ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে কুলাউড়া বিএনপির দীর্ঘ যুগ পর কোন্দলের অবসান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন বাঁচার লড়াইয় পেশা বদল

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০
  • / ৬৮৬ টাইম ভিউ

কাওরান বাজার, জেনিথ টাওয়ারের গলি। এই গলির মাথায় এক যুবক চানাচুর বিক্রি করেন। নাম সুমন হাসান। চানাচুর মাখানো দেখেই বোঝা যায় তিনি এ পেশায় নতুন। জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিনি। লেখাপড়া করেন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে। রাজধানীতে থাকতেন। কাজ করতেন বসুন্ধরা মার্কেটের একটি রেস্টুরেন্টে।

বলেন, ভালোই ইনকাম হতো। বেতন দিতো ১০ হাজার টাকা। আর টিপস থেকে আসতো আরো ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।
হঠাৎ এলোমেলো হয়ে গেলো সব। করোনার ছোবলে চাকরিটা হারালেন। সুমন দরিদ্র পরিবারের ছেলে। বাবা মা থাকেন পাবনায়। সুমন মাসে ৫ হাজার টাকা পাঠাতেন। স্বল্প আয়ে চলত তার লেখাপড়া ও বাবা মায়ের দু’বেলার আহার।

সুমন বলেন, করোনার শুরুতে বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। মার্কেট বন্ধ থাকলেও প্রথম মাসে ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন দোকান মালিক। কিন্তু তারপর ব্যবসা বন্ধ চাইতেও পারি না। বাড়িতে বসে থেকে চলছিল না জীবন। আবার চলে আসি ঢাকায়। কোনো উপায় না দেখে ঝাল মুড়ি বিক্রি করা শুরু করি। এখন দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাভ হয়।
রাজধানীর মিরপুর ২ মোল্লাপাড়া এলাকায় ক’দিন ধরে একটি নতুন চায়ের দোকান দিয়েছেন রাসেল মাহমুদ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স করেছেন। চাকরি করতেন একটি মোবাইল কোম্পানিতে। বিয়ে করেছেন ৮ মাস আগে। করোনার কারণে চাকরিটা হারান। খুলে বসেন চায়ের দোকান। নতুন কাস্টমার ধরতে তার আপ্রাণ চেষ্টা। বলেন, চাকরি হারিয়ে বাসা ছাড়তে হয়। নতুন বউকে বাধ্য হয়ে বাড়িতে পাঠিয়েছি। করোনার এই সময় নতুন চাকরি পাওয়া দায়। তাই একটা দোকান পেলাম সেটাতে চায়ের দোকান দিলাম।
দোকানটি ছিল আগে একটি সিঙ্গাড়া সমুচার দোকান। চালাতেন আমিনুর রহমান। তার সঙ্গে কথা হয় মুঠোফোনে। তিনি জানান, দোকানের ভাড়া ৩ হাজার টাকা। করোনার কারণ লোকশানের মুখে পড়তে হয়। রমজান মাসে কিছুটা আয় হলেও পরবর্তীতে আবার আয় কমে যায়। তাই ছেড়ে দেন দোকানটি। জানান, এই করোনার সময় জমানো প্রায় ৩০ হাজার টাকা বসে বসে খেয়েছি। যেটি তিনি মেয়ের বিয়ের জন্য জমাচ্ছিলেন। এখন কি করেন জানতে চাইলে বলেন, বাড়িতে নারিকেলের নাড়ু তৈরি করে বিভিন্ন দোকানে দেই। এই দিয়ে কোনরকম চারটা ডালভাত জোটে।
লালমাটিয়া এলাকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক এখন ছুটে বেড়ান মোটরসাইকেল নিয়ে। বলেন স্কুল বন্ধ, বন্ধ বেতনও। বাসাভাড়া খাওয়া খরচ জোটানো দুঃসাধ্য হয়ে গেছে। তাই মোটারসাইকেলটি নিয়ে বের হই। সারাদিন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াই। গড়ে প্রতিদিন ৫শ’ টাকার মতো থাকে। এই টাকা দিয়ে কোনরকমে চালিয়ে নিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াতেও পারি না। রাজধানীতে ১২ বছর যাবৎ থাকি অনেকেই পরিচিত। তাই পরিচিত লোক দেখলে কী ভাববেন এই বিষয়টা সব সময় মাথায় কাজ করে।

