ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে

হাকালুকির সুন্দরী কসুতি বদলে দিতে পারে জীবনের রঙ

চৌধুরী আবু সাঈদ ফুয়াদ:
  • আপডেটের সময় : ০৪:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • / ১৮৭৬ টাইম ভিউ

একথালা লাল সূর্য পুব আকাশে। আশ্বিনের সকাল। ভোররাতে ঝমঝম বৃষ্টি হয়েছে। দূরের গাছ গাছালি, শেওলা, ক্ষুদিপানা, জলজ জঙ্গলী উদ্ভিদ সোনারোদে ভাসছে। গাঢ় সোনা রঙের এক দঙ্গল মাছ বুনো ঘাস টেনে হেচড়ে নিয়ে যায়। জলকেলিতে মগ্ন সোনালি অবাক সুন্দর ওই কসুতি পুঁটি মাছগুলো হাকালুকি হাওরের তলপেটে দেখা মেলেছে।

বিলুপ্ত প্রজাতির কসুতি পুঁটি বিখ্যাত অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস গোল্ড ও এ্যঞ্জেলকে হার মানায়। হাকালুকি ছাড়াও এসব এলাকার নদী, হ্রদ ও জলাভূমিতে ব্যাপক আকারে কসুতি পুঁটি চাষ করা সম্ভব। বর্তমান পৃথিবীতে সৌন্দর্য বর্ধনে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস ব্যাপক সমাদৃত। চীন দেশে কনফুসিয়াসের আমলে অ্যাকোয়ারিয়ামের যাত্রা শুরু হয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটিশ, জাপানিরা ভিয়েতনাম, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ফান্স থেকে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস আমদানি করে আসছে। আমাদের দেশের হাকালুকিতে কসুতি পুঁটি ব্রিডিং করে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস হিসেবে ব্যাপক হারে দেশের বাহিরে রপ্তানি করা যায়।

উড়োজাহাজের মতো দেখতে কসুতি পুঁটির বৈজ্ঞানিক নাম- Oreichthys cosuatis (Hamilton), ইংরেজি নাম- Cosuatis barb, বাংলা নাম- কসুতি পুঁটি বা কোসা পুঁটি। দেহ বেশ পুরু ও চাপা। মাথার পাশে অসংখ্য সূক্ষ্ম সমান্তরাল সেন্সরি ফোল্ড রয়েছে। মুখ ছোট, কোনো বার্বেল নেই। পৃষ্ঠীয় পাখনা সুউচ্চ এবং এর অবস্থান পায়ু পাখনা অপেক্ষা নাসাগ্রের অধিকতর নিকটবর্তী। আঁইশ বড়, পার্শ্বরেখা অসম্পূর্ণ, সামনের ৪-৫টি আঁইশেই সীমাবদ্ধ। লম্বালম্বিভাবে আঁইশের সংখ্যা ২২;, পৃষ্ঠীয় পাখনার অগ্রভাবে আঁইশের সংখ্যা ৮-৯। পার্শ্বরেখার ওপর অবস্থিত আঁইশ অন্যান্য আঁইশ অপেক্ষা বড়। পৃষ্ঠীয় পাখনার উচ্চতা দেহের গভীরতা অপেক্ষা বেশি। আঁইশের গোড়ালি কালচে; পায়ু পাখনার গোড়ালিতে ধূসর দাগ রয়েছে। পৃষ্ঠীয় ও পায়ু পাখনায় আবছা দাগ আছে।

এদের ডোবা, পুকুর, বিল নদী ও খালে দেখা যায়। মাছটি বর্ষার শুরুতেই প্রজনন করে। এটি একটি উপাদেয় খাদ্য। সম্ভাবনা ও উপযোগিতা থাকলেও এখনো এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় না। এটি অ্যাকোয়ারিয়ামে বেশ ভালই থাকে। মাছটির সর্ব্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৮ সেমি।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, কালচে সোনালি ও হালকা রূপালি রঙের মিশেলে কসুতি পুঁটি দেখতে খুবই চমৎকার। হাকালুকি হাওরের বিলে এবং ওই এলাকার হ্রদ ও নদীতে কসুতি পুঁটির দেখা মেলে। অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস হিসেবে ব্যাপকতা বাড়ানো যাবে। প্রজননের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে আয় করা সম্ভব। এই মাছ চাষ করে অনেকেই জীবনের রং বদলাতে পারেন।#

