সুপারিশকৃত কয়েক হাজার নিবন্ধনধারীর নিয়োগ বাতিল
- আপডেটের সময় : ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
- / ৮৭১ টাইম ভিউ
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) একটি সিদ্ধান্তের কারণে কয়েক হাজার নিবন্ধনধারী শিক্ষক বেসরকারি স্কুল-কলেজে নিয়োগের জন্য যোগ্য হিসেবে সুপারিশকৃত হলেও তারা যোগদান করতে পারছেন না।
গত ২৯ জানুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী নিয়োগের শর্ত আরোপ করে এনটিআরসিএ। কিন্তু এনটিআরসিএ নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হাজার হাজার প্রার্থী রয়েছেন যারা ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো জারির আগে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন তখনকার শর্ত মেনে।
যেমন ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো জারির আগে উচ্চমাধ্যমিক কলেজে কম্পিউটার অপারেশনের প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য শর্ত ছিল কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। অথবা বিজ্ঞান বিভাগে পদার্থ, রসায়ন, উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে স্নাতকোত্তরসহ সরকার অনুমোদিত যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ৬ মাস মেয়াদি কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ কোর্স।
কিন্তু ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে কম্পিউটার অপারেশন প্রভাষক পদের ক্ষেত্রে এ শর্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। সেখানে বিজ্ঞান বিভাগে পদার্থ, রসায়ন, উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে পাসকৃত এবং ৬ মাস মেয়াদি কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ কোর্সধারীদের কম্পিউটার অপারেশন প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
আব্দুল হালিম, সাইফুর রহমান, কামরুল হাসান, আলমগীর হোসেন, সাবেরা মোমেনা নামক পাঁচজন নিবন্ধনধারী লিখিতভাবে জানান, তারা ১৪তম নিবন্ধন পরীক্ষায় কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কম্পিউটার অপারেশন পদে সনদ পান। তারা সবাই ২০১৮-এর এমপিও নীতিমালা জারির আগের শর্ত মেনে এ পদে আবেদন করেছেন এবং সনদও পেয়েছেন। পরে আদালতের আদেশ অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে এনটিআরসিএ প্রথম থেকে ১৪তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জাতীয় মেধা তালিকা প্রস্তুত করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১৯/১২/২০১৮ তারিখ। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে এ পাঁচ নিবন্ধনধারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শূন্যপদের বিপরীতে আবেদন করেন। প্রভাষক কম্পিউটার অপারেশন পদে তারা নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃতও হন ২৪/১/২০১৯ তারিখ।
কিন্তু পরে ২৯/১/২০১৯ এনটিআরসিএ জারি করা শর্ত অনুযায়ী বলা হয়, কম্পিউটার বিজ্ঞান ছাড়া বিজ্ঞানের অন্য বিষয় থেকে পাসকৃত এবং কম্পিউটার বিষয়ে ৬ মাসের কোর্সধারী এসব উত্তীর্ণ প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। এতে হতাশায় ভেঙে পড়েছেন তারা।
আব্দুল হালিম জানান, আমরা যে নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই তার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ২০১৭ সালে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ২৫ আগস্ট ২০১৭। লিখিত পরীক্ষা হয় ৯ ডিসেম্বর ২০১৭। ভাইভা হয় ১১/৯/২০১৮।
আব্দুল হালিম অভিযোগ করে বলেন, আমাদের যখন ভাইভা নেয়া হয়েছে তখনো তো বলতে পারত আমরা ২০১৮ নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করতে পারব না। কিন্তু আমাদের সব পরীক্ষা নেয়া হলো, সনদও দেয়া হলো। আমাদের এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধন নম্বর জানানো হয়েছে। তারা আমাদের এভাবে নিবন্ধন নম্বর না জানালে আমরা তো এ পদে আবেদনই করতে পারতাম না।
আব্দুল হালিম জানান, আমরা যখন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি তখন ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো জারি হয়নি। কাজেই আমাদের ক্ষেত্রে এটা কার্যকর করা অন্যায়।
সূত্র জানিয়েছে এনটিআরসিএ’র এ সিদ্ধান্তের কারণে কলেজে প্রভাষক পদে শতাধিক এবং স্কুলে কয়েক হাজার প্রার্থী যারা নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত হয়েছেন কিন্তু নিয়োপ পাচ্ছেন না।
২৯ জানুয়ারি এনটিআরসিএ’র বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে ২০১৮ এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অনেকে তথ্য গোপন করে বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করেছেন। তারা নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে সুপারিশকৃত হলেও নিয়োগ পাবেন না। আব্দুল আলিম এ বিষয়ে বলেন, তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দেয়ার কোনো সুযোগ তাদের ছিল না। কারণ এ শর্ত জারি করা হয়েছে নিবন্ধন সনদ প্রদান ও নিয়োগের সুপারিশের পর।