সশস্ত্রবাহিনী এখন অধিক উন্নত ও চৌকশ: প্রধানমন্ত্রী
- আপডেটের সময় : ০৯:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
- / ১৪৭৩ টাইম ভিউ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ৯ বছরে আমরা সশস্ত্র বাহিনীগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করেছি। এই বাহিনীগুলোতে আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদির সমন্বয় ঘটিয়েছি। এসব পদক্ষেপের কারণেই সশস্ত্রবাহিনীগুলো এখন অধিকতর উন্নত, দক্ষ ও চৌকশ হয়ে উঠেছে।
ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (সিএসসিএসসি) ২০১৭-১৮ কোর্সের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বুধবার সকালে রাজধানীর মীরপুর ক্যান্টনমেন্টের ডিএসসিএসসি-এ শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। খবর বাসসের।
ডিএসসিএসসি কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল একেএম আব্দুল্লাহিল বাকি অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ সময় বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্যরা, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, কূটনীতিক এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনীকে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মূর্ত প্রতীক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবিলা, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, শুধু দেশেই নয়, বহির্বিশ্বেও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে প্রশংসা ও সুনাম অর্জন করেছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষা, গণতন্ত্রে উত্তরণ, সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনাসহ পুনর্গঠন কার্যক্রমে তারা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছেন। তাদের সাফল্যে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়েছে।
সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের অবকাঠামোগত সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্টাফ কলেজের বহুতল একাডেমিক ভবনসহ আরও কিছু উল্লেখযোগ্য স্থাপনা নির্মিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এই কলেজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এক অনন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত স্টাফ কলেজে সেনাবাহিনীর ৪২টি, নৌবাহিনীর ৩৬টি এবং বিমান বাহিনীর ৩৮টি স্টাফ কোর্স সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি বন্ধুপ্রতীম দেশের ১ হাজার ৬৬ জন কর্মকর্তাও এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তারা সবাই নিজ নিজ দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। এই সাফল্যের জন্য তিনি কলেজের কমান্ড্যান্ট, অনুষদ সদস্যবৃন্দ ও সব কর্মকর্তাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানা ক্ষেত্রে আমরা অনেক উন্নত দেশকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। গত অর্থবছর জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালের প্রায় ৪১ শতাংশ থেকে বর্তমানে ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় ২০০৫ সালের ৫৪৩ ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৬১০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩ বিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ওপর। নিজেদের অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতুর মত বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে আমরা মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ।