বড়লেখা ও জুড়ীতে জীবিত গাছে অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ লাইন
- আপডেটের সময় : ০৯:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
- / ৪৬৮ টাইম ভিউ
পিডিবি’র আওতাধীন বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। জরাজীর্ণ লাইন সংস্কারে কর্তৃপক্ষ চরম উদাসীন। লাইন মেরামত না করেই দেয়া হচ্ছে অস্বাভাবিক দুরত্বে বাঁশের-কাঠের খুটিতে ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগ। লাইনের ওপর থাকা গাছপালা কর্তন ও মেরামত না করায় ঝড়-তুফানে গাছপালা পড়ে তার ছিড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। বিদ্যুৎহীন হয়ে ভোগান্তি পোয়ান গ্রাহকরা। দ্রুত বিদ্যুৎ লাইন সংস্কার না করলে বড়ধরণের হতাহতের আশংকা রয়েছে।
জানা গেছে, পিডিবি’র কুলাউড়া বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের আওতাধীন বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। এ বিদ্যুৎ লাইনের বেশির ভাগই ২৫-৩০ বছরের জরাজীর্ণ এবং অপরিকল্পিত। ভুমি থেকে কমপক্ষে ৯ মিটার ওপরে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন টানানোর নিয়ম। কিন্তু এর তোয়াক্কা না করে পিডিবি’র অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাঁশের ও কাঠের খুটিঁতে অত্যন্ত কম উচ্চতায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে। কোথাও জীবিত বাঁশ ও গাছকে খুটিঁ ব্যবহার করে সংযোগ দেয়ায় প্রায়ই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। বিদ্যুতায়িত হয়ে গত ১৬ আগস্ট ফুলতলা বাজারে আব্দুল ওয়াহিদ নামে এক দিনমজুর ও পাতিলাসাঙ্গনে ইমাম উদ্দিন হোসাইন নামক কিশোরের মৃত্যু ঘটেছে। গত বছরে পিডিবি’র অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান জুড়ী বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সুনীল দেবনাথ, জসিম উদ্দীন, শাহপুরের দুই মাছ শিকারীসহ অন্তত ৬ ব্যক্তি।
সরেজমিনে বড়লেখার কাশেমনগর, হাকাইতি, জুড়ীর চম্পকলতা, ভজিটিলা, মনতৈল, ভোগতেরা ও কালিনগর গ্রামে হালকা ঝড়ে ভেঙ্গে যাবে এমন কাঠের-বাঁশের অত্যন্ত দুর্বল অসংখ্য খুটিঁতে ৪৪০ ভল্টের বিদ্যুৎ সরবরাহ এলটি লাইন থাকতে দেখা গেছে। রাস্তার ওপর থাকা বিদ্যুৎ সঞ্চালনকৃত তারের দুরত্ব ভুমি থেকে ২/৩ মিটারেরও কম। অনেক স্থানে বিদ্যুতের তার ও খুঁটি ঝুলে রয়েছে। অসাবধান হয়ে চলাফেরা করলেই ঘটবে দুর্ঘটনা। জীবন্ত গাছের সাথে গাছ ও তারের মাঝখানে বাঁেশর চটি রেখে গাছের সাথে বেধে ৪৪০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন টানানো হয়েছে। এতে যেকোন সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে বড়ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। চম্পকলতা গ্রামের সত্তার আলী জানান, চম্পকলতা প্রাইমারী স্কুলের উত্তর পাশে ও জামে মসজিদের মধ্যস্থানে দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত নিচ দিয়ে মেইন লাইন ফেলা ও নড়বড়ে কাঠের খুঁটি ভেঙ্গে পথচারীরা বিদ্যুতায়িত হওয়ার আশংকা রয়েছে। কালিনগর গ্রামের মখদ্দছ আলীর বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটি খুঁটি দীর্ঘ দিন থেকে ঝুলে রয়েছে। যেকোন সময় পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বারবার পিডিবি’র অভিযোগ কেন্দ্রে জানানোর পরও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মনতৈল গ্রামের লাল মিয়া ও কালিনগর গ্রামের আব্দুর রূপ জানান, পিডিবি বিদ্যুৎ লাইন মেরামত না করেই অস্বাভাবিক দুরত্বে ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগ দিচ্ছে। লাইনের ওপর থাকা গাছপালা কাটা হয় না। হাত দিয়ে ছুয়া যায় মেইন লাইন। লাইন রক্ষণাবেক্ষণে পিডিবি’র দায়িত্বহীনতায় তারা প্রশ্ন তুলেন প্রতিবছর লাইনের গাছপালা কর্তন ও মেরামতের জন্য পিডিবি কি কোন বরাদ্দ দেয় না। আর দিয়ে থাকলে এগুলো যায় কোথায় ? তাদের অবহেলায় আর কত মানুষকে প্রাণ দিতে হবে।
পিডিবি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনছারুল কবীর শামীম কিছু এলাকায় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহের সত্যতা স্বীকার করে জানান, তিনি মুলত পিডিবি’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। তারপরও সাধ্যমত রক্ষণাবেক্ষণ করছেন। উল্লেখিত এলাকায় প্রজেক্টের মাধ্যমে নতুন লাইন নির্মাণের কাজ চলছে।#