ঢাকা , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত এক অসুস্থ প্রজন্ম কে সাথি করে এগুচ্ছি আমরা রিডানডেন্ট ক্লোথিং আর মজুর মামার ‘বিশ্বকাপ’ ইউরোপের সবচেয়ে বড় ঈদুল ফিতরের নামাজ পর্তুগালে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন ঈদের কাপড় কিনার জন্য মা’য়ের উপর অভিমান করে মেয়ের আত্মহত্যা লিসবনে বন্ধু মহলের আয়োজনে বিশাল ইফতার ও দোয়া মাহফিল

কুলাউড়ায় পানির চেয়ে কম ধানের দাম !

আজিজুল ইসলামঃ
  • আপডেটের সময় : ০৪:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / ১০৭৪ টাইম ভিউ

অগ্রহায়ন মাস  বিদায় নিয়েছে। অগ্রহায়ন মাস জুড়ে আমন ধান কাটা মাড়াই আর শুকানো সব মিলিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন। ব্যস্ততার মাঝেও নতুন ধানের নবান্ন উৎসব চলছে গ্রামে গ্রামে। সেই উৎসবেও যেন হতাশার সুর। ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলায় এবার আমন ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার হেক্টর। অর্জিত সাফল্য এখনও নির্ধারিত না হলেও লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ দাবি করে। ইতোমধ্যে আমন ধান কাটা প্রায় ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা জানান।

কৃষি অফিস সুত্র আরও জানায়, ইতোমধ্যে কৃষকের কাছ থেকে আমন ধান সংগ্রহ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এবার কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে লটারির মাধ্যমে ধানচাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২ হাজার ২৪৪ জন কৃষকের কাছ থেকে জনপ্রতি এক মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। শুকনো ধান প্রতি মন এক হাজার চল্লিশ (১০৪০) টাকায় কৃষকের কাছ থেকে কেনা হবে। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।

উপজেলায় আমন চাষীর সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজার। ফলে কৃষকের কাছ থেকে যে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে তা কৃষকের তুলনা খুবই কম। ফলে কৃষক বাধ্য হয়ে কম দামে তাদের শ্রমের ফসল বিক্রি করছে।

উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নে মানগাঁও গ্রামের কৃষক সুমেন্দ্র বৈদ্য, তৈয়ব আলী, সৈয়ব আলী, হাজীপুর ইউনিয়নের ভুইগাঁও গ্রামের জানু মিয়া, আনছার আলী জানান, এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু যেন পানির চেয়ে ধানের দাম কম। এক লিটার পানি বিক্রি হয় ৩০ টাকায়। আর এক কেজি ধানের দাম ১১ থেকে ১২ টাকা। কাঁচা ধান প্রতি মন মাত্র ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ আর শুকনো ধান প্রতি মন ৫শ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

শরিফপুর ইউনিয়নের নছিরগঞ্জ বাজারে ধানের আড়ৎ খুলেছেন মলয় পাল ও মৌর মিয়া। তারা জানান, কৃষকের কাছ থেকে সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকায় প্রতি মন ধান বিক্রি করছেন। তারা এসব ধান অটো রাইছ মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। ধানের দাম বেশি কম প্রসঙ্গে তারা বলেন, ধানের দাম কম হওয়ায় অনেকেই এখন ধান চাষ বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। এভাবে ধান চাষ কমতে থাকাটা অশনি সংকেত। তারপরও দরিদ্র অসহায় কৃষকরা সংসারে চাহিদা মেটাতে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা জানা যায়, মধ্যস্বত্তভোগী এক শ্রেণির ক্রেতা কৃষকদের কাছ থেকে অগ্রিম ধান কিনে নিয়েছেন আরও কম দামে। অনেক কৃষক আবার দ্বিগুণ দেয়ার প্রতিশ্রতিতে টাকা নিয়েছেন আড়ৎদারের কাছ থেকে। মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা প্রতারিত হলেও তা রোধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই।

কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জগলুল হায়দার জানান, এবার আমনের ফলন যথেষ্ঠ ভালো হয়েছে। এতে কৃষকরা খুশি। প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার জন্য আগে জানানো হয়েছে। বিক্রি করতে আগ্রহী কৃষকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে বিক্রেতা কৃষককে চুড়ান্ত করা হয়েছে।

পোস্ট শেয়ার করুন

কুলাউড়ায় পানির চেয়ে কম ধানের দাম !

