ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
মৌলভীবাজারে সংবর্ধিত মুসলিম কমিউনিটি আহবায়ক শায়খ নূরে আলম হামিদী মহান স্বাধীনতা দিবস ও রমাদান উপলক্ষ্যে সাবেক ছাত্রদল অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে পর্তুগাল বিএনপির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে আব্দুল্লাপুর আঞ্চলিক সমিতির ষষ্ঠ বর্ষে পর্দাপন কেক কেটে উদযাপন ইতালির মিলানে ফেনী জেলা সমিতির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোজাদারদের সম্মানে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ভারেজ প্রভিন্সের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল স্বেচ্ছাসেবক দল ইতালি উত্তরের উদ্যোগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত প্রায় ২৮ হাজার ৯০০ জন অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) স্কুল শিক্ষিকা কে নির্যাতনের অভিযোগে ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী গ্রেফতার

কুরআন-বাইবেলে উল্লেখিত সেই পঙ্গপালে দিশেহারা পাক-ভারত

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ১১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ৬৮৯ টাইম ভিউ

ঝাঁকবদ্ধ পতঙ্গ পঙ্গপালের তীব্র আক্রমণে বিপাকে পড়েছে পাকিস্তান। ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ঢুকে পড়েছে পতঙ্গটি। এছাড়া সোমালিয়াতেও সম্প্রতি এ নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

জাতিসংঘের এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকায় পঙ্গপালের আক্রমণে মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে। জিবুতি ও ইরিত্রিয়ায় ৩৬ হাজার কোটি পতঙ্গের আক্রমণে খাদ্য নিরাপত্তায় ভয়াবহ হুমকি তৈরি হয়েছে।

পঙ্গপাল কী?

পঙ্গপাল মূলত এক প্রকার পতঙ্গ। এটি আর্কিডিডি পরিবারে ছোট শিংয়ের বিশেষ প্রজাতি যাদের জীবন চক্রে দল বা ঝাঁক বাঁধার পর্যায় থাকে। এই পতঙ্গগুলো সাধারণত একা থাকে। তবে বিশেষ অবস্থায় তারা একত্রে জড়ো হয়। তখন তাদের আচরণ ও অভ্যাস পরিবর্তিত হয়ে সঙ্গলিপ্সু হয়ে পড়ে। পঙ্গপাল ও ঘাস ফড়িংয়ের মধ্যে কোন পার্থক্যগত শ্রেণীবিন্যাস নেই। বিশেষ অবস্থায় তাদের প্রজাতিগুলোর একত্রিত হওয়ার যে স্বতন্ত্র প্রবণতা দেখা যায় সেটাই মূল পার্থক্য।

নতুন ধরনের পঙ্গপালের ১০ লাখ পতঙ্গের একটি ঝাঁক একদিনে ৩৫ হাজার মানুষের খাবার খেয়ে ফেলতে পারে। আগামী এপ্রিলে এই পঙ্গপাল নতুন করে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এ সময়টিকে পঙ্গপালের বংশবৃদ্ধির সময় বলে বিবেচনা করা হয়।

কতটা ভয়ঙ্কর এই পঙ্গপাল?

১৯৯৩ সালে ব্যাপক আকারে পঙ্গপালের আক্রমণের মুখে পড়ে পাকিস্তান। এই ধাপে ২০১৯ সালের মার্চে পাকিস্তানে প্রথম পঙ্গপালের আক্রমণ শনাক্ত হয়। পরে এটি সিন্ধু, দক্ষিণ পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের ৯ লাখ হেক্টর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোটি কোটি রুপি মূল্যের ফসল ও গাছপালা।

ভারত-পাকিস্তানের বাইরে সৌদি আরবও পঙ্গপালের আক্রমণের মুখে পড়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, পতঙ্গটির আক্রমণ দেশটির কৃষি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

আফ্রিকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে ৭ কোটি ডলারের অনুদান চেয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। সংস্থাটির প্রধান মার্ক লোকক বলেন, আফ্রিকায় এই ভয়াবহ পঙ্গপাল উদ্বেগজনক হারে ফসল ধ্বংস করছে। ইতোমধ্যেই খাদ্য স্বল্পতায় থাকা পরিবারগুলো তাই আরও বিপাকে পড়েছে।

ধর্মীয় গ্রন্থে পঙ্গপালের উল্লেখ

পঙ্গপালের ইতিহাস বহু পুরনো। প্রাচীন মিসরীয়দের কবরে এর ছবি দেখা যায়। এছাড়া গ্রিসের ইলিয়াডে এই পতঙ্গের কথা উল্লেখ রয়েছে। বাইবেল এবং কোরআন এর মতো ধর্মগ্রন্থেও পঙ্গপালের কথা বলা হয়েছে। ধর্মগ্রন্থে এই পতঙ্গকে ঈশ্বরের শাস্তিস্বরূপ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করা রয়েছে।

