জার্মানির ছেলেদের দলে ভারতের নারী ক্রিকেটার! ডাক পেয়েছে জাতীয় দলে
- আপডেটের সময় : ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০
- / ৩৩১ টাইম ভিউ
ক্রিকেট বিশ্বে জার্মানির কোনো পরিচিতি নেই। তারা ফুটবলে বিশ্বখ্যাত। এই অখ্যাত ক্রিকেট খেলুড়ে দেশটিতেই এবার দারুণ এক ঘটনা ঘটে গেছে। সম্প্রতি সেখানে আয়োজন করা হয়েছিল ছেলেদের টি-টেন ক্রিকেট লিগ। সেই লিগে একটি দলের উইকেটকিপার হিসেবে ছিলেন ভারতের বেঙ্গালুরুর মেয়ে শারণ্যা সদারঙ্গানি। তার স্বামীও একই দলে খেলেছেন। ক্রিকেটবিশ্বে তোলপাড় ফেলা এই ঘটনার পেছনের ঘটনার দিকে নজর দেওয়া যাক।
সদ্য ২৫ বছরে পা দেওয়া শারণ্যাকে জার্মানির ক্রিকেট মাঠে সবাই ‘শারু’ নামে চেনে। উত্তর জার্মানির কুমারফিল্ড শহর থেকে শারণ্যা বলেন, ‘আমি কুমারফেল্ডার স্পোর্টসভেরেন (কেএসভি) ক্লাবের কাছে কৃতজ্ঞ তারা আমাকে এই টি-টেন লিগে খেলার সুযোগ দিয়েছে।’ এই লিগে শারণ্যার দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ৬ ম্যাচে উইকেটের পিছনে ৮টি ডিসমিসাল করেছেন শারণ্যা। টুর্নামেন্টে যা সবচেয়ে বেশি। এরপর তিনি জার্মান জাতীয় ক্রিকেট দলে ডাক পেয়েছেন।
কর্নাটকের অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে খেলেছিলেন শারণ্যা। ক্রিকেট শেখা শুরু করেন ‘কর্নাটক ইন্সটিটিউট অফ ক্রিকেটে’। তার কথায়, ‘সেখানে ইরফান সেইত, মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন আর মাসুদ স্যার আমাকে ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন।’ আর প্রিয় ছাত্রীকে নিয়ে কোচ ইরফান বলেছেন, ‘শারণ্যা আর ওর এক কাজিন আসত ক্রিকেট শিখতে। দুজনেরই ভালো প্রতিভা ছিল। শারণ্যার বাবা ছিলেন মোটিভেশনাল স্পিকার। শারণ্যার মাঝেও সেই গুণ আছে। সে সবসময় সতীর্থদের উৎসাহ দিতে পারত।’
ভারত থেকে জার্মানি যাওয়ার গল্প নিয়ে শারণ্যা বলেন, ‘৭ বছর আগে পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডে যাই। এসেক্স কাউন্টির হয়ে কিছু ম্যাচ খেলেছিলাম। পরে পড়াশোনার জন্য উত্তর জার্মানিতে যাই। ইংল্যান্ডে থাকা অবস্থায় জার্মান ক্রিকেট সংস্থার মোনিকা লাভডের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। ফলে জার্মানিতে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই আমি ক্লাব পেয়ে যাই। আবারও ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেয়ে খুব ভালো লেগেছিল।’
ইংল্যান্ড ছাড়া ইউরোপের বেশিরভাগ ক্রিকেট দল আসলে এশিয়ান বংশোদ্ভুত ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি। শারণ্যার কেএসভি ক্লাবও তাই। কিছু মানুষ ফুটবলের দেশ জার্মানিতে ক্রিকেট জনপ্রিয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। যাদের বেশিরভাগই এশিয়ান। শারণ্যা বলেছেন, ‘আমাদের কেএসভি ক্লাবেই বেশিরভাগ ক্রিকেটার ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের। তবে আমাদের যুব দলে স্থানীয় জার্মান খেলোয়াড়ও আছে।’
শারণ্যর আইডল সাবেক অজি তারকা অ্যাডাম গিলক্রিস্ট এবং ইংল্যান্ডের নারী ক্রিকেট তারকা সারা টেইলর। ঘটনাচক্রে দুজনের সঙ্গেই তার দেখা হয়েছিল। শারণ্য বলেন, ‘একবার আইপিএলের সময় বেঙ্গালুরুতে গিলক্রিস্টের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আর এসেক্সে খেলার সময় প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছি সাসেক্সের সারাকে। সারার কিপিং দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। জার্মানির জাতীয় দলে ডাক পেয়েছি। আশা করি জার্মানি ও সেই সঙ্গে ইউরোপে মেয়েদের ক্রিকেটের উন্নতিতে কিছু অবদান রাখতে পারব।