শুক্রাবাদ মর্নিং গ্লোরি স্কুলের শিক্ষক আবেদুর রহমান। বয়স প্রায় ৬০ বছর। আয় হারিয়ে দিশাহারা তিনি। বাধ্য হয়ে স্কুলের সামনে কলা, আম ইত্যাদি মৌসুমি ফল বিক্রি করছেন। বলেন, জীবনে এই কাজ করিনি। বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে। ছেলেটার ব্যবসা প্রায় বন্ধ। আমার বেতন নেই। চলতে তো হবে।
বসুন্ধরা মার্কেট থেকে রিকশাচালক হৃদয় আলম মোহাম্মপুরে যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয়েছিলেন। কিন্তু কলাবাগানে যেতেই দুর্ঘটনার স্বীকার হন। রিকশার যাত্রীসহ চালক দু’জনই আঘাত পান। যাত্রী বলেন, ও তো রিকশা চালাতেই পারে না। হাত কাঁপে। রাস্তাও চেনে না। হ্রদয় আলম বলেন, আমি রিকশা কোনো দিন চালাইনি। ফরিদুপরে আমার একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকান ছিল। করোনার কারণে এই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে ঢাকায় এসে রিকশা চালাচ্ছি।

বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে এক মহিলা হাতের কাজ করা বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছিলেন। পুথির মালা, টেবিল ম্যাট, খেলনা, কলমদানি ইত্যাদি। মুখ পুরো বোরকা দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। অন্য বিক্রেতারা যেখানে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছেন কাছে এগিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি মুখ লুকাতেই ব্যস্ত। বলেন, ঋণের টাকায় অনলাইন শপ চালাতাম। নিজের হাতে তৈরি করতাম পণ্য। এখন ক্রেতা নেই বললেই চলে। তাই ভাবলাম এই জিনিসগুলো নিয়ে মার্কেটের সামনে দাঁড়ালে যদি কিছু বিক্রি হয়। প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে বিক্রি করছি। নিজের হাতে বানাই বলে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করতে পারি।

তিনি রাজধানীর একটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ’তে অনার্স সম্পন্ন করেছেন।
এই ব্যক্তিরা বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় যোগ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে নিজ পেশায় থেকেও আয় কমে এসেছে প্রায় সকলের। ১০ জন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেকের আয় আগের থেকে কমেছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। সেইসঙ্গে আগের থেকে রিকশা নিয়ে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বেশি চালাচ্ছেন।

শুধু রাজধানী নয় দেশের প্রায় সব স্থানের একই চিত্র। রংপুর একটি রেস্টুরেন্টের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন মোকসেদুল ইসলাম। তার উচ্চতা মাত্র ৩ ফিট। কাজ হারিয়ে দিশাহারা তিনি। এখন শহরে ভ্রাম্যমাণ পান সিগারেট বিক্রি করেন তিনি। কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। জানান, তিনি বেশি সময় হাঁটতে পারেন না। একস্থানে বসে থাকলেও বেশি বিক্রি হয় না।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বাড়ি নওগাঁ জেলায়। এই শিক্ষার্থী বিপদগ্রস্ত পরিবারের হাল ধরতে ভ্যান চালাচ্ছেন। বলেন, কোনো কাজই ছোট নয়। কিন্তু আমার বাধ্য হয়ে ভ্যান চালাতে হচ্ছে। এই সময় যখন অনলাইনে ক্লাসে যাবার কথা চলছে। সেখানে আমি ভ্যানের প্যাডেল মারা নিয়ে ব্যস্ত। বাবার ছোট একটা দোকানে আমাদের সংসার চলে, সেই আয়ও প্রায় বন্ধ।

