ঢাকা , শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতেবিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত আ’লীগ গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিলো

দেশদিগন্ত ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ১২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০
  • / ৬২৩ টাইম ভিউ

রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানতেন। তিনিই স্থানীয় সরকার ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবকে ওই অনুষ্ঠানে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। বিষয়টি জানতেন সে সময় স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলামও।

গত ২১ মার্চ মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের আগে করোনাসংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। এর পরপরই উপস্থিত সচিবেরা যখন বের হয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেন, তখন মন্ত্রী তাঁদের বসতে বলেন। এ সময় চা-নাশতা দেওয়া হয়। এরপরই মহাপরিচালকের কক্ষে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ঢোকেন। পরে মন্ত্রীর অনুরোধে অন্য সচিবদের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অথচ মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় এখন এ বিষয়ে কিছু জানে না বলছে।

ওই অনুষ্ঠানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সমঝোতা স্মারকে সই করছেন মো. সাহেদ। তাঁর পাশে বসা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। পেছনে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা যায় সাবেক স্বাস্থ্যসচিব, স্থানীয় সরকারসচিব ও জননিরাপত্তাসচিবকে।

স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলামকে গত ৪ জুন সরিয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব করা হয়েছে। জানা যায়, তাঁর নির্দেশে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আমিনুল হাসান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘অধিদপ্তরে করোনাসংক্রান্ত বৈঠকের পর মন্ত্রীর অনুরোধেই ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। একই কথা বলেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকের পর মন্ত্রী আমাদের চা খাওয়ালেন। এরপর বললেন, “আপনারা যেহেতু উপস্থিত আছেন, আপনারাও দাঁড়ান।”’

স্বাস্থ্যে কেলেঙ্কারি
বিতর্কিত হাসপাতালকে কোভিড চিকিৎসার দায়িত্ব দিয়ে এখন না জানার কথা বলছেন মন্ত্রী
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত শনিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। পরদিন মন্ত্রণালয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে এর ব্যাখ্যা চায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তা জানতে চায় মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ গতকাল বলেন, ‘মন্ত্রণালয় যে ব্যাখ্যা চেয়েছে, কাল-পরশুর মধ্যেই আমরা সব জানাব।’

তবে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকালও আমাদের জানিয়েছেন, চুক্তির বিষয়ে তিনি জানতেন না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ও মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও জবাব দেননি।

উল্লেখ্য, সরকার রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখাকে (উত্তরা ও মিরপুর) কোভিড চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর দায়িত্ব দিয়ে ওই সমঝোতা স্মারকে সই করে। অথচ হাসপাতালটির এ বিষয়ে তেমন সক্ষমতা নেই। নেই হাসপাতাল পরিচালনার অনুমতি (লাইসেন্স)। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করেই দেওয়া হতো সনদ।

৬ জুলাই র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেয় হাসপাতালটি। হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এক কিশোরসহ ৯ বেতনভুক কর্মচারী গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতা সাহেদ এখনো ধরা পড়েননি।

পোস্ট শেয়ার করুন

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিলো

আপডেটের সময় : ১২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০

রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানতেন। তিনিই স্থানীয় সরকার ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবকে ওই অনুষ্ঠানে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। বিষয়টি জানতেন সে সময় স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলামও।

গত ২১ মার্চ মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের আগে করোনাসংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। এর পরপরই উপস্থিত সচিবেরা যখন বের হয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেন, তখন মন্ত্রী তাঁদের বসতে বলেন। এ সময় চা-নাশতা দেওয়া হয়। এরপরই মহাপরিচালকের কক্ষে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ঢোকেন। পরে মন্ত্রীর অনুরোধে অন্য সচিবদের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অথচ মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় এখন এ বিষয়ে কিছু জানে না বলছে।

ওই অনুষ্ঠানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সমঝোতা স্মারকে সই করছেন মো. সাহেদ। তাঁর পাশে বসা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। পেছনে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা যায় সাবেক স্বাস্থ্যসচিব, স্থানীয় সরকারসচিব ও জননিরাপত্তাসচিবকে।

স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলামকে গত ৪ জুন সরিয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব করা হয়েছে। জানা যায়, তাঁর নির্দেশে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আমিনুল হাসান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘অধিদপ্তরে করোনাসংক্রান্ত বৈঠকের পর মন্ত্রীর অনুরোধেই ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। একই কথা বলেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকের পর মন্ত্রী আমাদের চা খাওয়ালেন। এরপর বললেন, “আপনারা যেহেতু উপস্থিত আছেন, আপনারাও দাঁড়ান।”’

স্বাস্থ্যে কেলেঙ্কারি
বিতর্কিত হাসপাতালকে কোভিড চিকিৎসার দায়িত্ব দিয়ে এখন না জানার কথা বলছেন মন্ত্রী
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত শনিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। পরদিন মন্ত্রণালয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে এর ব্যাখ্যা চায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তা জানতে চায় মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ গতকাল বলেন, ‘মন্ত্রণালয় যে ব্যাখ্যা চেয়েছে, কাল-পরশুর মধ্যেই আমরা সব জানাব।’

তবে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকালও আমাদের জানিয়েছেন, চুক্তির বিষয়ে তিনি জানতেন না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ও মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও জবাব দেননি।

উল্লেখ্য, সরকার রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখাকে (উত্তরা ও মিরপুর) কোভিড চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর দায়িত্ব দিয়ে ওই সমঝোতা স্মারকে সই করে। অথচ হাসপাতালটির এ বিষয়ে তেমন সক্ষমতা নেই। নেই হাসপাতাল পরিচালনার অনুমতি (লাইসেন্স)। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করেই দেওয়া হতো সনদ।

৬ জুলাই র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেয় হাসপাতালটি। হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এক কিশোরসহ ৯ বেতনভুক কর্মচারী গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতা সাহেদ এখনো ধরা পড়েননি।