ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে

প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৩:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • / ১৬৯ টাইম ভিউ

প্রিয়জনের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন….

প্রিয়জনের মানসিক রোগ যদি বুঝতে না পারেন ঘটে যেতে ভয়ানক দূর্ঘটনা। এমনকি হত্যাকাণ্ড। কিছু কিছু মানসিক রোগ আছে যাতে রোগীর বিবেক বিবেচনা একেবারেই কাজ করেনা। তিনি কি করছেন না করছেন কোন হুশ জ্ঞান নেই।

একটি ভয়ংকর কেইস হিস্ট্রি বলি,

“মিসেস সেলিনা (ছদ্মনাম) বাইপোলার মোড ডিসওর্ডার এর রোগী গত ২০ বছর যাবৎ। কিন্তু আজো পরিবারের লোক বুঝতেই পারেন নি তিকি যে একটি ঘোরতর মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। অথচ এ রোগে আক্রান্ত হবার ফলে প্রথম এপিসোডে আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে তার নিজের ৭ মাসে সন্তান কে তিনি নিজ হাতে পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলেছিলেন।

২য় এপিসোডে তিনি গ্রামের ৮ বছরের এক বাচ্চা ছেলেকে ইট দিয়ে মাথা থেতলে দিয়ে প্রায় মেরে ফেলেছিলেন। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। তিনি জেলে যান। সনাক্ত হয় তার মানসিক রোগ।

৩য় এপিসোডে তার পরিবারের আরেক সদস্য সামান্যের জন্যে হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই পেয়েছেন। ৩ য় এপিসোডের মানসিক রোডে তিনি ধারালো দা ধার দিয়ে রেডি করেছেন। এবার বলেছেন নিজের জন্মদাতা আজ রাতেই কয়েকশো টুকরো করবেন।

কথাটি শোনা মাত্রই পরিবারের সদস্য ভয় পেয়ে যান। সাথে সাথে আমার চেম্বারে ধরে বেঁধে নিয়ে আসেন। দ্রুত তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করি। সিমটম যা যাওয়া পর্যন্ত সবাইকে সতর্ক সাবধান থাকতে বলি।”

বাইপোলার মোড ডিসওর্ডার রোগটি সব সময় থাকেনা। কয়েকমাস পর পর বা কয়েক বছর পর পর এ রোগের উপসর্গ হঠাৎ করে দেখা দিয়ে থাকে এবং তা দ্রুত তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে যায়। অবাক বিষয় হলো, এ উপসর্গ স্থায়ী থাকে অল্প কয়েক দিন বা মাত্র কয়েক মাস। এর পর রোগী ভালো, স্বাভাবিক। কিন্তু সেই উপসর্গ কালীন সময়ে রোগীকে ঠিকমতো ম্যানেজ করতে না পারলে ঘটে যেতে পারে ভয়ানক পরিণতি।

কেনো মর্মান্তিক ঘটনা গুলো ঘটে যায়?

এ রোগের উপসর্গ যখন থাকেনা অর্থাৎ In between the episode – ইন বিটুয়িন দা এপিসোড , তখন রোগী থাকেন সম্পুর্ন সুস্থ, আপনজন থাকেন বিভ্রান্ত। তারা বুঝতেই পারেন না তিনি যে ভয়ানক এক মানসিক রোগে আক্রান্ত, তিনি যে আবার তার সেই পুরোতন রোগের বশবর্তী হয়ে পূণরায় ভয়ংকর কিছু একটা করে ফেলতে পারেন।

অনেক সময় সচেতনতার অভাবে রোগীর স্বজনরা ভাবেন ভন্ড পীর, কহিরাজ আর তান্ত্রিকদের পানি, তেল আর টূটকা তাবীজ এ রোগী ভালো হয়ে গেছে

এ রোগ কেনো হয়?

ব্রেইনের নিউরোট্রান্সমিটার ডোপামিন নি:সরনের তারতম্যের জন্যে এ রোগ হয়। এ রোগটি চিকিৎসা সম্পুর্ন নিরাময় হয়।

চিকিৎসা কি?

ডোপামিন রিসেপ্টর ব্লকার-এন্টিসাইকোটিক এবং মোড স্ট্যাবিলাজার নির্দিষ্ট মাত্রায়, নির্দিষ্ট মেয়াদে ব্যবহার করলে এ রোগ সম্পুর্ন নিরাময় হয়ে যায়।

আসুন মানসিক রোগ নিয়ে সচেতন হই।

ডা. সাঈদ এনাম
এমবিবিএস (ডিএমসি) এমফিল (সাইকিয়াট্রি)
সহকারী অধ্যাপক সাইকিয়াট্রি
সিলেট মেডিকেল কলেজ।

পোস্ট শেয়ার করুন

প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন

আপডেটের সময় : ০৩:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

প্রিয়জনের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন….