পোস্ট শেয়ার করুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন বাঁচার লড়াইয় পেশা বদল

আপডেটের সময় : ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০

কাওরান বাজার, জেনিথ টাওয়ারের গলি। এই গলির মাথায় এক যুবক চানাচুর বিক্রি করেন। নাম সুমন হাসান। চানাচুর মাখানো দেখেই বোঝা যায় তিনি এ পেশায় নতুন। জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিনি। লেখাপড়া করেন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে। রাজধানীতে থাকতেন। কাজ করতেন বসুন্ধরা মার্কেটের একটি রেস্টুরেন্টে।

বলেন, ভালোই ইনকাম হতো। বেতন দিতো ১০ হাজার টাকা। আর টিপস থেকে আসতো আরো ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।
হঠাৎ এলোমেলো হয়ে গেলো সব। করোনার ছোবলে চাকরিটা হারালেন। সুমন দরিদ্র পরিবারের ছেলে। বাবা মা থাকেন পাবনায়। সুমন মাসে ৫ হাজার টাকা পাঠাতেন। স্বল্প আয়ে চলত তার লেখাপড়া ও বাবা মায়ের দু’বেলার আহার।

সুমন বলেন, করোনার শুরুতে বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। মার্কেট বন্ধ থাকলেও প্রথম মাসে ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন দোকান মালিক। কিন্তু তারপর ব্যবসা বন্ধ চাইতেও পারি না। বাড়িতে বসে থেকে চলছিল না জীবন। আবার চলে আসি ঢাকায়। কোনো উপায় না দেখে ঝাল মুড়ি বিক্রি করা শুরু করি। এখন দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাভ হয়।
রাজধানীর মিরপুর ২ মোল্লাপাড়া এলাকায় ক’দিন ধরে একটি নতুন চায়ের দোকান দিয়েছেন রাসেল মাহমুদ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স করেছেন। চাকরি করতেন একটি মোবাইল কোম্পানিতে। বিয়ে করেছেন ৮ মাস আগে। করোনার কারণে চাকরিটা হারান। খুলে বসেন চায়ের দোকান। নতুন কাস্টমার ধরতে তার আপ্রাণ চেষ্টা। বলেন, চাকরি হারিয়ে বাসা ছাড়তে হয়। নতুন বউকে বাধ্য হয়ে বাড়িতে পাঠিয়েছি। করোনার এই সময় নতুন চাকরি পাওয়া দায়। তাই একটা দোকান পেলাম সেটাতে চায়ের দোকান দিলাম।
দোকানটি ছিল আগে একটি সিঙ্গাড়া সমুচার দোকান। চালাতেন আমিনুর রহমান। তার সঙ্গে কথা হয় মুঠোফোনে। তিনি জানান, দোকানের ভাড়া ৩ হাজার টাকা। করোনার কারণ লোকশানের মুখে পড়তে হয়। রমজান মাসে কিছুটা আয় হলেও পরবর্তীতে আবার আয় কমে যায়। তাই ছেড়ে দেন দোকানটি। জানান, এই করোনার সময় জমানো প্রায় ৩০ হাজার টাকা বসে বসে খেয়েছি। যেটি তিনি মেয়ের বিয়ের জন্য জমাচ্ছিলেন। এখন কি করেন জানতে চাইলে বলেন, বাড়িতে নারিকেলের নাড়ু তৈরি করে বিভিন্ন দোকানে দেই। এই দিয়ে কোনরকম চারটা ডালভাত জোটে।
লালমাটিয়া এলাকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক এখন ছুটে বেড়ান মোটরসাইকেল নিয়ে। বলেন স্কুল বন্ধ, বন্ধ বেতনও। বাসাভাড়া খাওয়া খরচ জোটানো দুঃসাধ্য হয়ে গেছে। তাই মোটারসাইকেলটি নিয়ে বের হই। সারাদিন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াই। গড়ে প্রতিদিন ৫শ’ টাকার মতো থাকে। এই টাকা দিয়ে কোনরকমে চালিয়ে নিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াতেও পারি না। রাজধানীতে ১২ বছর যাবৎ থাকি অনেকেই পরিচিত। তাই পরিচিত লোক দেখলে কী ভাববেন এই বিষয়টা সব সময় মাথায় কাজ করে।

