ইইউর মতো কমনওয়েলথে অভিন্ন ভিসার সুপারিশ
- আপডেটের সময় : ০২:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০১৭
- / ৯৭৫ টাইম ভিউ
কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নির্বাহী কমিটির নতুন চেয়ারপারসন নির্বাচন ও যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে ৬৩তম সম্মেলনের কার্যক্রম।
সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশেন সেন্টারে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সে বেশ ক’টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মতো সিপিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অভিন্ন ভিসা প্রথা চালু, সংসদীয় কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়াও কনফারেন্সে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের আইন প্রণেতারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছেন, এ ইস্যুতে বিশ্বকে বাংলাদেশের হয়ে লড়তে হবে।
১ নভেম্বর থেকে শুরু হলেও এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ৫ নভেম্বর। বুধবার সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে শেষ দিনে ডেলিগেটদের গাজীপুরের শফিপুর আনসার ক্যাম্প পরিদর্শন ছাড়া অন্য কোনো কর্মসূচি নেই। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সম্মেলনের সাধারণ সভা শুরু হবে। এ সভায় রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সিপিএ নির্বাহী কমিটি তাদের করণীয় নির্ধারণ করবে। এ ছাড়াও সিপিএ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কর্মশালায় যেসব সুপারিশ এসেছে, সেগুলো মঙ্গলবার সাধারণ অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে।
অভিন্ন ভিসা প্রথা চালুর সুপারিশ : ইইউর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মতো কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে অভিন্ন ভিসা পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর টিকে থাকতে হলে দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ‘কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে আইন প্রণেতাদের ভূমিকা : বাণিজ্য, ভিসা সমস্যা ও ট্যারিফ বিধিনিষেধ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় সোমবার এ সুপারিশ করা হয়। এ কর্মশালায় মূল আলোচক ছিলেন নাইজেরিয়ার সিনেটর ইকে ই বেরেমাদু, যুক্তরাজ্যের লর্ড ডেভিস এবং গায়ানার জোসেফ এফ হারমান। মডারেটর হিসেবে ছিলেন কানাডার এমপি আলেকজান্দ্রা মেন্ডেজ।
আইন প্রণেতাদের সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ : সম্মেলনের আয়োজক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রস্তাবকরা ‘ডেমোক্রেসি মাস্ট ডেলিভার : রোল অব পার্লামেন্ট ইন অ্যাড্রেসিং দ্য চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক কর্মশালায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আইন প্রণয়ন, বাজেট তৈরি, পর্যবেক্ষণ এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করতে আইনপ্রণেতাদের সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।
এই কর্মশালার মডারেটর ছিলেন তানভীর ইমাম। আলোচনায় অংশ নেন ভারতের ছত্তিশগড়ের বিধায়ক দেবেন্দ্র বর্মা, বাংলাদেশের দীপু মনি, আলী আশরাফ, শহীদুজ্জামান সরকার ও মইন উদ্দীন খান বাদল।
সুপারিশে বলা হয়, এসডিজির সঙ্গে মিলিয়ে দেশীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আইন ও বিধি প্রণয়নে আইন প্রণেতাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। কর্মশালার মডারেটর তানভীর ইমাম জানান, সুশাসন এবং গণতন্ত্র বিকাশে পার্লামেন্টের ভূমিকায় আরও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের সুপারিশও এসেছে কর্মশালায়। এ ছাড়াও সংসদীয় কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানোরও সুপারিশ করা হয়। আইন সভায় লিঙ্গ, ভাষা, সংস্কৃতি, ভূমি, ধর্ম, জাতিসত্তায় বিভক্ত বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়।
সিপিএর উইমেন পার্লামেন্টের চেয়ারপারসন সাগুফতা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের জানান, একটি কর্মশালায় অর্থপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে জনসংখ্যার ভিত্তিতে নারীদের বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা এমপিদের নিশ্চিত করার সুপারিশ এসেছে।
সেন্ট হেলেনা দ্বীপপুঞ্জের আইন প্রণেতা ডেরেক থমাস সাংবাদিকদের জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়েও একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, ওই কর্মশালায় ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবেলা করতে সিপিএভুক্ত পার্লামেন্টগুলোতে সুনির্দিষ্ট কাঠামো নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।