প্রেমিকাই যখন অপহারণকারী চক্রের সদস্যা
- আপডেটের সময় : ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুন ২০২০
- / ৩৩১ টাইম ভিউ
আজমিরীগঞ্জ প্রতিনিধি :: ২০২০ সালের বৈশ্বিক কোভিড ১৯ যুদ্ধের অগ্রভাগের সৈনিক বাংলাদেশ পুলিশ করোনা যুদ্ধের পাশাপাশি অপরাধ দমনেও দিনরাত কাজ করছেন নিরলস ভাবে ৷ এমনি একটি অপহরণকারী চক্রের মুখোঁশ উন্মোচন করেছেন হবিগঞ্জের (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ সেলিম এবং বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ এমরান হোসেন সহ বানিয়াচং এবং আজমিরীগঞ্জ থানার দুটো চৌকস টিম ৷
হবিগঞ্জের বানিয়াচং এ মোবাইলে পরিচিত প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়ে অপহরণকারী চক্রের হাতে জিম্মি হয় আজমিরীগঞ্জের প্রেমিক আনিসুর রহমান রাম্মি (২৪) ৷ পরে পুলিশের সাহসী অভিযানে উদ্ধার হয় প্রেমিক রাম্মি ,আঠক করা হয়েছে ঐ চক্রের ৪ অপহরণকারীকে ৷
পুলিশ সুত্রে জানাযায় ,আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের শরীফ নগর( নতুনবাড়ী)র বাসিন্দা সফিক মিয়ার বিবাহিত ছেলে আনিসুর রহমান রাম্মি ( ২৪ )এর সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় বানিয়াচং ৪ নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়নের সাগরদীঘি (দক্ষিণ পাড়) গ্রামের ছমেদ মিয়ার মেয়ে মেঘনা আক্তার সুজানা ওরফে সাথীর সাথে ৷ এই পরিচয় এক সময় প্রেমে রুপ নেয় ৷ এরই প্রেক্ষিতে গত ১১ই জুন বৃহঃস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রেমিক রাম্মিকে ঐ মোবাইল প্রেমিকা সাথী তার সাথে দেখা করতে বানিয়াচং ৪ নং ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ডাকে ৷ কিন্তু প্রেমিক রাম্মি তখন জানতো না সে সংঙ্গবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের পাতানো ফাঁদে পা দিতে যাচ্ছে!
প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিতে আনিসুর রহমান রাম্মি রাত ৮ টায় বানিয়াচং যায় ,দেখা করার নির্ধারিত স্হানে পৌছানো মাত্র প্রেমিকা সাথীর সহযোগীরা রাম্মিকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্হানে নিয়ে যায় ৷ এবং অপহরণ কারীরা রাম্মিকে ভয় ভীতি দেখিয়ে রাম্মির পিতা সফিক মিয়ার কাছে মোবাইলে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করে ৷
ছেলের জীবনের মায়ায় বাধ্য হয়ে সফিক মিয়া ১০ হাজার করে ২ বারে ২০০০০ টাকা অপহরণকারীদের দেয়া বিকাশ নাম্বারে প্রেরণ করেন ৷কিন্তু এই টাকা পেয়ে অপহরণ কারীদের লোভ আরো বেড়ে যায় এবং আবার সফিক মিয়ার কাছে আরো টাকা দাবী করে ৷
নিরুপায় হয়ে সফিক মিয়া রাত আনুমানিক ১২ টায় আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোশারফ হোসেন তরফদারকে বিষয়টি অবগত করেন ৷
আজমিরীগঞ্জ থানা থেকে বিষয়টি বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ ইমরান হোসেন কে জানানো হয় ৷
বিষয়টি তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) সার্কেল শেখ মোঃ সেলিমকে অবহিত করা হয় ৷
তরুণ, বিচক্ষণ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ সেলিম সাথে সাথে বিষয়টি হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা পিপিএম,বিপিএম কে অবগত করেন এবং বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ সহ একটি টিম এবং আজমিরীগঞ্জ থানার এস আই জয়ন্ত তালুকদার সহ দুটো চৌকস টিম নিয়ে অপহরণ কারীদের ধরতে মধ্য রাতেই মাঠে নামেন ৷ মোবাইল বিকাশ নাম্বারের সুত্র ধরে ১জন বিকাশ এজেন্টের দেয়া তথ্যমতে রাত আনুমানিক ২ টায় অপহরণকারী চক্রের নেতা মশিউরের বানিয়াচং ৪নং ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন বাসা থেকে অপহৃত রাম্মিকে জিম্মি অবস্হায় উদ্ধার করা হয় ৷ পুলিশের উপস্হিতি টের পেয়ে মশিউর সহ কয়েকজন পালিয়ে গেলেও আটক করা হয় অপহরণকারী চক্রের ৪ সদস্যকে ৷
আটককৃতরা হলো, বানিয়াচং থানার জাতুকর্ণপাড়া (মাইজের মহল্লা)র মৃত মোক্তাদির হোসেনের পুত্র মনির হোসেন(২৪) ,একই গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়া (১৯), যাত্রাপাশা(কান্দিপাড়া) গ্রামের আশাদুল মিয়ার ছেলে হেলাল মিয়া (২০),এবং একই গ্রামের সালাউদ্দিন মিয়ার ছেলে জাহেদ মিয়া (২০) ৷
এছাড়াও পলাতক রয়েছে অপহরণকারী চক্রের মুল হোতা সাগরদিঘী(দক্ষিণ পাড়) গ্রামের মন্জিল মিয়ার পুত্র মশিউর রহমান (৩৫)এবং তার সহযোগী যাত্রাপাশা (দিঘীড়পাড়ের) সামছু উদ্দিন মিয়ার ছেলে হিফজুর(২৩) ৷ আটককৃতদের কাছ থেকে মুক্তিপণের ৪ হাজার টাকা ও ২ মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় ৷
এ বিষয়ে অপহৃত আনিসুর রহমান রাম্মির পিতা সফিক মিয়া বাদী হয়ে- আটক ৪ জন ও পলাতক ২ জন সহ মোবাইল প্রেমিকা মেঘলা আক্তার সুজনা ওরফে সাথীকে আসামী করে বানিয়াচং থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন, মামলা নং -১১ ৷