প্রসংগ ভন্ড পীরে কামেল হজরত ‘কুস্তিবাবা’ ও মানসিক রোগ ‘বাইপোলার মোড ডিসওর্ডার
- আপডেটের সময় : ০২:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৩৯১ টাইম ভিউ
প্রসংগ ভন্ড পীরে কামেল হজরত ‘কুস্তিবাবা’ ও মানসিক রোগ ‘বাইপোলার মোড ডিসওর্ডার’ :
বাই পোলার মোড ডিসওর্ডার, কারেন্টলি ম্যানিক (Bipolar Mood Disorder Currently Manic) একটি অদ্ভুত মানসিক রোগ।
এ রোগে আক্রান্ত রোগী মনে করেন, তার গায়ে হঠাৎ হঠাৎ অশরীরী আত্মা ভর করে, তার কি যেনো হয়ে যায় তার, সে অদ্ভুত গায়েবী, আধ্যাত্মিক শক্তি পায় এবং সেই গায়েবী শক্তি দিয়ে সে অকল্পনীয় সব কাজ করতে পারে, সে মানুষের ভবিষ্যত বলে দিতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেক সময় রোগী ভয়ংকর ভায়োলেন্ট হয়ে নিজের বা অন্যের ক্ষতি করতে পারে। রোগী অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলতে পারে, গায়েবী আওয়াজ ও শুনতে পারে যাকে বলা হয় জ্বীনের বাদশাহ আওয়াজ।
ক্ষেত্র বিশেষে এতো অবুঝ আর ভায়োলেন্ট থাকে যে গত সপ্তাহে এ রোগে আক্রান্ত এক তরুন মিস ম্যানেজমেন্ট হয়ে তার মা’কে দা দিয়ে নাকে মুখে এমন ভাবে আঘাত করে ফলে মায়ের নাক ও এক চোখ নস্ট হয়ে যায়। অবশেষে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়। সে তরুন পরবর্তীতে মানসিক রোগের চিকিৎসায় এখন সম্পুর্ন সুস্থ তার জ্বীন ভুত পেত্নী আসা দূর হয়েছে।
ধরণ:
বাইপোলার রোগটি সিজোফ্রেনিয়া রোগের মতো নয়। এটা এপিসোডিক আকারে হয়ে থাকে অর্থাৎ কিছু দিন পর পর রোগ দেখা দেয়। কিছু দিন যেমন মাস দু’মাস, ছমাস, বা বছর বছর পর রোগী অদ্ভুত আচরণ শুরু করবে। কখনও কখনও এমন কি সে বলবে, যে আমার কাছে ভুত,পেত্নী, বাতাস আসছে বা জ্বীন আসছে। রোগের সিমটম ১ মাস, দু’মাস বা তার ও কম বেশ স্থায়ী হতে পারে।
বাইপোলার এর অর্থ দুইটা প্রান্ত। অর্থাৎ রোগী হয় তীব্র মেজাজী বা ভায়োলেন্ট থাকতে পারে আবার হয়তো রোগী মারাত্মক ডিপ্রেসড বা বিষন্ন থাকতে পারে।
আমাদের প্রচলিত কুসংস্কার:
ভন্ড মোল্লা, তান্ত্রিক ও কবিরাজদের ভাষায় কয়দিন পর পর রোগীর গায়ে ভুতের আছর হয় এবং ভন্ডরা ভুত ছাড়ার নাম করে লাখ লাখ টাকার হাদিয়া বা উপঢৌকন হিসেবে নেয়।
শুধু তাই নয় অনেক সময় ভুত জ্বীন হাজির হয়েছে বলে ভন্ড ঘরের সবাইকে বের করে দিয়ে মহিলা রোগীদের সাথে কুস্তি শুরু করে দেয় অর্থাৎ শ্লীলতাহানিতে লিপ্ত হয়। বাহিরে অপেক্ষায় রত রোগীর লোক মনে করেন মোল্লা বা তান্ত্রিক ভুত ছাড়াচ্ছেন। আসলে কি হয় সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
শ্লীলতাহানি কুস্তি নির্যাতন শেষে রোগী ক্লান্ত হয়ে শান্ত হয় আর ঘর্মাক্ত ভন্ড হজরত ‘কুস্তিবাবা’ বাহবা নেয়।
চিকিৎসা:
বাইপোলার মোড ডিসওর্ডার এর আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী ভালো হচ্ছে মানসিক হাসপাতালে। মুড স্টাবিলাইজার এক মাত্র ঔষধ। রোগী বেশী ভায়োলেন্ট হলে এন্টিসাইকোটিক শর্ট কোর্স দিতে হয়। ভুল বশত পল্লি চিকিৎসক এসব রোগীকে ফ্লিপেটিক্সল মেলিট্রাসিন কম্বিনেশন একটি ড্রাগ দেয়। ফলে রোগী ধীরে ধীরে আরো ভায়োলেন্ট হয়। অর্থাৎ বিষয়টি আগুনে পানি ঢালার পরিবর্তে পেট্রোল ঢালা।