শুক্রাবাদ মর্নিং গ্লোরি স্কুলের শিক্ষক আবেদুর রহমান। বয়স প্রায় ৬০ বছর। আয় হারিয়ে দিশাহারা তিনি। বাধ্য হয়ে স্কুলের সামনে কলা, আম ইত্যাদি মৌসুমি ফল বিক্রি করছেন। বলেন, জীবনে এই কাজ করিনি। বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে। ছেলেটার ব্যবসা প্রায় বন্ধ। আমার বেতন নেই। চলতে তো হবে।
বসুন্ধরা মার্কেট থেকে রিকশাচালক হৃদয় আলম মোহাম্মপুরে যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয়েছিলেন। কিন্তু কলাবাগানে যেতেই দুর্ঘটনার স্বীকার হন। রিকশার যাত্রীসহ চালক দু’জনই আঘাত পান। যাত্রী বলেন, ও তো রিকশা চালাতেই পারে না। হাত কাঁপে। রাস্তাও চেনে না। হ্রদয় আলম বলেন, আমি রিকশা কোনো দিন চালাইনি। ফরিদুপরে আমার একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকান ছিল। করোনার কারণে এই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে ঢাকায় এসে রিকশা চালাচ্ছি।

বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে এক মহিলা হাতের কাজ করা বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছিলেন। পুথির মালা, টেবিল ম্যাট, খেলনা, কলমদানি ইত্যাদি। মুখ পুরো বোরকা দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। অন্য বিক্রেতারা যেখানে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছেন কাছে এগিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি মুখ লুকাতেই ব্যস্ত। বলেন, ঋণের টাকায় অনলাইন শপ চালাতাম। নিজের হাতে তৈরি করতাম পণ্য। এখন ক্রেতা নেই বললেই চলে। তাই ভাবলাম এই জিনিসগুলো নিয়ে মার্কেটের সামনে দাঁড়ালে যদি কিছু বিক্রি হয়। প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে বিক্রি করছি। নিজের হাতে বানাই বলে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করতে পারি।

তিনি রাজধানীর একটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ’তে অনার্স সম্পন্ন করেছেন।
এই ব্যক্তিরা বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় যোগ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে নিজ পেশায় থেকেও আয় কমে এসেছে প্রায় সকলের। ১০ জন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেকের আয় আগের থেকে কমেছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। সেইসঙ্গে আগের থেকে রিকশা নিয়ে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বেশি চালাচ্ছেন।

শুধু রাজধানী নয় দেশের প্রায় সব স্থানের একই চিত্র। রংপুর একটি রেস্টুরেন্টের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন মোকসেদুল ইসলাম। তার উচ্চতা মাত্র ৩ ফিট। কাজ হারিয়ে দিশাহারা তিনি। এখন শহরে ভ্রাম্যমাণ পান সিগারেট বিক্রি করেন তিনি। কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। জানান, তিনি বেশি সময় হাঁটতে পারেন না। একস্থানে বসে থাকলেও বেশি বিক্রি হয় না।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বাড়ি নওগাঁ জেলায়। এই শিক্ষার্থী বিপদগ্রস্ত পরিবারের হাল ধরতে ভ্যান চালাচ্ছেন। বলেন, কোনো কাজই ছোট নয়। কিন্তু আমার বাধ্য হয়ে ভ্যান চালাতে হচ্ছে। এই সময় যখন অনলাইনে ক্লাসে যাবার কথা চলছে। সেখানে আমি ভ্যানের প্যাডেল মারা নিয়ে ব্যস্ত। বাবার ছোট একটা দোকানে আমাদের সংসার চলে, সেই আয়ও প্রায় বন্ধ।