ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
কানাডার প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্ট ইলেকশন ডলি’র হ্যাটট্রিক জয় ১৭ বছর পর দেশে প্রত্যাবর্তন লন্ডন বিএনপি নেতা শরফুকে শ্রীমঙ্গলে গণ সংবর্ধনা ইতালির মানতোভা শহরে দুইদিনব্যাপী দূতাবাস সেবা অনুষ্ঠিত ,প্রায় আট শতাধিক প্রবাসীরা এই ক্যাম্প থেকে দূতাবাস সেবা গ্রহণ করেন ইতালিতে এমপি প্রার্থী প্রফেসর ডা: সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম কে চাঁদপুরবাসীর সংবর্ধনা দেশে ফিরছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্হায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নানের মৃত্যুতে দোয়া অনুষ্ঠিত কুলাউড়া বিএনপির ১৩ ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা, সমন্বয়কদের দায়িত্ব বন্টন কুলাউড়ায় রাজাপুরে বালু উত্তোলন বন্ধ ও সেতু রক্ষায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত উৎসবমুখর পরিবেশে ইতালির তরিনোতে সিলেট বিভাগ ঐক্য পরিষদের নবগঠিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ছাত্রশিবিরের নববর্ষ প্রকাশনা উৎসব

উন্মত্ত ‘বীর বাহাদুরের’ তাণ্ডবে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৯:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০১৯
  • / ৫২৯ টাইম ভিউ

নাজমুল বারী সোহেলঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিচরণকারী মালিকানাধিন উন্মত্ত হাতি বীর বাহাদুরের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার মেরিনা চা বাগানসহ এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার ২১ অক্টোবর সকালে কুলাউড়ার গাজীপুর-ফুলতলা সড়কে আদাআদি টিলাসংলগ্ন এলাকায় উন্মাত্ত বীর বাহাদুরের আক্রমণের শিকার হয় বাঁশমহালের বাঁশ পরিবহনে নিয়োজিত একটি ট্রাক। এসময় বীর বাহাদুর ট্রাকটি ভাঙচুর চালায় ও হামলায় ট্রাকে থাকা বাঁশমহালের ৩জন শ্রমিক আহত হন। বীরবাহাদুরের মালিক উপজেলার কর্মধার আব্দুল মালিক।
খবর পেয়ে গাজীপুর বনবিটের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বীরবাহাদুরের মালিক ও মাহুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে।
গাজীপুর বনবিট কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজন জানান, ৪২ বছর বয়সী বীর বাহাদুর হাতিটি গত কয়েকদিন ধরে কুলাউড়া-জুড়ীর সীমান্ত এলাকার হাড়ারগজ বনে বিচরণ করছে। প্রজননমৌসুমে বীর বাহাদুর উন্মত্ত থাকায় বনের পাশে থাকা গত ৪/৫দিন ধরে মেরিনা চা বাগানে এসে চা গাছসহ ব্যাপক গাছ তছনছ করে। বীর বাহাদুরের এমন কাণ্ডে চা বাগানের শ্রমিক ও এসব পথে চলাচলকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে কুলাউড়ার গাজীপুরা-ফুলতলা পাহাড়ি সড়ক দিয়ে ২০-২৫ জন শ্রমিকবোঝাই একটি ট্রাক স্থানীয় গুগালীছড়া বাঁশমহালে বাঁশ আনতে যাচ্ছিলো। এসময় গুজাটিলায় অবস্থানরত হাতিটি আদিআদি মাজার সংলগ্নসড়কে অবস্থান নেয় এবং শ্রমিকবোঝাইটি ট্রাকটিকে ধাওয়া করে উন্মত্ত বীরবাহাদুর ট্রাকের ওপর আক্রমণ চালায়। এসময় বীরবাহাদুর ট্রাকটি ভাঙচুর চালায় এবং ট্রাকে থাকা শ্রমিকরা ভয়ে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ওপর হামলা চালায় হাতিটি। এতে তিন শ্রমিক রফিকুল ইসলাম (৩৯), আনোয়ার (৪৫), সিপার (৩৫) আহত হন। এতে উপজেলার মেরিনা, গাজীপুর ঝিমাই ও রেহানা চাবাগানসহ আশেপাশের এলাকার লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক আরো প্রকট আকার ধারণ করে। প্রজননমৌসুমে উন্মত্ত হাতির আক্রমণে গত দুবছরে দুজন এই এলাকায় নিহত হয়েছেন।
কুলাউড়ার গাজীপুর বনবিট কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে হাতির প্রজননমৌসুম থাকায় হাতি উন্মত্ত হয়ে থাকে। বর্তমানে বনাঞ্চল সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় হাতি লোকালয়ে চলে আসে। এসময় হাতি মানুষ দেখলে উন্মত্ত হয়ে যায় এবং হামলা চালায়।
তিনি আরো বলেন, হাতিটি অনেক বড় তাই খুব সহজে এটি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর। মাহুত যদি এটিকে গভীর বনে নিয়ে যেতে না পারে তাহলে বীরবাহাদুরকে চেতনানাশক ঔষধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমরা দ্রুত হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ও নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া নির্দেশ দিয়েছি ওই হাতিটির মালিক ও মাহুতকে। এছাড়াও হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও দ্রুত সহযোগিতা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের জানিয়েছি। হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ না করা পর্যন্ত গাজীপুর-ফুলতলা সড়ক দিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে।
বীরবাহাদুরের মালিক আব্দুল মালেক মোবাইলে বলেন, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আমরা হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণের অনেক চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। বর্তমানে বীর বাহাদুর গুজাটিলা বনে আছে। তাঁর দাবি এটি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে উচুঁ ওবড় হাতি। তাই খুব সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা।

