ঢাকা , শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
কুলাউড়া বিএনপির দীর্ঘ যুগ পর কোন্দলের অবসান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার আবু জাহেলদের ব্যার্থ গুপ্ত হত্যা পরিকল্পনার মধ্যে দিয়েই যেভাবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরত জীবনের শুরু হয় তারেক রহমানের উপস্থাপিত ৩১ দফা’র লিফলেট বিতরন করলো পর্তুগাল সেচ্চাসেবক দল ইতালির তরিনোতে জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ব্রাম্মণবাড়ীয়া জেলা সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হলে আমরা সারা দুনিয়া জ্বালিয়ে দেব,মিলানের সেমিনারে বললেন পিনাকী ভট্রাচার্য পর্তুগাল জাসাস’র নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতেবিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত আ’লীগ গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা

লাশ দাফনের একদিন পর জানা গেল জীবিত!

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেটের সময় : ১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০১৯
  • / ১২৯৮ টাইম ভিউ

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ রাজশাহীর বাঘায় মবিল মাখানো গোলাপি বেগমের লাশ দাফনের একদিন পর তাকে জীবিত পাওয়া গেছে।

জানা যায়, ১০ জুন সন্ধ্যায় বাঘা থানার পুলিশ চকবাউসা গ্রামের ভুট্টাক্ষেত থেকে মুখে মবিল মাখানো অজ্ঞাত পরিচয়ে (৪৫) এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। পর দিন মঙ্গলবার ওই লাশের পরিচয় মেলে। তিনি উপজেলার আড়ানী পৌরসভার পাঁচপাড়া গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী মনির হোসেনের স্ত্রী গোলাপি বেগম।

বুধবার সকাল ১০টায় আড়ানী রেলস্টেশন থেকে গোলাপি বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়। সেখানে গোলাপি বেগমের মামা শাকিব হোসেন, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম, ভাসুর মাজদার রহমান, জা সাজেদা বেগমের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসল গোলাপি বেগমকে শনাক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে গোলাপি বেগম বলেন, ঈদের আগে ২৯ মে রুস্তমপুর হাটে ৪২ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি করি। এ টাকা নেয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন চাপ দিতে থাকে। আমি নিরুপায় হয়ে পর দিন বিদ্যুৎ বিল দেয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাজশাহীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাই।

আমি ছয় বছরের সন্তান মারুফ হোসেন ও পেটের ৫ মাসের সন্তানের কথা ভেবে বুধবার সকালে রাজশাহী থেকে মহানন্দা ট্রেনে আড়ানী স্টেশনে আসি। এ সময় স্থানীয় কিছু মানুষ আমাকে চিনতে পেরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসে। সেখান থেকে থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গোলাপি বেগমের ভাসুর মাজদার রহমান বলেন, গোলাপি বেগম বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে আমি বাদী হয়ে ১ জুন বাঘা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। মুখে মবিল মাখানোর কারণে সঠিকভাবে লাশটি চিনতে পারিনি।

আড়ানী পৌর নারী কাউন্সিলর ও পাঁচপাড়া গ্রামের মর্জিনা বেগম বলেন, প্রায় চার মাস আগে গোলাপি বেগম ছয় বছরের ছেলেসন্তান মারুফ হোসেনকে রেখে এক যুবকের সঙ্গে ঘর ছেড়ে চলে যায়। গোলাপি বেগমের স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা পুনরায় তাকে বুঝিয়ে স্বামীর বাড়িতে আনে।

গোলাপি বেগমের শ্বশুর বিচ্ছাদ আলী বলেন, আমার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় গোলাপি নিজের ইচ্ছামতো চলাফেরা করে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্ন কথা শোনায়। ফলে আমরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকি।

এর মধ্যে আমার ছেলে ও নানিকে রেখে চলে গিয়েছিল। ১২ দিন পর তাকে জীবিত পাওয়া গেছে। তবে চকবাউসা গ্রামের লালু প্রামাণিকের ভুট্টাক্ষেতে যে লাশ পাওয়া যায়, সেটি অন্য কারও।

আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, গোলাপি বেগমসহ উভয়পক্ষ আমার কাছে এলে, তাদের থানায় পাঠাই। তবে আত্মীয়স্বজনের কাছে জেনে এবং তার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে মনে হয়েছে, তিনি আসল গোলাপি।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি মহসীন আলী জানান, উদ্ধারকৃত লাশটি ভুলভাবে তার আত্মীয়রা শনাক্ত করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে তাদের পারিবারিক গোরস্তানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে একটি মামলাও হয়েছে। তবে উদ্ধারকৃত লাশের মুখে পোড়া মবিল দেয়া ছিল। এ ছাড়া লাশের পাশ থেকে একটি কালো বোরকা, এক জোড়া সেন্ডেল, একটি গুলের কৌটা পাওয়া যায়। লাশের গলা ওড়না দিয়ে পেঁচানো ছিল। এখন গোলাপি বেগম থানা হেফাজতে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হবে।

তবে এ বিষয়ে ধারণা করা হচ্ছে, অন্য জায়গায় ওই নারীকে হত্যা করে চকবাউসা গ্রামের ওই ভুট্টাক্ষেতে লাশ ফেলে রাখা হয়। প্রকৃত অজ্ঞাত নারীর লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তবে আমাদের কাছে ছবি ও আলামত রয়েছে, সেগুলো দেখে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

পোস্ট শেয়ার করুন

লাশ দাফনের একদিন পর জানা গেল জীবিত!

