আপডেট

x


সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ ও বাণিজ্য ইস্যুতে সমঝোতা

রবিবার, ০৯ জুলাই ২০১৭ | ১:১২ পূর্বাহ্ণ | 1893 বার

সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ ও বাণিজ্য ইস্যুতে সমঝোতা

জার্মানির হামবুর্গে চলছে শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি২০-এর সম্মেলন। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিন গত শুক্রবার সন্ত্রাসী দলগুলোর অর্থায়ন বন্ধ ও বাণিজ্য-বিষয়ক নানা দিক নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন অংশগ্রহণ করা দেশগুলোর নেতারা। তবে জলবায়ু ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আগের ভূমিকায় অনড় রয়েছেন। খবর এএফপি ও রয়টার্স।
প্রথম দিনের বৈঠক শেষে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর দেয়া যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাস কার্যকলাপে অর্থায়ন নিয়ে নিন্দা জানানো হয়। এ ধরনের অবৈধ দলগুলোকে অর্থায়নের উত্স বন্ধ করতে এরই মধ্যে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তারও প্রশংসা করা হয়েছে বিবৃতিতে। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন নিয়ন্ত্রণে ৩৭ সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সকে (এফএটিএফ) সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেয়া হয়েছে জি২০র পক্ষ থেকে।
জি২০র পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এফএটিএফকে একটি প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা সব সদস্য দেশকে আহ্বান জানিয়েছি। সেই সঙ্গে এই টাস্কফোর্সের মূলমন্ত্র বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
এদিকে বাণিজ্যে রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জি২০ দেশগুলো। তবে নিজ নিজ বাজারের স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে ‘আইনসঙ্গত’ পদক্ষেপ গ্রহণেরও সমঝোতা হয়েছে সম্মেলনে। মূলত বিদেশী প্রতিযোগীদের থেকে স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে রক্ষায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির পরিপ্রেক্ষিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাণিজ্য নিয়ে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো ঐকমত্যে পৌঁছলেও জলবায়ু ইস্যুতে এখনো কোনো সমাধান আসেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়ার ভূমিকায় অনড় রয়েছেন। বিশেষ করে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের পেছনে অন্যতম দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি প্রসঙ্গে সম্মেলন শেষে কী ইশতেহার প্রকাশ করা হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। অন্য দেশগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার ও রফতানি অব্যাহত রাখবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
জি২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণের এক ফাঁকে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুপক্ষের বহুল প্রত্যাশিত বৈঠককে অভিনন্দন জানিয়ে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল বলেছেন, আমরা আশা করছি, বাণিজ্য ও জলবায়ু ইস্যু নিয়ে খুব দ্রুত সমাধানে পৌঁছতে পারব। আর এ বিষয়ে সফলতার পর শনিবার রাতে অভিবাসী ইস্যু নিয়েও আলোকপাত করা হবে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সম্ভাব্য ব্রিটেন সফর নিয়ে অনেক বিতর্ক হলেও এক্ষেত্রে তিনি আগের অবস্থানেই রয়েছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মের সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প তাদের মধ্যকার আলোচনাকে ‘অসাধারণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শিগগিরই উভয় দেশের মধ্যে ‘শক্তিশালী বাণিজ্য চুক্তি’ সই হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
যেকোনো চুক্তি নিয়ে আলোচনা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক আরো তিক্ত করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ এর আগে ইইউ ব্রিটেনকে সতর্ক করে জানিয়েছে, ব্রেক্সিট সম্পন্ন না হওয়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত তারা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে পৃথক চুক্তি করতে পারবে না।
অন্যদিকে জি২০ সম্মেলন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, বিশ্বের লক্ষ্যকে পাল্টে দেয়ার মতো কিছু বিপজ্জনক জোটের আবির্ভাব হতে পারে এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে। এক্ষেত্রে আমেরিকা-রাশিয়া, চীন-উত্তর কোরিয়া এবং সিরিয়া যুদ্ধ নিয়ে পুতিন ও আসাদের কথা উল্লেখ করেন তিনি। পোপ অভিবাসী সংকট নিয়ে সবচেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
পোপ এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, দরিদ্র দেশ থেকে নির্বাসিত দুর্বল মানুষরাই এখন বিশ্বের অন্যতম সমস্যা হয়ে উঠেছে। যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত তিন কোটি মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া ছাড়াও বিশ্বের জন্য টেকসই ও সমন্বিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে জি২০ দেশগুলোকে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।



মন্তব্য করতে পারেন...

comments


deshdiganto.com © 2019 কপিরাইট এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত

design and development by : http://webnewsdesign.com