ultraviolet Ray) বা অতি বেগুনি রশ্মি তিন প্রকার। A, B ও C. Ultraviolet Ray -C (UVC) এর প্রভাবে আমাদের ত্বকের একেবারে নীচের স্থরে এই ভিটামিন ডি-৩ তৈরি হয়।

ভিটামিন ডি দেহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস নিয়ন্ত্রণ করে হাড়, মাংস পেশী, দাতের গঠন সহ আরো নানাবিধ জৈবিক ক্রিয়াকলাপে নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্যে মাঝেমধ্যে আমাদের কে সূর্যালোকে হাটতে হয়। এতে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর হয়।

শীত প্রধান দেশের, শীতকালে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয়। কারন তখন সূর্যের দেখা খুব একটা পাওয়া যায়না। রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-ডি ক্যান্সার, ডায়বেটিস, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানী রোগ (এজমা) এবং হাইপ্রেশার হবার এর ঝুঁকি বহুলাংশে কমিয়ে দেয়।

গবেষণায় প্রমানিত ভিটামিন ডি-৩ (Vit-D3) ফুসফুসের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জীবাণু বাহিত রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে শক্তিশালী ভুমিকা পালন করে।

ভিটামিন ডি ক্যাথিলিসিডিন ও ডিফেনসিন ইনডাকশন (induction of cathelicidin and defensins) এবং প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি মেডিয়েটর সাইটোকাইন রিলিজ কমানোর মাধমে তার এন্টি ইনফ্ল্যামেটরি রোল প্লে করে।

ভিটামিন ডি ও করোনাভাইরাস রোগ:

করোনাভাইরাস এর আক্রমনে আমাদের দেহে অতিমাত্রার ইনফ্ল্যামেটরি মেডিয়েটর সাইটোকাইন রিলিজ হয়। একে সাইটোকাইন স্ট্রোম-ই বা সাইটোকইন ঝড় বলে। প্রাকৃতিক ডিফেনসিভ মেকানিজমের ফলেই এমনই ন হয়।

ধারনা করা হচ্ছে মুলত এই সাইটোকাইন ঝড়ের প্রভাবেই আমাদের ফুসফুস তীব্র ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অক্সিজেন স্বল্পতা ঘটে অবশেষে মাল্টি অর্গান ফেইলর হয়ে মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য যে করোনাভাইরাস এ শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের হাসপাতালে ভর্তি হবার প্রয়োজন পড়েনা এবং এ রোগে মৃত্যুর হার শতকরা ২ থেকে ৩ ভাগ। তবে এরোগ তীব্র ছোঁয়াছে।

সম্প্রতি ইউরোপে একটি গবেষণায় দেখা গেছে করোনাভাইরাস সংক্রমনে কোভিড-১৯ রোগে মারা যাওয়া বেশীর ভাগেরই ভিটামিন ডি এর ঘাটতি রয়েছে। গবেষণাটি আজ একটি জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। এ নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষণার দাবি রাখে।

ভিটামিন ডি ও মানসিক রোগ:

ভিটামিন -ডি ব্রেইনে ডোপামিন ও সেরোটোনিন নিউরোট্রান্সমিটার ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই ভিটামিন ডি এর অভাবে মানসিক সমস্যাও হতে পারে। সিজোন্যাল এফেকটিভ ডিসওর্ডার নামে এক ধরনের মানসিক রোগ রয়েছে।

Seasonal Affective Disorder (SAD) এর প্রভাবে সারাক্ষণ মন খারাপ থাকে, তাদের মেজাজ খিটিমিটে থাকে, মনে অশান্তি বিরাজ করে, ঘুমের ব্যাঘাত হয়, হতাশা বিরাজ করে, দূর্বলতা, কাজকর্মে অনিহা, উৎসাহ উদ্যম হীন থাকে। SAD চিকিৎসায় ঔষধের পাশাপাশি রোগীকে বিশেষ আলোর নীচে থাকতে বলা হয়। যাকে বলে লাইট থেরাপি বা ফটো থেরাপি।

প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত ভিটামিন মিনারেল আমাদের দেহের জন্যে অতি জরুরী। দুধে, ডিম এ ভিটামিন ডি পাওয়া যায় তাছাড়া ভিটামিন ডি ট্যাবলেট আকারেও পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এর সাথে ভিটামিন ডি-৩ মিশ্রিত থাকে।

দেহ মন ভালো রাখতে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে প্রতিদিন খানিকটা সময় সূর্যালোকে হাঠার অভ্যাস করা উচিৎ। এতে দেহ মন উভয়ই সতেজ থাকবে।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গেনাইজেশন এই কোভিড-১৯ মহামারী তে যাতে ভিটামিন অভাব না হয় সে জন্যে নিয়মিত ভিটামিন ডি খাবার পরামর্শ দিয়েছে।

ডা. সাঈদ এনাম
সহকারী অধ্যাপক
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।