পোস্ট শেয়ার করুন

হাকালুকির সুন্দরী কসুতি বদলে দিতে পারে জীবনের রঙ

আপডেটের সময় : ০৪:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

একথালা লাল সূর্য পুব আকাশে। আশ্বিনের সকাল। ভোররাতে ঝমঝম বৃষ্টি হয়েছে। দূরের গাছ গাছালি, শেওলা, ক্ষুদিপানা, জলজ জঙ্গলী উদ্ভিদ সোনারোদে ভাসছে। গাঢ় সোনা রঙের এক দঙ্গল মাছ বুনো ঘাস টেনে হেচড়ে নিয়ে যায়। জলকেলিতে মগ্ন সোনালি অবাক সুন্দর ওই কসুতি পুঁটি মাছগুলো হাকালুকি হাওরের তলপেটে দেখা মেলেছে।

বিলুপ্ত প্রজাতির কসুতি পুঁটি বিখ্যাত অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস গোল্ড ও এ্যঞ্জেলকে হার মানায়। হাকালুকি ছাড়াও এসব এলাকার নদী, হ্রদ ও জলাভূমিতে ব্যাপক আকারে কসুতি পুঁটি চাষ করা সম্ভব। বর্তমান পৃথিবীতে সৌন্দর্য বর্ধনে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস ব্যাপক সমাদৃত। চীন দেশে কনফুসিয়াসের আমলে অ্যাকোয়ারিয়ামের যাত্রা শুরু হয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটিশ, জাপানিরা ভিয়েতনাম, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ফান্স থেকে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস আমদানি করে আসছে। আমাদের দেশের হাকালুকিতে কসুতি পুঁটি ব্রিডিং করে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস হিসেবে ব্যাপক হারে দেশের বাহিরে রপ্তানি করা যায়।

উড়োজাহাজের মতো দেখতে কসুতি পুঁটির বৈজ্ঞানিক নাম- Oreichthys cosuatis (Hamilton), ইংরেজি নাম- Cosuatis barb, বাংলা নাম- কসুতি পুঁটি বা কোসা পুঁটি। দেহ বেশ পুরু ও চাপা। মাথার পাশে অসংখ্য সূক্ষ্ম সমান্তরাল সেন্সরি ফোল্ড রয়েছে। মুখ ছোট, কোনো বার্বেল নেই। পৃষ্ঠীয় পাখনা সুউচ্চ এবং এর অবস্থান পায়ু পাখনা অপেক্ষা নাসাগ্রের অধিকতর নিকটবর্তী। আঁইশ বড়, পার্শ্বরেখা অসম্পূর্ণ, সামনের ৪-৫টি আঁইশেই সীমাবদ্ধ। লম্বালম্বিভাবে আঁইশের সংখ্যা ২২;, পৃষ্ঠীয় পাখনার অগ্রভাবে আঁইশের সংখ্যা ৮-৯। পার্শ্বরেখার ওপর অবস্থিত আঁইশ অন্যান্য আঁইশ অপেক্ষা বড়। পৃষ্ঠীয় পাখনার উচ্চতা দেহের গভীরতা অপেক্ষা বেশি। আঁইশের গোড়ালি কালচে; পায়ু পাখনার গোড়ালিতে ধূসর দাগ রয়েছে। পৃষ্ঠীয় ও পায়ু পাখনায় আবছা দাগ আছে।

এদের ডোবা, পুকুর, বিল নদী ও খালে দেখা যায়। মাছটি বর্ষার শুরুতেই প্রজনন করে। এটি একটি উপাদেয় খাদ্য। সম্ভাবনা ও উপযোগিতা থাকলেও এখনো এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় না। এটি অ্যাকোয়ারিয়ামে বেশ ভালই থাকে। মাছটির সর্ব্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৮ সেমি।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, কালচে সোনালি ও হালকা রূপালি রঙের মিশেলে কসুতি পুঁটি দেখতে খুবই চমৎকার। হাকালুকি হাওরের বিলে এবং ওই এলাকার হ্রদ ও নদীতে কসুতি পুঁটির দেখা মেলে। অ্যাকোয়ারিয়াম ফিস হিসেবে ব্যাপকতা বাড়ানো যাবে। প্রজননের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে আয় করা সম্ভব। এই মাছ চাষ করে অনেকেই জীবনের রং বদলাতে পারেন।#