ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত এক অসুস্থ প্রজন্ম কে সাথি করে এগুচ্ছি আমরা

সংকট বিএনপির নয়, জাতির ——– আসিফ নজরুল

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেটের সময় : ০৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জানুয়ারী ২০১৯
  • / ১০৫৫ টাইম ভিউ
দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘মহাজালিয়াতি, মহাধাপ্পাবাজি ও মহাপ্রহসনের যে নির্বাচন হয়েছে সে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে কেউ যদি অংশ না নেয় তাহলে তাদের দোষ না দিয়ে যারা এই নির্বাচনের আয়োজন করল- তাদেরকে দোষ দেওয়া উচিত। তাই কেন বিএনপি পারল না, বা বিএনপি এখন কী করবে সে সব আলোচনা না করে উচিত জালিয়াত বা ধাপ্পাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলা। কিন্তু শুধু বিএনপি নয়, বাম দল থেকে শুরু করে গণমাধ্যম কেউই এর বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারছে না। শুধু বিএনপির একলা দোষ দিলে চলবে না।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলো তখন আওয়ামী লীগের কোনো মানুষ প্রতিবাদ করেনি কেন? কেউ কোনো মিছিল করেনি কেন? কেউ নামে নাই কেন রাস্তায়? ওয়ান-ইলেভেনে যখন দুই নেত্রীকেই গ্রেফতার করা হলো তখন সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায় নাই কেন? নির্বাচিত সরকারকে যখন বন্দুক দিয়ে সড়িয়ে ক্ষমতায় আসে তখন কেউ প্রতিবাদ করতে পারে নাই কেন? আসলে বাংলাদেশের জাতির ইতিহাসে এমন কিছু ঘটনা আছে- যখন এমন ভীতি, এমন আতঙ্ক মানুষকে গ্রাস করে, তখন মানুষ সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ করতে পারে না। নিশ্চয়ই তেমন কোনো পরিস্থিতিই আবার এসেছিল। এখন রেডিও-টেলিভিশনে একটাই প্রশ্ন করা হয় যে, বিএনপি কেন সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ করতে পারল না। তাদের এই প্রশ্নটা করা দরকার যে বঙ্গবন্ধুর মতো ব্যক্তিত্ব যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার ঋণ বাংলাদেশ কোনো দিনই শোধ করতে পারবে না- তাকে তো মেরেই ফেলেছে। তারপরও তার মৃত্যুর পর সঙ্গে সঙ্গে তো দূরের কথা, এক-দুই বছরের মধ্যেও কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারল না কেন? তাহলে কি বঙ্গবন্ধু এক সেকেন্ডের মধ্যে প্রচন্ড অজনপ্রিয় হয়ে গেছে? তখন বা তারপর কি আওয়ামী লীগের সংগঠন উধাও হয়ে গেছে? আসলে ভয়াল আতঙ্ক বা ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে যার কারণে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারেনি। সেই রকমই একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেই এত বড় একটা জালিয়াতির নির্বাচনের পরও মানুষ চুপ থাকছে। এটা শুধু বিএনপির সংকট নয়, এই সংকট বাংলাদেশের মানুষের, পুরো জাতির। কিন্তু সর্বত্রই এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন আওয়ামী লীগ ভার্সেস বিএনপি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যে এখানে একটি পক্ষথ- তা সবাই ভুলেই যাচ্ছে।’ আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার ছাত্রদের মধ্যে এমনও আছে যে তারা নৌকায় ভোট দিতে চেয়েও পারে নাই। সুলতানা কামাল পত্রিকায় ইন্টারভিউ দিয়ে বলেছে তার বাসার গৃহকর্মী নৌকায় ভোট দিতে চেয়েও পারেনি। এটা বাংলাদেশের মানুষকে চিট করা হয়েছে। এটা মানুষের বেদনা, মানুষের আর্তনাদকে মূল্য দিতে হবে। বিএনপি প্রতিবাদ করতে পারল না, সিপিবি পেরেছে? তারা তো সরাসরিই বলেছে ভুয়া নির্বাচন। আর গণমাধ্যম তো সব সময়ই নির্বাচনের সময় নানান ধরনের রিপোর্ট করে, তাহলে এবার কেন হলো না? যে আসনে আওয়ামী লীগ ৮ হাজারের বেশি ভোট পায় না সেখানে কীভাবে আড়াই লাখের বেশি ভোট পড়ল? যেখানে ইভিএমে ভোট পড়ল ৫৩ শতাংশ তাহলে অন্য খানে কেন ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ল? যেখানে সবসময় মার্জিনাল ব্যবধান হয় সেখানে কেন এবার অস্বাভাবিক বেশি ব্যবধান হলো? কেন বিদেশি পর্যবেক্ষকদের রাখা হলো না? কেন মোবাইলের গতি স্লো করে রাখা হলো? এসব প্রশ্ন গণমাধ্যম করতে পারে না, এসব কারণেই বিএনপি প্রতিবাদ করতে পারছে না, বিএনপি নির্বাচনে যেতে পারছে না বা তথাকথিত ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না, বা এখন তেমন কিছুই করতে পারছে না।’