পোস্ট শেয়ার করুন

উন্মত্ত ‘বীর বাহাদুরের’ তাণ্ডবে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক

আপডেটের সময় : ০৯:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০১৯

নাজমুল বারী সোহেলঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিচরণকারী মালিকানাধিন উন্মত্ত হাতি বীর বাহাদুরের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার মেরিনা চা বাগানসহ এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার ২১ অক্টোবর সকালে কুলাউড়ার গাজীপুর-ফুলতলা সড়কে আদাআদি টিলাসংলগ্ন এলাকায় উন্মাত্ত বীর বাহাদুরের আক্রমণের শিকার হয় বাঁশমহালের বাঁশ পরিবহনে নিয়োজিত একটি ট্রাক। এসময় বীর বাহাদুর ট্রাকটি ভাঙচুর চালায় ও হামলায় ট্রাকে থাকা বাঁশমহালের ৩জন শ্রমিক আহত হন। বীরবাহাদুরের মালিক উপজেলার কর্মধার আব্দুল মালিক।
খবর পেয়ে গাজীপুর বনবিটের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বীরবাহাদুরের মালিক ও মাহুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে।
গাজীপুর বনবিট কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজন জানান, ৪২ বছর বয়সী বীর বাহাদুর হাতিটি গত কয়েকদিন ধরে কুলাউড়া-জুড়ীর সীমান্ত এলাকার হাড়ারগজ বনে বিচরণ করছে। প্রজননমৌসুমে বীর বাহাদুর উন্মত্ত থাকায় বনের পাশে থাকা গত ৪/৫দিন ধরে মেরিনা চা বাগানে এসে চা গাছসহ ব্যাপক গাছ তছনছ করে। বীর বাহাদুরের এমন কাণ্ডে চা বাগানের শ্রমিক ও এসব পথে চলাচলকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে কুলাউড়ার গাজীপুরা-ফুলতলা পাহাড়ি সড়ক দিয়ে ২০-২৫ জন শ্রমিকবোঝাই একটি ট্রাক স্থানীয় গুগালীছড়া বাঁশমহালে বাঁশ আনতে যাচ্ছিলো। এসময় গুজাটিলায় অবস্থানরত হাতিটি আদিআদি মাজার সংলগ্নসড়কে অবস্থান নেয় এবং শ্রমিকবোঝাইটি ট্রাকটিকে ধাওয়া করে উন্মত্ত বীরবাহাদুর ট্রাকের ওপর আক্রমণ চালায়। এসময় বীরবাহাদুর ট্রাকটি ভাঙচুর চালায় এবং ট্রাকে থাকা শ্রমিকরা ভয়ে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ওপর হামলা চালায় হাতিটি। এতে তিন শ্রমিক রফিকুল ইসলাম (৩৯), আনোয়ার (৪৫), সিপার (৩৫) আহত হন। এতে উপজেলার মেরিনা, গাজীপুর ঝিমাই ও রেহানা চাবাগানসহ আশেপাশের এলাকার লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক আরো প্রকট আকার ধারণ করে। প্রজননমৌসুমে উন্মত্ত হাতির আক্রমণে গত দুবছরে দুজন এই এলাকায় নিহত হয়েছেন।
কুলাউড়ার গাজীপুর বনবিট কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে হাতির প্রজননমৌসুম থাকায় হাতি উন্মত্ত হয়ে থাকে। বর্তমানে বনাঞ্চল সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় হাতি লোকালয়ে চলে আসে। এসময় হাতি মানুষ দেখলে উন্মত্ত হয়ে যায় এবং হামলা চালায়।
তিনি আরো বলেন, হাতিটি অনেক বড় তাই খুব সহজে এটি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর। মাহুত যদি এটিকে গভীর বনে নিয়ে যেতে না পারে তাহলে বীরবাহাদুরকে চেতনানাশক ঔষধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমরা দ্রুত হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ও নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া নির্দেশ দিয়েছি ওই হাতিটির মালিক ও মাহুতকে। এছাড়াও হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও দ্রুত সহযোগিতা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের জানিয়েছি। হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ না করা পর্যন্ত গাজীপুর-ফুলতলা সড়ক দিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে।
বীরবাহাদুরের মালিক আব্দুল মালেক মোবাইলে বলেন, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আমরা হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণের অনেক চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। বর্তমানে বীর বাহাদুর গুজাটিলা বনে আছে। তাঁর দাবি এটি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে উচুঁ ওবড় হাতি। তাই খুব সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা।