ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা করেছে পর্তুগাল আওয়ামীলীগ যেকোনো প্রচেষ্টা এককভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়: দুদক সচিব শ্রীমঙ্গলে দুটি চোরাই মোটরসাইকেল সহ মিল্টন কুমার আটক পর্তুগালের অভিবাসন আইনে ব্যাপক পরিবর্তন পর্তুগাল বিএনপি আহবায়ক কমিটির জুমে জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয় এমপি আনোয়ারুল আজিমকে হত্যার ঘটনায় আটক তিনজন , এতে বাংলাদেশী মানুষ জড়িত:স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকাস্থ ইরান দুতাবাসে রাইসির শোক বইয়ে মির্জা ফখরুলের স্বাক্ষর

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিলো

দেশদিগন্ত ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ১২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০
  • / ৫৯৯ টাইম ভিউ

রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানতেন। তিনিই স্থানীয় সরকার ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবকে ওই অনুষ্ঠানে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। বিষয়টি জানতেন সে সময় স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলামও।

গত ২১ মার্চ মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের আগে করোনাসংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। এর পরপরই উপস্থিত সচিবেরা যখন বের হয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেন, তখন মন্ত্রী তাঁদের বসতে বলেন। এ সময় চা-নাশতা দেওয়া হয়। এরপরই মহাপরিচালকের কক্ষে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ঢোকেন। পরে মন্ত্রীর অনুরোধে অন্য সচিবদের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অথচ মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় এখন এ বিষয়ে কিছু জানে না বলছে।

ওই অনুষ্ঠানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সমঝোতা স্মারকে সই করছেন মো. সাহেদ। তাঁর পাশে বসা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। পেছনে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা যায় সাবেক স্বাস্থ্যসচিব, স্থানীয় সরকারসচিব ও জননিরাপত্তাসচিবকে।

স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলামকে গত ৪ জুন সরিয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব করা হয়েছে। জানা যায়, তাঁর নির্দেশে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আমিনুল হাসান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘অধিদপ্তরে করোনাসংক্রান্ত বৈঠকের পর মন্ত্রীর অনুরোধেই ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। একই কথা বলেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকের পর মন্ত্রী আমাদের চা খাওয়ালেন। এরপর বললেন, “আপনারা যেহেতু উপস্থিত আছেন, আপনারাও দাঁড়ান।”’

স্বাস্থ্যে কেলেঙ্কারি
বিতর্কিত হাসপাতালকে কোভিড চিকিৎসার দায়িত্ব দিয়ে এখন না জানার কথা বলছেন মন্ত্রী
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত শনিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। পরদিন মন্ত্রণালয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে এর ব্যাখ্যা চায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তা জানতে চায় মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ গতকাল বলেন, ‘মন্ত্রণালয় যে ব্যাখ্যা চেয়েছে, কাল-পরশুর মধ্যেই আমরা সব জানাব।’

তবে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকালও আমাদের জানিয়েছেন, চুক্তির বিষয়ে তিনি জানতেন না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ও মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও জবাব দেননি।

উল্লেখ্য, সরকার রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখাকে (উত্তরা ও মিরপুর) কোভিড চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর দায়িত্ব দিয়ে ওই সমঝোতা স্মারকে সই করে। অথচ হাসপাতালটির এ বিষয়ে তেমন সক্ষমতা নেই। নেই হাসপাতাল পরিচালনার অনুমতি (লাইসেন্স)। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করেই দেওয়া হতো সনদ।

৬ জুলাই র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেয় হাসপাতালটি। হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এক কিশোরসহ ৯ বেতনভুক কর্মচারী গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতা সাহেদ এখনো ধরা পড়েননি।

পোস্ট শেয়ার করুন

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিলো

আপডেটের সময় : ১২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০

রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানতেন। তিনিই স্থানীয় সরকার ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবকে ওই অনুষ্ঠানে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। বিষয়টি জানতেন সে সময় স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলামও।

গত ২১ মার্চ মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের আগে করোনাসংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। এর পরপরই উপস্থিত সচিবেরা যখন বের হয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেন, তখন মন্ত্রী তাঁদের বসতে বলেন। এ সময় চা-নাশতা দেওয়া হয়। এরপরই মহাপরিচালকের কক্ষে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ঢোকেন। পরে মন্ত্রীর অনুরোধে অন্য সচিবদের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অথচ মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় এখন এ বিষয়ে কিছু জানে না বলছে।

ওই অনুষ্ঠানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সমঝোতা স্মারকে সই করছেন মো. সাহেদ। তাঁর পাশে বসা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। পেছনে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা যায় সাবেক স্বাস্থ্যসচিব, স্থানীয় সরকারসচিব ও জননিরাপত্তাসচিবকে।

স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ইসলামকে গত ৪ জুন সরিয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব করা হয়েছে। জানা যায়, তাঁর নির্দেশে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আমিনুল হাসান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘অধিদপ্তরে করোনাসংক্রান্ত বৈঠকের পর মন্ত্রীর অনুরোধেই ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। একই কথা বলেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকের পর মন্ত্রী আমাদের চা খাওয়ালেন। এরপর বললেন, “আপনারা যেহেতু উপস্থিত আছেন, আপনারাও দাঁড়ান।”’

স্বাস্থ্যে কেলেঙ্কারি
বিতর্কিত হাসপাতালকে কোভিড চিকিৎসার দায়িত্ব দিয়ে এখন না জানার কথা বলছেন মন্ত্রী
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত শনিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। পরদিন মন্ত্রণালয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে এর ব্যাখ্যা চায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তা জানতে চায় মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ গতকাল বলেন, ‘মন্ত্রণালয় যে ব্যাখ্যা চেয়েছে, কাল-পরশুর মধ্যেই আমরা সব জানাব।’

তবে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকালও আমাদের জানিয়েছেন, চুক্তির বিষয়ে তিনি জানতেন না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ও মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও জবাব দেননি।

উল্লেখ্য, সরকার রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখাকে (উত্তরা ও মিরপুর) কোভিড চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর দায়িত্ব দিয়ে ওই সমঝোতা স্মারকে সই করে। অথচ হাসপাতালটির এ বিষয়ে তেমন সক্ষমতা নেই। নেই হাসপাতাল পরিচালনার অনুমতি (লাইসেন্স)। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করেই দেওয়া হতো সনদ।

৬ জুলাই র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেয় হাসপাতালটি। হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এক কিশোরসহ ৯ বেতনভুক কর্মচারী গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতা সাহেদ এখনো ধরা পড়েননি।