পোস্ট শেয়ার করুন

সংকট বিএনপির নয়, জাতির ——– আসিফ নজরুল

আপডেটের সময় : ০৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জানুয়ারী ২০১৯
দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘মহাজালিয়াতি, মহাধাপ্পাবাজি ও মহাপ্রহসনের যে নির্বাচন হয়েছে সে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে কেউ যদি অংশ না নেয় তাহলে তাদের দোষ না দিয়ে যারা এই নির্বাচনের আয়োজন করল- তাদেরকে দোষ দেওয়া উচিত। তাই কেন বিএনপি পারল না, বা বিএনপি এখন কী করবে সে সব আলোচনা না করে উচিত জালিয়াত বা ধাপ্পাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলা। কিন্তু শুধু বিএনপি নয়, বাম দল থেকে শুরু করে গণমাধ্যম কেউই এর বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারছে না। শুধু বিএনপির একলা দোষ দিলে চলবে না।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলো তখন আওয়ামী লীগের কোনো মানুষ প্রতিবাদ করেনি কেন? কেউ কোনো মিছিল করেনি কেন? কেউ নামে নাই কেন রাস্তায়? ওয়ান-ইলেভেনে যখন দুই নেত্রীকেই গ্রেফতার করা হলো তখন সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায় নাই কেন? নির্বাচিত সরকারকে যখন বন্দুক দিয়ে সড়িয়ে ক্ষমতায় আসে তখন কেউ প্রতিবাদ করতে পারে নাই কেন? আসলে বাংলাদেশের জাতির ইতিহাসে এমন কিছু ঘটনা আছে- যখন এমন ভীতি, এমন আতঙ্ক মানুষকে গ্রাস করে, তখন মানুষ সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ করতে পারে না। নিশ্চয়ই তেমন কোনো পরিস্থিতিই আবার এসেছিল। এখন রেডিও-টেলিভিশনে একটাই প্রশ্ন করা হয় যে, বিএনপি কেন সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ করতে পারল না। তাদের এই প্রশ্নটা করা দরকার যে বঙ্গবন্ধুর মতো ব্যক্তিত্ব যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার ঋণ বাংলাদেশ কোনো দিনই শোধ করতে পারবে না- তাকে তো মেরেই ফেলেছে। তারপরও তার মৃত্যুর পর সঙ্গে সঙ্গে তো দূরের কথা, এক-দুই বছরের মধ্যেও কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারল না কেন? তাহলে কি বঙ্গবন্ধু এক সেকেন্ডের মধ্যে প্রচন্ড অজনপ্রিয় হয়ে গেছে? তখন বা তারপর কি আওয়ামী লীগের সংগঠন উধাও হয়ে গেছে? আসলে ভয়াল আতঙ্ক বা ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে যার কারণে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারেনি। সেই রকমই একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেই এত বড় একটা জালিয়াতির নির্বাচনের পরও মানুষ চুপ থাকছে। এটা শুধু বিএনপির সংকট নয়, এই সংকট বাংলাদেশের মানুষের, পুরো জাতির। কিন্তু সর্বত্রই এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন আওয়ামী লীগ ভার্সেস বিএনপি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যে এখানে একটি পক্ষথ- তা সবাই ভুলেই যাচ্ছে।’ আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার ছাত্রদের মধ্যে এমনও আছে যে তারা নৌকায় ভোট দিতে চেয়েও পারে নাই। সুলতানা কামাল পত্রিকায় ইন্টারভিউ দিয়ে বলেছে তার বাসার গৃহকর্মী নৌকায় ভোট দিতে চেয়েও পারেনি। এটা বাংলাদেশের মানুষকে চিট করা হয়েছে। এটা মানুষের বেদনা, মানুষের আর্তনাদকে মূল্য দিতে হবে। বিএনপি প্রতিবাদ করতে পারল না, সিপিবি পেরেছে? তারা তো সরাসরিই বলেছে ভুয়া নির্বাচন। আর গণমাধ্যম তো সব সময়ই নির্বাচনের সময় নানান ধরনের রিপোর্ট করে, তাহলে এবার কেন হলো না? যে আসনে আওয়ামী লীগ ৮ হাজারের বেশি ভোট পায় না সেখানে কীভাবে আড়াই লাখের বেশি ভোট পড়ল? যেখানে ইভিএমে ভোট পড়ল ৫৩ শতাংশ তাহলে অন্য খানে কেন ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ল? যেখানে সবসময় মার্জিনাল ব্যবধান হয় সেখানে কেন এবার অস্বাভাবিক বেশি ব্যবধান হলো? কেন বিদেশি পর্যবেক্ষকদের রাখা হলো না? কেন মোবাইলের গতি স্লো করে রাখা হলো? এসব প্রশ্ন গণমাধ্যম করতে পারে না, এসব কারণেই বিএনপি প্রতিবাদ করতে পারছে না, বিএনপি নির্বাচনে যেতে পারছে না বা তথাকথিত ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না, বা এখন তেমন কিছুই করতে পারছে না।’