ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে কুলাউড়া বিএনপির দীর্ঘ যুগ পর কোন্দলের অবসান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার

লিভার রোগ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব ( স্বপ্নীল)
  • আপডেটের সময় : ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯
  • / ৮৯৩ টাইম ভিউ

মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার। শারীরীক যত্নের অভাবে বা নিয়ম কানুন না মানার ফলে অন্যান্য অঙ্গের মতো লিভারেও নানা ধরনের রোগ হয়। প্রশ্ন হলো লিভারের রোগ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। বা লিভারে কোন সমস্যা হলে আমরা কী করব? আমি বলব লিভার রোগ নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, লিভারের রোগ নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করে। লিভারে সাধারনত যে রোগগুলো হয় তার অন্যতম ভাইরাল হেপাটাইটিস। ভাইরাস থেকে জন্ডিস হয়।

যেমন: এভাইরাস, ই ভাইরাস, সি ভাইরাস- সবগুলো থেকে জন্ডিস হতে পারে। এ ভাইরাস, ই-ভাইরাস, সি -ভাইরাস কেন হয়? এগুলো সবই পানিবাহিত রোগ। আমরা যদি একটু সতর্ক হই, বিশুদ্ধ পানি পান করি, রাস্তা ঘাটে বা যেখানে সেখানে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করি তাহলে তো এ ভাইরাস বা ই ভাইরাস হওয়ার কোন সুযোগ নাই।

বি ভাইরাস ও সি ভাইরাস ছড়ায় রক্তের মাধ্যমে। অন্যের রক্ত নিজের শরীরে নেওয়ার আগে পরীক্ষা করে নিন, একজন রোগীকে রক্ত দেওয়ার সময় নতুন সুঁচ ব্যবহার করি তাহলে কিন্তু বি-ভাইরাস বা সি-ভাইরাস ছড়ানোর সুযোগ নেই।

স্বামী স্ত্রী দু’জনের কারো যদি বি ভাইরাস বা সি ভাইরাস থাকে তাহলে তার সাথে মেলামেশার ফলে অন্যেরও বি ভাইরাস বা সি-ভাইরাস হতে পারে। তাই একজনের যদি এসব ভাইরাসের কোনটি থাকে তাহলে অন্যজনের উচিত পরীক্ষা করে টিকা নিয়ে নেওয়া। মায়ের যদি এ ভাইরাস থাকে তাহলে সন্তানকেও জন্মের মুহুর্তে অবশ্যই বি ভ্যাক্সিন ও ইমিউনোগ্লোবিওলিন ইনজেকশান দিতে হবে।

লিভারের একটি বড় রোগ হচ্ছে ফ্যাটিলিভার। যা মূলত খাদ্যাভ্যাস ও লাইফ স্টাইলের উপর নির্ভর করে। রাতে দেরিতে খাওয়া, খাওয়ার সাথে সাথে ঘুমাতে যাওয়া, হাঁটা চলা কম করা, ফ্যাটি ফুড ফাস্ট ফুড বেশি খাওয়া এগুলো ফ্যাটি লিভারের বড় কারণ। কখনো কখনো অ্যালকোহল ও ফ্যাটি লিভারের বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই কিছু নিয়ম মেনে চললে যেমন-নিয়মিত ব্যায়াম করা, রাতে ভাত কম খাওয়া, রাতে খাওয়ার পর একটু হাঁটা-চলা করা, বিকালে হাঁটাহাঁটি করা, ফাস্ট ফুড ফ্যাটি ফুড কম খাওয়া এসব নিয়ম মেনে চললে ফ্যাটি লিভার এড়ানো সম্ভব। অর্থাৎ,আমি বলতে চাচ্ছি লিভারের বেশিরভাগ রোগই প্রতিরোধ যোগ্য।

প্রশ্ন হচ্ছে যদি লিভারের রোগ হয়ে যায় তাহলে কী করব? লিভার রোগের বড় দুঃশ্চিন্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয় এইচবিএস পজিটিভকে। এইচবিএস পজিটিভ যাদের থাকে তাদের মধ্যে শতকরা পনের থেকে বিশ জনের লিভার ডেমেজ এবং লিভার সিরোসিস হয়। সেই পনের থেকে বিশ জনের মধ্যে শতকরা পাঁচ জনের লিভার ক্যান্সার হতে পারে। বেশিরভাগ রোগীর কিছুই হয় না।

আবার যাদের লিভার সিরোসিস বা লিভার ডেমেজ হয়ে যায় তাদের অধিকাংশ কিন্তু টেরই পান না যে তাদের লিভার সিরোসিস হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে পারেন। তাই, কেউ যদি একটু নিয়ম কানুন মেনে চলেন এবং কোন সমস্যা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন তাহলে দীর্ঘদিন সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন সম্ভব।

