শবে-বরাতে সেই অসহায় দেবশিশুদের পাশে দাঁড়ালেন ওসি
- আপডেটের সময় : ০৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৯
- / ২১২৮ টাইম ভিউ
চৌধুরী আবু সাঈদ ফুয়াদ: শবে-বরাতের কয়েকঘন্টা বাকি। কড়া রোদ ঠেলে ক্ষয়িষ্ণু গ্রাম সেই কুলাউড়া উপজেলার গুতগুতি এলাকায় সেমাই, রুটি, জুস, বিস্কিটসহ শুকনো খাবার আর নগদ অর্থ নিয়ে ছুটে গেলেন কুলাউড়া থানার ওসি ইয়ারদুস হাসান। সঙ্গে ছিলেন এস.আই নূর হোসেনসহ অন্যান্যরা। পুলিশ দেখেই ছুটে এলো পিতাহারা নাজিম, নিজাম, নাজমুল, নিশি। পরম মমতায় তাদেরকে জড়িয়ে ধরলেন ইয়ারদুস হাসান। আর সেই অসহায় দেবশিশুরা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো। তাদের চোখের জলের বিমর্ষ রেখা ভেদ করে আশ্রয় আর স্মিত হাসি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলো। মাত্র কদিন আগে শিশুরা তাদের বাবাকে হারিয়েছে। নির্মমভাবে খুন হয়েছেন তাদের পিতা। খাঁ খাঁ করছে ঘর দোর, বাড়ির চৌপাশ। ওখানে পাখির ডাক বন্ধ হয়ে গেছে। আস-পাশের বুনো ফুল ফুটো হয়ে ঝরে যাচ্ছে। ছুটি নিয়েছে সকল আনন্দ। সন্ধ্যা নামলেই বাবার হাত ধরে শবে-বরাতে আজ আর মসজিদে যাওয়া হবে না। বাবার কিনে দেয়া মোমবাতি, আগর আর গোলাপপাশে ভরা গোলাপজল আজ আর হাতে উঠবে না। এমনি এক উৎকণ্ঠা আর চোখের লোনা জলে দুঃখে ভরা সময়ে হাজির হলেন পুলিশ প্রশাসনের লোকজন। শিশুদের মুখে একটু একটু আনন্দ ফিরে এলো। ওসি ইয়ারদুস হাসান তাদেরকে সান্তনা দিয়ে বললেন বাবা হত্যার সঠিক বিচার হবে। কোন কার্পণ্য হবে না। এসময় তিনি তাদের অসহায় মা ও শিশুদের হাতে কুলাউড়া পুলিশ প্রশাসনের বেতনের অংশ থেকে কিছু নগদ অর্থ ও শুকনো খাবার তুলে দেন। এব্যাপারে ওসি ইয়ারদুস হাসান বলেন, পবিত্র শবে-বরাত উপলক্ষে শিশুদের জন্য খাবার ও নগদ সামান্য অর্থ নিয়ে এসে তাদের খোঁজ খবর নিয়েছি।
উল্লেখ্য, কুলাউড়ার গুতগুতি গ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে নাজিম, নিজাম, নাজমুল ও নিশির পিতা দিলু মিয়া নির্মমভাবে খুন হন। খুন হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার ওসি ইয়ারদুস হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে দিলুর সন্তানদের বুকে আগলে ধরে সান্তনা দেন এবং সঠিক বিচারের আশ্বাস প্রদান করেন। আবারও শবে-বরাত উপলক্ষে তিনি আজ ২১ এপ্রিল তাদের বাড়িতে ছুটে যান শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ নিয়ে।#