প্রিয়জনের মানসিক রোগ যদি বুঝতে না পারেন ঘটে যেতে ভয়ানক দূর্ঘটনা। এমনকি হত্যাকাণ্ড। কিছু কিছু মানসিক রোগ আছে যাতে রোগীর বিবেক বিবেচনা একেবারেই কাজ করেনা। তিনি কি করছেন না করছেন কোন হুশ জ্ঞান নেই।

একটি ভয়ংকর কেইস হিস্ট্রি বলি,

“মিসেস সেলিনা (ছদ্মনাম) বাইপোলার মোড ডিসওর্ডার এর রোগী গত ২০ বছর যাবৎ। কিন্তু আজো পরিবারের লোক বুঝতেই পারেন নি তিকি যে একটি ঘোরতর মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। অথচ এ রোগে আক্রান্ত হবার ফলে প্রথম এপিসোডে আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে তার নিজের ৭ মাসে সন্তান কে তিনি নিজ হাতে পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলেছিলেন।

২য় এপিসোডে তিনি গ্রামের ৮ বছরের এক বাচ্চা ছেলেকে ইট দিয়ে মাথা থেতলে দিয়ে প্রায় মেরে ফেলেছিলেন। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। তিনি জেলে যান। সনাক্ত হয় তার মানসিক রোগ।

৩য় এপিসোডে তার পরিবারের আরেক সদস্য সামান্যের জন্যে হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই পেয়েছেন। ৩ য় এপিসোডের মানসিক রোডে তিনি ধারালো দা ধার দিয়ে রেডি করেছেন। এবার বলেছেন নিজের জন্মদাতা আজ রাতেই কয়েকশো টুকরো করবেন।

কথাটি শোনা মাত্রই পরিবারের সদস্য ভয় পেয়ে যান। সাথে সাথে আমার চেম্বারে ধরে বেঁধে নিয়ে আসেন। দ্রুত তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করি। সিমটম যা যাওয়া পর্যন্ত সবাইকে সতর্ক সাবধান থাকতে বলি।”

বাইপোলার মোড ডিসওর্ডার রোগটি সব সময় থাকেনা। কয়েকমাস পর পর বা কয়েক বছর পর পর এ রোগের উপসর্গ হঠাৎ করে দেখা দিয়ে থাকে এবং তা দ্রুত তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে যায়। অবাক বিষয় হলো, এ উপসর্গ স্থায়ী থাকে অল্প কয়েক দিন বা মাত্র কয়েক মাস। এর পর রোগী ভালো, স্বাভাবিক। কিন্তু সেই উপসর্গ কালীন সময়ে রোগীকে ঠিকমতো ম্যানেজ করতে না পারলে ঘটে যেতে পারে ভয়ানক পরিণতি।

কেনো মর্মান্তিক ঘটনা গুলো ঘটে যায়?

এ রোগের উপসর্গ যখন থাকেনা অর্থাৎ In between the episode – ইন বিটুয়িন দা এপিসোড , তখন রোগী থাকেন সম্পুর্ন সুস্থ, আপনজন থাকেন বিভ্রান্ত। তারা বুঝতেই পারেন না তিনি যে ভয়ানক এক মানসিক রোগে আক্রান্ত, তিনি যে আবার তার সেই পুরোতন রোগের বশবর্তী হয়ে পূণরায় ভয়ংকর কিছু একটা করে ফেলতে পারেন।

অনেক সময় সচেতনতার অভাবে রোগীর স্বজনরা ভাবেন ভন্ড পীর, কহিরাজ আর তান্ত্রিকদের পানি, তেল আর টূটকা তাবীজ এ রোগী ভালো হয়ে গেছে

এ রোগ কেনো হয়?

ব্রেইনের নিউরোট্রান্সমিটার ডোপামিন নি:সরনের তারতম্যের জন্যে এ রোগ হয়। এ রোগটি চিকিৎসা সম্পুর্ন নিরাময় হয়।

চিকিৎসা কি?

ডোপামিন রিসেপ্টর ব্লকার-এন্টিসাইকোটিক এবং মোড স্ট্যাবিলাজার নির্দিষ্ট মাত্রায়, নির্দিষ্ট মেয়াদে ব্যবহার করলে এ রোগ সম্পুর্ন নিরাময় হয়ে যায়।

আসুন মানসিক রোগ নিয়ে সচেতন হই।

ডা. সাঈদ এনাম
এমবিবিএস (ডিএমসি) এমফিল (সাইকিয়াট্রি)
সহকারী অধ্যাপক সাইকিয়াট্রি
সিলেট মেডিকেল কলেজ।