প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা

পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণে বাতাসে বা মাটিতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। তবে আফ্রিকায় পঙ্গপালের যে ভয়াবহতা তাতে শুধু কীটনাশক ব্যবহারে ফল মিলবে না বলে মনে করছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্লেষকরা পঙ্গপালের আক্রমণে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন। জাতিসংঘের পঙ্গপাল পূর্বাভাস বিষয়ক কর্মকর্তা কিথ ক্রিসম্যান বলেন, ওমানের মরুভূমিতে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক বৃষ্টি হওয়ায় এই পঙ্গপালগুলো আফ্রিকায় চলে গেছে। তিনি বলেন, আমরা জানি ঘূর্ণিঝড় থেকেই্ এই পতঙ্গের আগমন ঘটে। বিগত ১০ বছরে ভারত সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পোস্ট শেয়ার করুন

কুরআন-বাইবেলে উল্লেখিত সেই পঙ্গপালে দিশেহারা পাক-ভারত

আপডেটের সময় : ১১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০

ঝাঁকবদ্ধ পতঙ্গ পঙ্গপালের তীব্র আক্রমণে বিপাকে পড়েছে পাকিস্তান। ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ঢুকে পড়েছে পতঙ্গটি। এছাড়া সোমালিয়াতেও সম্প্রতি এ নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

জাতিসংঘের এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকায় পঙ্গপালের আক্রমণে মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে। জিবুতি ও ইরিত্রিয়ায় ৩৬ হাজার কোটি পতঙ্গের আক্রমণে খাদ্য নিরাপত্তায় ভয়াবহ হুমকি তৈরি হয়েছে।

পঙ্গপাল কী?

পঙ্গপাল মূলত এক প্রকার পতঙ্গ। এটি আর্কিডিডি পরিবারে ছোট শিংয়ের বিশেষ প্রজাতি যাদের জীবন চক্রে দল বা ঝাঁক বাঁধার পর্যায় থাকে। এই পতঙ্গগুলো সাধারণত একা থাকে। তবে বিশেষ অবস্থায় তারা একত্রে জড়ো হয়। তখন তাদের আচরণ ও অভ্যাস পরিবর্তিত হয়ে সঙ্গলিপ্সু হয়ে পড়ে। পঙ্গপাল ও ঘাস ফড়িংয়ের মধ্যে কোন পার্থক্যগত শ্রেণীবিন্যাস নেই। বিশেষ অবস্থায় তাদের প্রজাতিগুলোর একত্রিত হওয়ার যে স্বতন্ত্র প্রবণতা দেখা যায় সেটাই মূল পার্থক্য।

নতুন ধরনের পঙ্গপালের ১০ লাখ পতঙ্গের একটি ঝাঁক একদিনে ৩৫ হাজার মানুষের খাবার খেয়ে ফেলতে পারে। আগামী এপ্রিলে এই পঙ্গপাল নতুন করে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এ সময়টিকে পঙ্গপালের বংশবৃদ্ধির সময় বলে বিবেচনা করা হয়।

কতটা ভয়ঙ্কর এই পঙ্গপাল?

১৯৯৩ সালে ব্যাপক আকারে পঙ্গপালের আক্রমণের মুখে পড়ে পাকিস্তান। এই ধাপে ২০১৯ সালের মার্চে পাকিস্তানে প্রথম পঙ্গপালের আক্রমণ শনাক্ত হয়। পরে এটি সিন্ধু, দক্ষিণ পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের ৯ লাখ হেক্টর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোটি কোটি রুপি মূল্যের ফসল ও গাছপালা।

ভারত-পাকিস্তানের বাইরে সৌদি আরবও পঙ্গপালের আক্রমণের মুখে পড়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, পতঙ্গটির আক্রমণ দেশটির কৃষি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

আফ্রিকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে ৭ কোটি ডলারের অনুদান চেয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। সংস্থাটির প্রধান মার্ক লোকক বলেন, আফ্রিকায় এই ভয়াবহ পঙ্গপাল উদ্বেগজনক হারে ফসল ধ্বংস করছে। ইতোমধ্যেই খাদ্য স্বল্পতায় থাকা পরিবারগুলো তাই আরও বিপাকে পড়েছে।

ধর্মীয় গ্রন্থে পঙ্গপালের উল্লেখ

পঙ্গপালের ইতিহাস বহু পুরনো। প্রাচীন মিসরীয়দের কবরে এর ছবি দেখা যায়। এছাড়া গ্রিসের ইলিয়াডে এই পতঙ্গের কথা উল্লেখ রয়েছে। বাইবেল এবং কোরআন এর মতো ধর্মগ্রন্থেও পঙ্গপালের কথা বলা হয়েছে। ধর্মগ্রন্থে এই পতঙ্গকে ঈশ্বরের শাস্তিস্বরূপ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করা রয়েছে।

প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা

পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণে বাতাসে বা মাটিতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। তবে আফ্রিকায় পঙ্গপালের যে ভয়াবহতা তাতে শুধু কীটনাশক ব্যবহারে ফল মিলবে না বলে মনে করছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্লেষকরা পঙ্গপালের আক্রমণে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন। জাতিসংঘের পঙ্গপাল পূর্বাভাস বিষয়ক কর্মকর্তা কিথ ক্রিসম্যান বলেন, ওমানের মরুভূমিতে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক বৃষ্টি হওয়ায় এই পঙ্গপালগুলো আফ্রিকায় চলে গেছে। তিনি বলেন, আমরা জানি ঘূর্ণিঝড় থেকেই্ এই পতঙ্গের আগমন ঘটে। বিগত ১০ বছরে ভারত সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।