আবু জাহেলদের ব্যার্থ গুপ্ত হত্যা পরিকল্পনার মধ্যে দিয়েই যেভাবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরত জীবনের শুরু হয়
- আপডেটের সময় : ০৩:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
- / ১৪৯ টাইম ভিউ
আবু জাহেলদের ব্যার্থ গুপ্ত হত্যা পরিকল্পনার মধ্যে দিয়েই যেভাবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরত জীবনের শুরু হয়…
রাসুলুল্লাহ সাঃ ইসলামের দাওয়াত যেভাবে মক্কার কুরাইশ দের আলোড়ন সৃষ্টি করে এতে কুরাইশ মুশরিকরা চরম দুর্ভাবনায় পড়ে যায়। শেষমেশ তারা কোন উপায় না দেখে রাসুল সা: কে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সে অনুযায়ী আবু জাহাল, হাকাম ইবনে আস, উকবা ইবনে আবি মুয়িত, নদর ইবনে হারিস, উমাইয়া ইবনে খালফসহ ১১ ব্যক্তি তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মহানবী (সা.)-কে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে।
আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন হজরত জিবরাইল আ: মারফত গৃহবন্দী নবীজীকে তাদের হত্যা পরিকল্পনা জানিয়ে দেন এবং গৃহে অবস্থান না করার নির্দেশ দেন। রাসুলুল্লাহ সাঃ বুঝতে পারেন তাঁর আর মক্কায় থাকা হচ্ছেনা। তাঁর হিজরতের নির্দেশনা চলে এসছে।
রাসুল সা: হিজরতের জন্য পূর্ণ মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নেন।
তিনি জিবরাইল আ: এর নির্দেশ মতো ঘর হতে বের হবার প্রাক্কালে হাতে এক মুঠ মাটি নেন এবং তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘিরে থাকা কাফিরদের উদ্দেশ্যে নিক্ষেপ করেন। নিক্ষিপ্ত মাটি কার্যত তাদের দৃষ্টিকে অন্ধ করে দেয়।
এ সময় রাসুলুল্লাহ সূরা ইয়াসীনের ৯নং আয়াতটি পাঠ করেন। এ আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
‘আর আমরা তাদের সম্মুখে ও পিছনে প্রতিবন্ধকতা দাঁড় করালাম। অতঃপর তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেললাম। ফলে তারা দেখতে পেল না’ (ইয়াসীন ৩৬/৯)।
অত:পর তিনি নিরাপদে গৃহ থেকে বের হয়ে গেলেন।
তা দেখে একজন আগন্তুক আবু জাহেলদের বললো, ‘তোমাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। আল্লাহর কসম, মুহাম্মদ সা: ঘরে নেই। কিন্তু তারা ঘরে উঁকি দিয়ে মহানবী (সা.)-এর বিছানায় কেউ একজনকে শোয়া দেখল, তখন তারা আগন্তুককে সহাস্যে তিরস্কার করল। তারা ভেবেছিলো সেখানে রাসুল সাল্লাল্লাহু শুয়ে আছেন।
অবশেষে তারা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রাত গভীর হলে যখন মক্কার সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু কে হত্যার জন্যে গৃহে ঢুকে তরবারি তাক করে। কিন্তু তখন তারা দেখে বিছানায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেই। সেখানে শুয়ে আছেন হযরত আলী।
হজরত আলী (রা.)-কে দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল। তারা রেগে গিয়ে হজরত আলী কে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে এবং নবীজি সম্পর্কে জানতে চায় এবং তারা হজরত আলীকে ছেড়ে দিয়ে খুঁজতে থাকে নবীজিকে। ততক্ষণে রাসুল সাল্লাল্লাহু হজরত আবু বকর সহ নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে যান। শুরু হয়ে তাঁর হিজরতের জীবন।
পবিত্র কোরআনে রাসুল সাল্লাল্লাহু কে এ হত্যার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে,
‘স্মরণ করো, কাফিররা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দি করার জন্য, হত্যা করার জন্য অথবা নির্বাসিত করার জন্য এবং তারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেন। আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।’
(সুরা আনফাল, আয়াত : ৩০)
ডা. সাঈদ এনাম