সিলেটে কিট সংকটে কয়েকটি উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ বন্ধ
- আপডেটের সময় : ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জুন ২০২০
- / ৪১৫ টাইম ভিউ
সিলেটে কিট সংকটের কারণে বেশ কয়েকটি উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ফলে সন্দেহভাজন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির স্যাম্পল পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। এমন অবস্থা চলছে জেলা জুড়ে। এই কথাটি স্বীকার করলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান।
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, ওসমানীনগর ও জকিগঞ্জসহ আরো কয়েকটি উপজেলার নমুনা সংগ্রহ করা বন্ধ হয়নি। তবে এখানে কীটের সংকট রয়েছে। সেখানকার দায়িত্বশীলরা আমাদেরকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি তাদেরকে কিট দিতে। এছাড়াও আরো কয়েকটি উপজেলায় এ সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে প্রতিদিন ৫০০টি নমুনা টেষ্ট করার সক্ষমতা রয়েছে। তবে টেকনিশিয়ানের অভাবে সেখানে মাত্র ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এজন্য প্রতিদিন নমুনার জট বাড়ছে। ফলে রিপোর্ট পেতেও সময় লেগে যাচ্ছে ১০ থেকে ১২ দিন।
সুত্র জানায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজের কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য স্থাপিত পিসিআর ল্যাবের সাথে ‘অটো স্যাম্পল পিপারেটর’ মেশিনটি নেই। এজন্য টেকনিশিয়ানরা ম্যানুয়ালি পরীক্ষা করছেন। ফলে দুই রাউন্ডের বেশি সম্ভব হচ্ছে না। প্রতি রাউন্ডে ৯৩-৯৪টি টেস্ট করা সম্ভব। দুই রাউন্ড মিলে প্রতিদিন ১৮৬ থেকে ১৮৮ টি পরীক্ষা করা সম্ভব হয়। এতেই নমুনার জট লেগেই আছে। ল্যাবে প্রায় দেড় হাজার নমুনা স্যাম্পল জমে আছে। ফলে রিপোর্ট মিলছে না নমুনা পরীক্ষার ।
এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের উপ-পরিচালক হিমাংশু লাল রায় বলেন, টেকনিশিয়ান বাড়ানো গেলে দুই রাউন্ড থেকে ৪ রাউন্ড পরীক্ষা করা যাবে এবং নমুনা জট অনেকটা কমে আসবে।
এদিকে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে শুধু সুনামগঞ্জ জেলা থেকে পাঠানো নমুনাগুলো পরীক্ষা করা হয়। ল্যাবটিতে প্রতিদিন ১৮৮টি টেস্ট করার সক্ষমতা রয়েছে। ল্যাবটিতে নেই নমুনার জট, নেই টেস্ট করার জন্য স্যাম্পল। গত শুক্রবার ল্যাবটিতে মাত্র ২৫টি স্যাম্পল জমা পড়ে। এসব স্যাম্পল পাঠানো হয় সুনামগঞ্জ থেকে। প্রেরিত স্যাম্পলে মাত্র ৪ জন জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
গত শুক্রবার সুনামগঞ্জে কম নমুনা সংগ্রহ হলেও ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে জমে আছে বেশি নমুনা। ফলে রিপোর্টও দিতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় কেন শাবির পিসিআর ল্যাবে নমুনা পাঠানো হচ্ছে না; এমন প্রশ্নও উঠছে।
কোভিড-১৯ শনাক্ত করার জন্য সিলেট বিভাগে মাত্র দুটি পিসিআর ল্যাব চালু করা হয়। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে সিলেট জেলাসহ আরো দুটি জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। আর শাবির ল্যাবে শুধু মাত্র সুনামগঞ্জ জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এই দুটি ল্যাবের সমন্বয়হীনতা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন! এই দুই ল্যাবে সমন্বয় থাকলে অনেকটা নমুনার জট কমে যাবে বলে স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা জানান।
তারা বলেন, একে অন্যের কাছ থেকে স্যাম্পল নিয়ে টেষ্ট করতে পারতো। শাবি পিসিআর ল্যাব কর্তৃপক্ষ যদি ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পারতো। তাছাড়া ওসমানী মেডিকেল কলেজে নমুনার জট থাকায় তারাও শাবির ল্যাবের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারতো। কিন্তু এখানে কোন সমন্বয় নেই।
শাবির ল্যাবে কেন নমুনা দেয়া হয়নি জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ওসমানীতে যে নমুনা আছে সেগুলোর ল্যাব আইডি দেওয়া হয়ে গেছে। এজন্য শাবির ল্যাবে নমুনা পাঠাইনি,তাছাড়া শাবি কর্তৃপক্ষও আমাদেরকে আগে বিষয়টি জানালে আমরা সেখানে কিছু নমুনা পাঠাতাম।