প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুল ছাত্রীকে প্রকাশ্যে কোপালো বখাটে
- আপডেটের সময় : ০৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মে ২০১৯
- / ৮০৫ টাইম ভিউ
ছয়ফুল আলম সাইফুলঃ কুলাউড়ায় প্রেমের প্রস্তাবে প্রত্যাখান করায় সামিরা আক্তার (১৫) নামে স্কুল ছাত্রীকে প্রকাশ্যে মাথায় দা দিয়ে কোপালো এক বখাটে। এসময় বখাটে জুয়েল আহমদকে (২০) স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে। আহত ছাত্রী সামিরার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার ২৭ এপ্রিল দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার কুলাউড়া-ঘাটের বাজার সড়কের মীরশংকর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত ছাত্রী কুলাউড়া পৌর শহরের সাদেকপুরস্থ আল হেরা ক্যাডেট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। আহত সামিরা উপজেলার মীরশংকর গ্রামের প্রবাসী সরফ উদ্দিনের বড় মেয়ে। স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ছাত্রীর মা সাহারা বেগম এবং স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, সামিরা যখন ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে উপজেলার ভূকশীমইল ইউনিয়নের সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকাবস্থায় সাদিপুর গ্রামের মৎস্যজীবী বকুল মিয়ার পুত্র জুয়েল আহমদ প্রায়ই তাকে (সামিরাকে) উত্যাক্ত করতো। বিষয়টি ছাত্রীর অভিভাবকরা স্থানীয় মেম্বার ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহতি করেন । পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জুয়েলের পিতা ও ভাইদের ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে উত্যাক্ত করবে না ওই মর্মে তাদের কাছ থেকে মুছলেখা নেওয়া হয়। এঘটনার পর ভয়ে ওই ছাত্রীর অভিভাবক তাকে (সামিরা) কুলাউড়া পৌর শহরের আলহেরা ক্যাডেট স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি করেন। এরপরও ওই যুবক সামিরাকে প্রায়ই উত্যাক্ত করতো। শনিবার বাড়িতে ফেরার উদ্দেশে স্কুল থেকে দুপুরে সিএনজি অটোরিক্সা যোগে মীরশংকর বাজারে গিয়ে নামে সামরিা। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বাড়িতে প্রবেশের সময় রাস্তায় একা পেয়ে জুয়েল প্রকাশ্যে ধারালো দা দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ী কোপাতে থাকে।
এসময় আশেপাশের স্থানীয়রা সামিরার চিৎকার শোনে এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তার মাথায় ও কানে দায়ে কোপ রয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এদিকে স্থানীয়রা জুয়েলকে আটক করে কুলাউড়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। ছাত্রীর মা সাহারা বেগম আহাজারী করে বলেন জুয়েল আমার বড় মেয়েকে সব সময় উত্যোক্ত করতো। স্থানীয় মেম্বার বিষয়টি জানতেন। আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। আজ আমার মেয়েটি জীবন সংকটে । আমি আমার মেয়ের হত্যার চেষ্টাকারী বিচার চাই। সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির জানান, ওই ছাত্রী ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে থাকাবস্থায় জুয়েল তাকে উত্যোক্ত করতো। বিষয়টি জানার পর আমরা স্কুলের শিক্ষক ও তাদের এলাকার মেম্বারসহ জুয়েল ও তাঁর পিতাকে ডেকে নিয়ে ওই যুবকের ও তার অভিভাবকের মুছলেখা রাখি যাতে পরবর্তীতে ছাত্রীকে উত্যোক্ত না করে। কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ারদৌস হাসান বলেন, জুয়েলকে আটক করা হয়েছে। জুয়েলের পিতা ও ভাইকে আটকের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।