ঢাকা ০৭:২০:৫২ পিএম, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
পর্তুগালে মানবিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন “সদিচ্ছা ফাউন্ডেশন” এর লোগো সম্বলিত টি শার্ট উন্মোচন যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে

করোনার থাবায়: তিন বাহিনীতে আক্রান্ত ৭৫৮৩

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৭:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০
  • / ৩৪২ টাইম ভিউ

নিউজ ডেস্ক: প্রানঘাতী করোনা ভাইরাসের থাবায় আক্রান্ত হচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্টানগুলোর সদস্যরা। ভাইরাস মোকাবিলায় প্রথম সারির সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে দায়িত্বপালনকারী পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৫৮৩ জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। দিন দিন তা বাড়ছে।

বাংলাদেশ পুলিশে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ২১ জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়েছেন। কেউ কেউ এখনও চিকিৎসাধীন। কেউ আছেন আইসোলেশনে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেবাদানকারী প্রতিষ্টান গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী আনসারে আক্রান্ত হয়েছে ৪২১ জন।

ফায়ার সার্ভিসে আক্রান্ত হয়েছে ১৪১ জন সদস্য।

এ তিন বাহিনীর মধ্যে পুলিশে আক্রান্তের হার বেশী। তারা করোনা আক্রান্ত রোগীদের খুঁজে বের করা, সহযোগিতা পৌঁছে দেয়া এবং করোনায় আক্রান্ত রোগীর মরদেহ কাঁধে করে নিয়ে জানাজা ও দাফন করার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে। অনেককে কোন ধরণের ব্যক্তিগত সুরক্ষা ছাড়াই কাজ করতে দেখা গেছে। যা তাদেরকে আরো বেশি ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিয়েছে। এতে তাদের আক্রান্তের হার দিন দিন বেড়েছে এবং বাড়ছেই।

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে বাংলাদেশ পুলিশের ৪০৯ জন সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশে কর্মরত মোট ১৯ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। যার মধ্যে ১৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং বাকি একজন সিভিল কর্মকর্তা।

সূত্র জানায়, করোনায় আক্রান্ত পুলিশের সদস্যদের মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ১ হাজার ৮৫০ জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। সুচিকিৎসা ও সুনিবিড় পরিচর্যায় ৩ হাজার ৪৯ জন সদস্য করোনা জয় করেছেন। সুস্থ হয়ে অনেকেই কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। পুলিশে গতকাল পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৯১৩ জন করোনার উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি রয়েছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৮ হাজার ৯০ জন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান, করোনাভাইরাস ঠেকাতে সুরক্ষা সামগ্রী ও পর্যাপ্ত জীবাণুনাশক সরবরাহ এবং ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সূত্র জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের ১১ কর্মকর্তাসহ ১৪১ জন সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন কর্মকর্তাসহ ৫৪ জন সুস্থ হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জনকে হোম কোয়ারান্টিনে বাকি ৭৮ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছে। ১ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ৫৪ জন আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছেন। সূত্র জানায়, আক্রান্ত সবার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখা হচ্ছে । কারো যদি স্বাস্থের অবনতি হয় তাহলে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে তাকে।

এদিকে, আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তর সূত্র জানা গেছে, ৪২১ জন আনসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২৪৪ জন সদস্য সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হার ৫৮ শতাংশ। করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন আনসারের ২ সদস্য। হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৭ জন। ৯৮ জন সদস্য বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৭৭ জন সদস্য। ঢাকা শহরে বেশী আনসার সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছেন। তারা অনেকেই পুলিশের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে তারা দায়িত্বপালন করছেন। এতে আনসার সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছেন। যেসব সদস্য আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের সুচিকিৎসা ও আইসোলেশন নিশ্চত করার জন্য বাহিনীর পক্ষ্ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার রমনা থানার এক এসআই মানবজমিনকে জানান, আমরা এখনও ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছি। আমার এক সহকর্মী ঢাকার অন্য থানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি মারা গেছেন। তবে পুলিশ বাহিনীতে করোনভাইরাসের বিষয়ে অনেক সচেতনতা বেড়েছে। অনেকেই সুস্থ হওয়ায় আগের চেয়ে মনোবল বেড়েছে।

সূত্র জানায়, যেসব পুলিশ সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ও বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল ছাড়াও রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা আইসোলেশন আছেন তাদের কাছে খাবার ও ওষুধ সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসে করোনা মোকাবিলায় সুরুক্ষা সামগ্রী দেয়া হয়েছে। সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে কাজ করছেন তারা।

