ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত এক অসুস্থ প্রজন্ম কে সাথি করে এগুচ্ছি আমরা রিডানডেন্ট ক্লোথিং আর মজুর মামার ‘বিশ্বকাপ’ ইউরোপের সবচেয়ে বড় ঈদুল ফিতরের নামাজ পর্তুগালে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন

আজ বাবা নেই ,বাবার ব্যবহৃত ফোন এখনও সচল – সৌমিত্র ভট্টাচার্য

সৌমিত্র ভট্টাচার্য
  • আপডেটের সময় : ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জুলাই ২০২০
  • / ১১৭০ টাইম ভিউ

সৌমিত্র ভট্টাচার্য:- প্রথম যেদিন মোবাইল সীম সাথে সেট কিনলাম, কি বলবো সেকি কান্ড সেদিন? ভেবেছি, খুশি হবেন সবাই। না, পুরো উল্টো।
সীমের দাম অর্ধেক। গ্রামীনের সীম ০১৭১ থেকে ০১৭২ বের হয়েছে আর কিনলাম – তবুও বাবা আর বড় বোনদের কি গালাগালি। শুধু আমার মতো একটা নিরীহ প্রাণ বলে সেদিন সহ্য করেছিলাম,টিকেছিলাম। ইতিহাস সাক্ষী। একবর্ণও মিথ্যে নয়।
মায়ের কাছ থেকে কিছুটা আর বাকীটা নিজের জমানো টাকা দিয়ে কতো শখ করে কিনলাম! হায় এতো তীব্র বাক্যবাণ একটার পরে একটা! কেউ ভুলে না- থামে না, দিতেই থাকলো ননস্টপ রাতভর।
কোথায় গোষ্ঠীর প্রথম মোবাইল ফোন কিনলাম, দ্বিগবিজয়ী বীর আমি, আনন্দ আর আনন্দ- হলো না। মন চায়, ফোনটাকে আছাড় মারি।পরে ভাবি শেষে গালি তো নির্যাতনে রুপ নিবে।থাক। বালিশের পাশেই থাক।
সবকিছু শুনেও মা চুপচাপ। মুখে টু শব্দ নেই। হতবাক হই -এই আমার জন্মদাত্রী মা!
কোনমতে সহ্য করলাম।মনে মনে সব রেখেছি।
ওহঃআরেক কথা। তখন বাবা ছিলেন নবীন চন্দ্র হাইস্কুলের বাউবি কেন্দ্র প্রধান।
বাবা আমার ফোন নাম্বার সবাইকে দিচ্ছেন নিজের নাম্বার বলে।আমি তো এটা টের পাই না।ফোন আসছে।সবাই স্যারকে খুঁজে। বুঝি না, কেমনে কি! আমার ফোন এটা?
যখন বুঝলাম, সেদিন থেকেই প্রতিশোধ। ফোন এলেই বলি,কোন স্যারের নাম্বার এটা না। আমি তুহিন।নো স্যার।ডোন্ট ডিস্টার্ব। এভাবেই চলেছিলো।
আমরা তখনকার সময়ে রাতে সবাই একসাথে ভাত খেতাম। একরাতে খেতে বসে বাবা জানতে চাইলেন, সেদিন কেউ তাঁকে খোঁজ করেছিলো?
বললাম – না তো!
মা এবার হাসেন। ব্যাপারটা তিনি বুঝেছেন।
দিন আরও গড়ালো। একদিন অতিষ্ট হয়ে বাবা নিজেই ফোন কিনলেন।মিটে গেলো।যার যার ফোন,তার তার কল।

প্রায়ই বাবা ফোন দিলে আমি তো প্রথম কলে ফোন রিসিভ করি না।কারন আমিও ননীভটের পোলা! অন্তরে প্রতিশোধ। ওয়েলকাম টোন বাজে – স্বপ্নে তার সাথে হয় দেখা,,,,,,,,,,,,
দ্বিতীয়বার কল এলো। ধরলাম, – “ফোন দিলে ধরি লাইও, আমারে গান হুনানি লাগতো নায়”। এরপর কিছুক্ষণ শান্তির বাণী বর্ষণ।
ওসব, এককানে ইন কামিং হয়ে দ্বিতীয় কানে আউট গোয়িং।

আজ বাবা নেই।বাবার ব্যবহৃত ফোন এখনও সচল।
শুধু বাবা নেই। বাবা চলে যাবার প্রায় ছয় বছর হতে চললো।এতোটা দিন থেকে বাবার ডাক শুনি না।
এখন রাত গভীরে মনটা হাহাকার করছে-বাবা অজস্রবার গালি দাও। হাজার রাত ধরে গালি দাও। তবু শুনবো।কোন প্রতিশোধ নেবো না।আর কোন গান শোনাবো না।একবার তোমার কথা শুনি

