দেশের হয়ে অনেক বছর ক্রিকেট খেলতে চান সাকিব
- আপডেটের সময় : ০৮:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৭
- / ১৬৩৭ টাইম ভিউ
দেশের হয়ে আরও অনেক বছর ক্রিকেট খেলতে চান বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টি২০ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আমরা বিশ্বকাপ জিততে চাই। হোম সিরিজে বিশ্বের যে কোন দলের সঙ্গে জেতার সামর্থ্য আমাদের রয়েছে। আশা করি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও আমরা জিততে পারবো। ক্রীড়াঙ্গনের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে আড্ডায় এসব কথা বলেছেন ক্রিকেটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে নিউইয়র্কের কুইন্স প্যালেসে বিশ্বসেরা এই ক্রিকেটারকে কাছে পাওয়া এবং তার সঙ্গে মন খুলে আড্ডা দেওয়ার সুযোগটি করে দিয়েছিলেন নিউইয়র্কের শো টাইম মিউজিক অ্যান্ড প্লের (এসএমপি) কর্ণধার আলমগীর খান আলম। আড্ডায় সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাকিবের সঙ্গে আলাপচারিতা।
অনেক নাটকের পর অস্ট্রেলিয়া টিমের বাংলাদেশ সফর নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাকিব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দেশের মাটিতে যে কোন দলের সঙ্গে আমাদের জেতার সামর্থ্য রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নিজেদের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও জয়লাভ করেছি। অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে আসছে আমরা খুবই এক্সাইটেড।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, সাবেকরা আমাদের সিঁড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। তারা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আমরা আরেকটি পর্যায়ে নিয়ে গেছি। আগামী প্রজন্ম আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। বড় বড় সাফল্য আনবে। তিনি বলেন, ২০০৩ সাল থেকেই আমাদের ক্রিকেট উন্নতির দিকে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট সঠিক পথেই এগুচ্ছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কোথায় রেখে যেতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব বলেন, যতদিন সম্ভব আমি ক্রিকেট খেলবো। আশা করছি আরো ১০ বছর জাতীয় দলে খেলতে পারবো। আর আমার টার্গেট- বিশ্বকাপ জেতা।
বলিউড বাদশাহ এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক শাহরুখ খানকে নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শাহরুখ খান ফ্রেন্ডলি মানুষ। আমার সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ। সব সময় তিনি আমার এবং আমার পরিবারের খোঁজ-খবর নেন। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। যেমন সন্তানের ভাল বাবা হওয়া এবং ভাল স্বামী হওয়া। তাছাড়া তিনি বাংলাদেশ দলের প্রায় সকল খেলাই দেখেন
স্ত্রী শিশিরের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব অকপটে স্বীকার করেন, ফেসবুকে পরিচয়। প্রথমে মনে করেছিলাম ফেক আইডি। পরে দেখলাম ফেক না রিয়েল। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শিশিরের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল লন্ডনে। আমি ইংলিশ কাউন্টি খেলতে গিয়েছিলাম। দ্বিতীয় বার দেখা সম্পর্কে আমি এখনো কিছু বলিনি, বলতেও চাই না। বই লিখলে কোন দিন ঘটনা লিখবো। আর তৃতীয় দেখা ঢাকাতে। বলতে পারেন বিয়ে। আমি খুব তাড়াহুড়া করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখন বলতে পারি বিয়েটাই হলো আমার লাইফের ভাল গিফট।
স্ত্রী শিশিরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সাকিব বলেন, আমার ক্রিকেটে শিশির, আমার পরিবার এবং বন্ধুদের অবদান রয়েছে। তবে স্ত্রীর অবদান বেশি।
দুঃখ এবং খুশি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১২ সালে এশিয়া কাপে ২ রানে পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়া এবং বিশ্বকাপে ভারতের কাছে ২ রানে হেরে যাওয়ায় দুঃখ পেয়েছিলাম। সত্যি কথা বলতে কি আমি সবচেয়ে সুখী মানুষ। এ জন্য আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন ছিল আমার সন্তানের জন্মের দিন।
আমেরিকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত‚তাদের ক্রিকেট খেলা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, আমি জানি এখানে আমাদের অনেক সাবেক খেলোয়াড়রা এসে খেলেন। যারা এখানে ক্রিকেট খেলছেন তাদের তিনি ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমেরিকা যত তাড়াতাড়ি ক্রিকেটে ভাল করবে, ক্রিকেট বিশ্বেরও উন্নতি হবে। হাসতে হাসতে বলেন, বলা তো যায় না অবসর নিয়ে হয়ত আমেরিকার কোচ হয়েও আসতে পারি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার অবদান নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবার অবদান আছে। তাদের অবদান ছিল বলেই আমরা টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছি। আমার মতে শ্রীলংকার অবদান বেশি, ভারতেরও অবদান রয়েছে আর্থিক দিক থেকে, আর পাকিস্তান তো নিজেরাই সমস্যায় রয়েছে। সেখানে নিরাপত্তাজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে ম্যাচ হচ্ছে না।
প্রশ্ন উত্তর পর্ব শেষে কয়েকজনের হাতে সাবিক ক্রেস্ট তুলে দেন এবং সবার সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক সভাপতি এম আজিজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক জাতীয় ক্রীড়াবিদ ও নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ঠিকানার প্রেসিডেন্ট ও সিইও এবং সাঈদ-উর-রব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাঈদ রহমান মান্নান, বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রিজিয়া পারভীন, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবীব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন, পরাণ চৌধুরী, খায়রুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, আসাদুল ইসলাম আসাদ প্রমুখ।