পোস্ট শেয়ার করুন

করোনার থাবায়: তিন বাহিনীতে আক্রান্ত ৭৫৮৩

আপডেটের সময় : ০৭:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০

নিউজ ডেস্ক: প্রানঘাতী করোনা ভাইরাসের থাবায় আক্রান্ত হচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্টানগুলোর সদস্যরা। ভাইরাস মোকাবিলায় প্রথম সারির সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে দায়িত্বপালনকারী পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৫৮৩ জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। দিন দিন তা বাড়ছে।

বাংলাদেশ পুলিশে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ২১ জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়েছেন। কেউ কেউ এখনও চিকিৎসাধীন। কেউ আছেন আইসোলেশনে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেবাদানকারী প্রতিষ্টান গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী আনসারে আক্রান্ত হয়েছে ৪২১ জন।

ফায়ার সার্ভিসে আক্রান্ত হয়েছে ১৪১ জন সদস্য।

এ তিন বাহিনীর মধ্যে পুলিশে আক্রান্তের হার বেশী। তারা করোনা আক্রান্ত রোগীদের খুঁজে বের করা, সহযোগিতা পৌঁছে দেয়া এবং করোনায় আক্রান্ত রোগীর মরদেহ কাঁধে করে নিয়ে জানাজা ও দাফন করার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে। অনেককে কোন ধরণের ব্যক্তিগত সুরক্ষা ছাড়াই কাজ করতে দেখা গেছে। যা তাদেরকে আরো বেশি ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিয়েছে। এতে তাদের আক্রান্তের হার দিন দিন বেড়েছে এবং বাড়ছেই।

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে বাংলাদেশ পুলিশের ৪০৯ জন সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশে কর্মরত মোট ১৯ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। যার মধ্যে ১৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং বাকি একজন সিভিল কর্মকর্তা।

সূত্র জানায়, করোনায় আক্রান্ত পুলিশের সদস্যদের মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ১ হাজার ৮৫০ জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। সুচিকিৎসা ও সুনিবিড় পরিচর্যায় ৩ হাজার ৪৯ জন সদস্য করোনা জয় করেছেন। সুস্থ হয়ে অনেকেই কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। পুলিশে গতকাল পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৯১৩ জন করোনার উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি রয়েছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৮ হাজার ৯০ জন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান, করোনাভাইরাস ঠেকাতে সুরক্ষা সামগ্রী ও পর্যাপ্ত জীবাণুনাশক সরবরাহ এবং ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সূত্র জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের ১১ কর্মকর্তাসহ ১৪১ জন সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন কর্মকর্তাসহ ৫৪ জন সুস্থ হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জনকে হোম কোয়ারান্টিনে বাকি ৭৮ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছে। ১ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ৫৪ জন আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছেন। সূত্র জানায়, আক্রান্ত সবার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখা হচ্ছে । কারো যদি স্বাস্থের অবনতি হয় তাহলে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে তাকে।

এদিকে, আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তর সূত্র জানা গেছে, ৪২১ জন আনসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২৪৪ জন সদস্য সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হার ৫৮ শতাংশ। করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন আনসারের ২ সদস্য। হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৭ জন। ৯৮ জন সদস্য বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৭৭ জন সদস্য। ঢাকা শহরে বেশী আনসার সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছেন। তারা অনেকেই পুলিশের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে তারা দায়িত্বপালন করছেন। এতে আনসার সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছেন। যেসব সদস্য আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের সুচিকিৎসা ও আইসোলেশন নিশ্চত করার জন্য বাহিনীর পক্ষ্ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার রমনা থানার এক এসআই মানবজমিনকে জানান, আমরা এখনও ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছি। আমার এক সহকর্মী ঢাকার অন্য থানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি মারা গেছেন। তবে পুলিশ বাহিনীতে করোনভাইরাসের বিষয়ে অনেক সচেতনতা বেড়েছে। অনেকেই সুস্থ হওয়ায় আগের চেয়ে মনোবল বেড়েছে।

সূত্র জানায়, যেসব পুলিশ সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ও বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল ছাড়াও রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা আইসোলেশন আছেন তাদের কাছে খাবার ও ওষুধ সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসে করোনা মোকাবিলায় সুরুক্ষা সামগ্রী দেয়া হয়েছে। সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে কাজ করছেন তারা।