পোস্ট শেয়ার করুন

আজ বাবা নেই ,বাবার ব্যবহৃত ফোন এখনও সচল – সৌমিত্র ভট্টাচার্য

আপডেটের সময় : ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জুলাই ২০২০

সৌমিত্র ভট্টাচার্য:- প্রথম যেদিন মোবাইল সীম সাথে সেট কিনলাম, কি বলবো সেকি কান্ড সেদিন? ভেবেছি, খুশি হবেন সবাই। না, পুরো উল্টো।
সীমের দাম অর্ধেক। গ্রামীনের সীম ০১৭১ থেকে ০১৭২ বের হয়েছে আর কিনলাম – তবুও বাবা আর বড় বোনদের কি গালাগালি। শুধু আমার মতো একটা নিরীহ প্রাণ বলে সেদিন সহ্য করেছিলাম,টিকেছিলাম। ইতিহাস সাক্ষী। একবর্ণও মিথ্যে নয়।
মায়ের কাছ থেকে কিছুটা আর বাকীটা নিজের জমানো টাকা দিয়ে কতো শখ করে কিনলাম! হায় এতো তীব্র বাক্যবাণ একটার পরে একটা! কেউ ভুলে না- থামে না, দিতেই থাকলো ননস্টপ রাতভর।
কোথায় গোষ্ঠীর প্রথম মোবাইল ফোন কিনলাম, দ্বিগবিজয়ী বীর আমি, আনন্দ আর আনন্দ- হলো না। মন চায়, ফোনটাকে আছাড় মারি।পরে ভাবি শেষে গালি তো নির্যাতনে রুপ নিবে।থাক। বালিশের পাশেই থাক।
সবকিছু শুনেও মা চুপচাপ। মুখে টু শব্দ নেই। হতবাক হই -এই আমার জন্মদাত্রী মা!
কোনমতে সহ্য করলাম।মনে মনে সব রেখেছি।
ওহঃআরেক কথা। তখন বাবা ছিলেন নবীন চন্দ্র হাইস্কুলের বাউবি কেন্দ্র প্রধান।
বাবা আমার ফোন নাম্বার সবাইকে দিচ্ছেন নিজের নাম্বার বলে।আমি তো এটা টের পাই না।ফোন আসছে।সবাই স্যারকে খুঁজে। বুঝি না, কেমনে কি! আমার ফোন এটা?
যখন বুঝলাম, সেদিন থেকেই প্রতিশোধ। ফোন এলেই বলি,কোন স্যারের নাম্বার এটা না। আমি তুহিন।নো স্যার।ডোন্ট ডিস্টার্ব। এভাবেই চলেছিলো।
আমরা তখনকার সময়ে রাতে সবাই একসাথে ভাত খেতাম। একরাতে খেতে বসে বাবা জানতে চাইলেন, সেদিন কেউ তাঁকে খোঁজ করেছিলো?
বললাম – না তো!
মা এবার হাসেন। ব্যাপারটা তিনি বুঝেছেন।
দিন আরও গড়ালো। একদিন অতিষ্ট হয়ে বাবা নিজেই ফোন কিনলেন।মিটে গেলো।যার যার ফোন,তার তার কল।

প্রায়ই বাবা ফোন দিলে আমি তো প্রথম কলে ফোন রিসিভ করি না।কারন আমিও ননীভটের পোলা! অন্তরে প্রতিশোধ। ওয়েলকাম টোন বাজে – স্বপ্নে তার সাথে হয় দেখা,,,,,,,,,,,,
দ্বিতীয়বার কল এলো। ধরলাম, – “ফোন দিলে ধরি লাইও, আমারে গান হুনানি লাগতো নায়”। এরপর কিছুক্ষণ শান্তির বাণী বর্ষণ।
ওসব, এককানে ইন কামিং হয়ে দ্বিতীয় কানে আউট গোয়িং।

আজ বাবা নেই।বাবার ব্যবহৃত ফোন এখনও সচল।
শুধু বাবা নেই। বাবা চলে যাবার প্রায় ছয় বছর হতে চললো।এতোটা দিন থেকে বাবার ডাক শুনি না।
এখন রাত গভীরে মনটা হাহাকার করছে-বাবা অজস্রবার গালি দাও। হাজার রাত ধরে গালি দাও। তবু শুনবো।কোন প্রতিশোধ নেবো না।আর কোন গান শোনাবো না।একবার তোমার কথা শুনি