আপডেটের সময় : ০৪:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

অগ্রহায়ন মাস  বিদায় নিয়েছে। অগ্রহায়ন মাস জুড়ে আমন ধান কাটা মাড়াই আর শুকানো সব মিলিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন। ব্যস্ততার মাঝেও নতুন ধানের নবান্ন উৎসব চলছে গ্রামে গ্রামে। সেই উৎসবেও যেন হতাশার সুর। ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলায় এবার আমন ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার হেক্টর। অর্জিত সাফল্য এখনও নির্ধারিত না হলেও লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ দাবি করে। ইতোমধ্যে আমন ধান কাটা প্রায় ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা জানান।

কৃষি অফিস সুত্র আরও জানায়, ইতোমধ্যে কৃষকের কাছ থেকে আমন ধান সংগ্রহ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এবার কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে লটারির মাধ্যমে ধানচাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২ হাজার ২৪৪ জন কৃষকের কাছ থেকে জনপ্রতি এক মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। শুকনো ধান প্রতি মন এক হাজার চল্লিশ (১০৪০) টাকায় কৃষকের কাছ থেকে কেনা হবে। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।

উপজেলায় আমন চাষীর সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজার। ফলে কৃষকের কাছ থেকে যে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে তা কৃষকের তুলনা খুবই কম। ফলে কৃষক বাধ্য হয়ে কম দামে তাদের শ্রমের ফসল বিক্রি করছে।

উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নে মানগাঁও গ্রামের কৃষক সুমেন্দ্র বৈদ্য, তৈয়ব আলী, সৈয়ব আলী, হাজীপুর ইউনিয়নের ভুইগাঁও গ্রামের জানু মিয়া, আনছার আলী জানান, এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু যেন পানির চেয়ে ধানের দাম কম। এক লিটার পানি বিক্রি হয় ৩০ টাকায়। আর এক কেজি ধানের দাম ১১ থেকে ১২ টাকা। কাঁচা ধান প্রতি মন মাত্র ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ আর শুকনো ধান প্রতি মন ৫শ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

শরিফপুর ইউনিয়নের নছিরগঞ্জ বাজারে ধানের আড়ৎ খুলেছেন মলয় পাল ও মৌর মিয়া। তারা জানান, কৃষকের কাছ থেকে সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকায় প্রতি মন ধান বিক্রি করছেন। তারা এসব ধান অটো রাইছ মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। ধানের দাম বেশি কম প্রসঙ্গে তারা বলেন, ধানের দাম কম হওয়ায় অনেকেই এখন ধান চাষ বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। এভাবে ধান চাষ কমতে থাকাটা অশনি সংকেত। তারপরও দরিদ্র অসহায় কৃষকরা সংসারে চাহিদা মেটাতে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা জানা যায়, মধ্যস্বত্তভোগী এক শ্রেণির ক্রেতা কৃষকদের কাছ থেকে অগ্রিম ধান কিনে নিয়েছেন আরও কম দামে। অনেক কৃষক আবার দ্বিগুণ দেয়ার প্রতিশ্রতিতে টাকা নিয়েছেন আড়ৎদারের কাছ থেকে। মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা প্রতারিত হলেও তা রোধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই।

কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জগলুল হায়দার জানান, এবার আমনের ফলন যথেষ্ঠ ভালো হয়েছে। এতে কৃষকরা খুশি। প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার জন্য আগে জানানো হয়েছে। বিক্রি করতে আগ্রহী কৃষকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে বিক্রেতা কৃষককে চুড়ান্ত করা হয়েছে।