আপডেটের সময় : ১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০১৯

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ রাজশাহীর বাঘায় মবিল মাখানো গোলাপি বেগমের লাশ দাফনের একদিন পর তাকে জীবিত পাওয়া গেছে।

জানা যায়, ১০ জুন সন্ধ্যায় বাঘা থানার পুলিশ চকবাউসা গ্রামের ভুট্টাক্ষেত থেকে মুখে মবিল মাখানো অজ্ঞাত পরিচয়ে (৪৫) এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। পর দিন মঙ্গলবার ওই লাশের পরিচয় মেলে। তিনি উপজেলার আড়ানী পৌরসভার পাঁচপাড়া গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী মনির হোসেনের স্ত্রী গোলাপি বেগম।

বুধবার সকাল ১০টায় আড়ানী রেলস্টেশন থেকে গোলাপি বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়। সেখানে গোলাপি বেগমের মামা শাকিব হোসেন, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম, ভাসুর মাজদার রহমান, জা সাজেদা বেগমের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসল গোলাপি বেগমকে শনাক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে গোলাপি বেগম বলেন, ঈদের আগে ২৯ মে রুস্তমপুর হাটে ৪২ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি করি। এ টাকা নেয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন চাপ দিতে থাকে। আমি নিরুপায় হয়ে পর দিন বিদ্যুৎ বিল দেয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাজশাহীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাই।

আমি ছয় বছরের সন্তান মারুফ হোসেন ও পেটের ৫ মাসের সন্তানের কথা ভেবে বুধবার সকালে রাজশাহী থেকে মহানন্দা ট্রেনে আড়ানী স্টেশনে আসি। এ সময় স্থানীয় কিছু মানুষ আমাকে চিনতে পেরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসে। সেখান থেকে থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গোলাপি বেগমের ভাসুর মাজদার রহমান বলেন, গোলাপি বেগম বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে আমি বাদী হয়ে ১ জুন বাঘা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। মুখে মবিল মাখানোর কারণে সঠিকভাবে লাশটি চিনতে পারিনি।

আড়ানী পৌর নারী কাউন্সিলর ও পাঁচপাড়া গ্রামের মর্জিনা বেগম বলেন, প্রায় চার মাস আগে গোলাপি বেগম ছয় বছরের ছেলেসন্তান মারুফ হোসেনকে রেখে এক যুবকের সঙ্গে ঘর ছেড়ে চলে যায়। গোলাপি বেগমের স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা পুনরায় তাকে বুঝিয়ে স্বামীর বাড়িতে আনে।

গোলাপি বেগমের শ্বশুর বিচ্ছাদ আলী বলেন, আমার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় গোলাপি নিজের ইচ্ছামতো চলাফেরা করে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্ন কথা শোনায়। ফলে আমরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকি।

এর মধ্যে আমার ছেলে ও নানিকে রেখে চলে গিয়েছিল। ১২ দিন পর তাকে জীবিত পাওয়া গেছে। তবে চকবাউসা গ্রামের লালু প্রামাণিকের ভুট্টাক্ষেতে যে লাশ পাওয়া যায়, সেটি অন্য কারও।

আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, গোলাপি বেগমসহ উভয়পক্ষ আমার কাছে এলে, তাদের থানায় পাঠাই। তবে আত্মীয়স্বজনের কাছে জেনে এবং তার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে মনে হয়েছে, তিনি আসল গোলাপি।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি মহসীন আলী জানান, উদ্ধারকৃত লাশটি ভুলভাবে তার আত্মীয়রা শনাক্ত করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে তাদের পারিবারিক গোরস্তানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে একটি মামলাও হয়েছে। তবে উদ্ধারকৃত লাশের মুখে পোড়া মবিল দেয়া ছিল। এ ছাড়া লাশের পাশ থেকে একটি কালো বোরকা, এক জোড়া সেন্ডেল, একটি গুলের কৌটা পাওয়া যায়। লাশের গলা ওড়না দিয়ে পেঁচানো ছিল। এখন গোলাপি বেগম থানা হেফাজতে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হবে।

তবে এ বিষয়ে ধারণা করা হচ্ছে, অন্য জায়গায় ওই নারীকে হত্যা করে চকবাউসা গ্রামের ওই ভুট্টাক্ষেতে লাশ ফেলে রাখা হয়। প্রকৃত অজ্ঞাত নারীর লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তবে আমাদের কাছে ছবি ও আলামত রয়েছে, সেগুলো দেখে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।