লেখক: অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল), চেয়ারম্যান, হেপাটোলজী বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

পোস্ট শেয়ার করুন

লিভার রোগ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই

আপডেটের সময় : ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯

মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার। শারীরীক যত্নের অভাবে বা নিয়ম কানুন না মানার ফলে অন্যান্য অঙ্গের মতো লিভারেও নানা ধরনের রোগ হয়। প্রশ্ন হলো লিভারের রোগ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। বা লিভারে কোন সমস্যা হলে আমরা কী করব? আমি বলব লিভার রোগ নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, লিভারের রোগ নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করে। লিভারে সাধারনত যে রোগগুলো হয় তার অন্যতম ভাইরাল হেপাটাইটিস। ভাইরাস থেকে জন্ডিস হয়।

যেমন: এভাইরাস, ই ভাইরাস, সি ভাইরাস- সবগুলো থেকে জন্ডিস হতে পারে। এ ভাইরাস, ই-ভাইরাস, সি -ভাইরাস কেন হয়? এগুলো সবই পানিবাহিত রোগ। আমরা যদি একটু সতর্ক হই, বিশুদ্ধ পানি পান করি, রাস্তা ঘাটে বা যেখানে সেখানে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করি তাহলে তো এ ভাইরাস বা ই ভাইরাস হওয়ার কোন সুযোগ নাই।

বি ভাইরাস ও সি ভাইরাস ছড়ায় রক্তের মাধ্যমে। অন্যের রক্ত নিজের শরীরে নেওয়ার আগে পরীক্ষা করে নিন, একজন রোগীকে রক্ত দেওয়ার সময় নতুন সুঁচ ব্যবহার করি তাহলে কিন্তু বি-ভাইরাস বা সি-ভাইরাস ছড়ানোর সুযোগ নেই।

স্বামী স্ত্রী দু’জনের কারো যদি বি ভাইরাস বা সি ভাইরাস থাকে তাহলে তার সাথে মেলামেশার ফলে অন্যেরও বি ভাইরাস বা সি-ভাইরাস হতে পারে। তাই একজনের যদি এসব ভাইরাসের কোনটি থাকে তাহলে অন্যজনের উচিত পরীক্ষা করে টিকা নিয়ে নেওয়া। মায়ের যদি এ ভাইরাস থাকে তাহলে সন্তানকেও জন্মের মুহুর্তে অবশ্যই বি ভ্যাক্সিন ও ইমিউনোগ্লোবিওলিন ইনজেকশান দিতে হবে।

লিভারের একটি বড় রোগ হচ্ছে ফ্যাটিলিভার। যা মূলত খাদ্যাভ্যাস ও লাইফ স্টাইলের উপর নির্ভর করে। রাতে দেরিতে খাওয়া, খাওয়ার সাথে সাথে ঘুমাতে যাওয়া, হাঁটা চলা কম করা, ফ্যাটি ফুড ফাস্ট ফুড বেশি খাওয়া এগুলো ফ্যাটি লিভারের বড় কারণ। কখনো কখনো অ্যালকোহল ও ফ্যাটি লিভারের বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই কিছু নিয়ম মেনে চললে যেমন-নিয়মিত ব্যায়াম করা, রাতে ভাত কম খাওয়া, রাতে খাওয়ার পর একটু হাঁটা-চলা করা, বিকালে হাঁটাহাঁটি করা, ফাস্ট ফুড ফ্যাটি ফুড কম খাওয়া এসব নিয়ম মেনে চললে ফ্যাটি লিভার এড়ানো সম্ভব। অর্থাৎ,আমি বলতে চাচ্ছি লিভারের বেশিরভাগ রোগই প্রতিরোধ যোগ্য।

প্রশ্ন হচ্ছে যদি লিভারের রোগ হয়ে যায় তাহলে কী করব? লিভার রোগের বড় দুঃশ্চিন্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয় এইচবিএস পজিটিভকে। এইচবিএস পজিটিভ যাদের থাকে তাদের মধ্যে শতকরা পনের থেকে বিশ জনের লিভার ডেমেজ এবং লিভার সিরোসিস হয়। সেই পনের থেকে বিশ জনের মধ্যে শতকরা পাঁচ জনের লিভার ক্যান্সার হতে পারে। বেশিরভাগ রোগীর কিছুই হয় না।

আবার যাদের লিভার সিরোসিস বা লিভার ডেমেজ হয়ে যায় তাদের অধিকাংশ কিন্তু টেরই পান না যে তাদের লিভার সিরোসিস হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে পারেন। তাই, কেউ যদি একটু নিয়ম কানুন মেনে চলেন এবং কোন সমস্যা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন তাহলে দীর্ঘদিন সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন সম্ভব।

লেখক: অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল), চেয়ারম্যান, হেপাটোলজী বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।