কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছে শিক্ষকরা অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের চাঁদা বৃদ্ধি
- আপডেটের সময় : ০১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০১৭
- / ১৪৬৮ টাইম ভিউ
অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের মাসিক চাঁদা ৬ শতাংশের বদলে ১০ শতাংশ করায় কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন। গতকাল শুক্রবার সরকার সমর্থক শিক্ষক সংগঠন জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্টও সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। তাদের পাশাপাশি গতকাল শুক্রবারও রাজধানীতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্ট ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১৮ জুলাই প্রত্যেক জেলা সদরে সংবাদ সম্মেলন, ২০ জুলাই মানববন্ধন, ২৩ জুলাই দাবির স্বপক্ষে মিছিল এবং ২৮ জুলাই জেলা সদরে শিক্ষক-কর্মচারী সমাবেশ ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। এর মধ্যে অবসর ও কল্যাণের বর্ধিত চাঁদা প্রত্যাহার না হলে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবে একই দাবিতে অপর এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতিও ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছে। এরমধ্যে দাবি মানা না হলে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, অনশন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগাতার ধর্মঘটের হুমকি দেওয়া হয়।
উভয় সংগঠনই সংবাদ সম্মেলনে অবসর ও কল্যাণের ৪ শতাংশ বর্ধিত চাঁদার গেজেট বাতিল, সরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের মতো বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট, বৈশাখী ভাতা, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও পেনশন প্রদানসহ বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করে।
ফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, অবসর-কল্যাণের চাঁদার হার বাড়ানো নিয়ে দেশব্যাপী শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পত্র-পত্রিকায় শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব, অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিবের মতামত প্রকাশিত হলেও শিক্ষক সমাজ আশ্বস্ত হতে পারছে না। যে সভায় চাঁদা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেখানে আলোচ্য সূচিতে এ বিষয়ে কোনো প্রস্তাব ছিলো না। বিবিধ আলোচনায় চাঁদা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা প্রচলিত আর্থিক বিধি বিধানের পরিপন্থী।
এই শিক্ষক নেতা আরো বলেন, অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে শিক্ষকরা এখন যে সুবিধা পাচ্ছেন চাঁদা বাড়ালেও একই সুবিধা পাবেন। তাহলে এই চাঁদা বাড়ানোর যৌক্তিকতা কোথায়? এ প্রেক্ষিতে অবসর ও কল্যাণের চাঁদা কর্তনের হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
অপর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, কতিপয় সুবিধাভোগী ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী বিতর্কিত শিক্ষক নেতাদের হঠকারী পরামর্শে এ ধরনের সিদ্ধান্তে শিক্ষক সমাজ হতাশ। বিধি অনুসারে আমাদের চাঁদার টাকার সঙ্গে সরকারি বরাদ্দ মিলিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরকালীন টাকা স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রদান করার কথা। কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীরা সেই টাকা চার-পাঁচ বছরেও পাচ্ছেন না । এমনকি অনেকে জীবদ্দশায়ও পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় আবার অতিরিক্ত ৪ ভাগ চাঁদা কর্তন যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এ অমানবিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
উভয় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ আসাদুল হক, মো. আজিজুল ইসলাম, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, অধ্যক্ষ ফয়েজ হোসেন, মো. মহসিন রেজা, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, মো. শহীদুল্লাহ প্রিন্স, জসীম উদ্দিন শিকদার প্রমুখ।